রাশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ ২০২৫
আরো পড়ুনঃ ইতালি কোন ভিসার খরচ কত ২০২৫? | কোন কাজের চাহিদা ইতালিতে বেশি?
আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া। বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশে। রাশিয়া, প্রবাসীদের স্বপ্নের একটি
দেশ। আর রাশিয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে গিয়ে থাকেন।
কারণ, রাশিয়ায় চালু রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ভিসা। তাই আপনি যদি রাশিয়া
জেতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে, সেই দেশের ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে,
কাগজ পত্র এবং খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।
আর আপনি যদি রাশিয়া ভিসা সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, রাশিয়া ভিসা ২০২৫ সম্পর্কে সকল তথ্য। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই-
রাশিয়া কাজের ভিসা ২০২৫
কাজের ভিসা পাওয়া, রাশিয়ায় অনেক কঠিন। এরজন্য আপনাকে অনেক
ধৈর্য, পরীক্ষা ও নীতিমালার মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া রাশিয়ার ভিসা
পাওয়ার জন্য আপনাকে খোজ করতে হবে রাশিয়ার জব সাইট বা খুজতে পারেন, আন্তর্জাতিক জব
সাইট লিংকডিন প্লাটফর্মে।
আবার আপনি চাইলে এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে যেতে পারবেন। তবে, আপনি
যে কাজের উপর দক্ষ এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেই কাজের ভিসার জন্য নিজে থেকে বা ভালো
এবং পরিচিত এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারেন।
রাশিয়া কাজের ভিসায় যাওয়ার জন্য আপনার অনেক ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। আর
এই সকল ডকুমেন্ট শুধু রাশিয়া নয় প্রায় সকল দেশে যাওয়ার জন্য দরকার হয়। আপনার সকল
ডকুমেন্ট সঠিক থাকলে আপনি পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
রাশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ ২০২৫
রাশিয়া উত্তর এশিয়া এবং পূর্ব ইউরোপে অস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি
দেশ। এই দেশে প্রচুর পরিমাণে কাজের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশিদের জন্য
কৃষি, নির্মাণ বা গৃহ পরিচর্যার মতো কাজের চাহিদা রাশিয়ায় রয়েছে।
সেই কারণে প্রতিবছর রাশিয়া বাংলাদেশীদের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রদান
করে। রাশিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ অন্যান্য ভিসার তুলনায় কিছুটা
বেশি।
তবে, সরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় রাশিয়া যেতে প্রায় ৫ লক্ষ থেকে
৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং বেসরকারি এজেন্সি বা দালালের মধ্যমে খরচ পড়ে প্রায় ৯
লক্ষ টাকা থেকে ১২ লক্ষ টাকা।
রাশিয়া কাজের ভিসায় যেতে খরচ ২০২৫
রাশিয়া কাজের ভিসায় যেতে কত খরচ হয়, তা সঠিকভাবে বলা মুসকিল। কারণ,
সেখানে কাজের ভিসার কয়েকটি ধরণ রয়েছে। আর ভিসার ধরণ অনুযায়ী ভিসার খরচ নির্ধারণ
হয়ে থাকে। সেখানে কাজের ভিসার মধ্যে রয়েছে, কনস্ট্রাকশন, কার্পেন্টার, ফুট
প্যাকেজিং, ড্রাইভিং, ক্লিনার ইত্যাদি।
আর এই সকল ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ হবে কমপক্ষে ৯ লক্ষ টাকা থেকে প্রায়
১২ লক্ষ টাকার মতো। ভিসা পাওয়ার জন্য বেসরকারিভাবে এজেন্সি বা দালালের সাহায্য
নিতে হয়। তবে, সরকারিভাবে যেতে খরচ হবে ৫ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার
টাকা।
আশার কথা হলো যদিও, রাশিয়া যেতে খরচ বেশি লাগে, কিন্তু সেখানে বেশি টাকা
বেতনের জন্য সেটি কোন সমস্যা হয় না। আর রাশিয়া যাওয়ার খরচ পূরোটাই নির্ভর করে
আপনার যাওয়ার মাধ্যম, বিশেষ করে এজেন্সি বা দালালের উপর। অনেক সময় দালালের মাধ্যমে
প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাগে।
রাশিয়া যাওয়ার ভিসা প্রসেসিং এর নিয়ম
রাশিয়ার ভিসা সাধারণত কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত, কাজের ভিসা,
স্টুডেন্ট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসা। আর প্রতিটি ভিসার ক্যাটাগরির জন্য আলাদা
প্রসেসিং এবং খরচ আলাদা। সরকারি এবং বেসরকারি উভয় উপায়ে বাংলেদেশ থেকে রাশিয়া
জাওয়া যায়। নিম্নে ভিসা প্রসেসিং এর নিয়ম দেখা যাক-
সরকারি উপায়ে রাশিয়া যাওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশ থাকে সরকারিভাবে রাশিয়া যাওয়ার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে বোয়েসেল (BOESL) এর মাধ্যমে। বাংলাদেশী কর্মীরা এই সরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিদেশে
চাকুরীর সুযোগ পাবে। আর এই ওয়েবসাটে নিয়মিতভাবে বিদেশে চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
করা হয়।
সরকারী উপায়ে রাশিয়া যেতে খরচ অনেক কম হয় বেসরকারি উপায়ের তুলনায়।
আর আপনি যদি সরকারি উপায়ে রাশিয়া যেতে চান, তাহলে নিম্নের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে
হবে। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই-
- আপনাকে আবেদন করতে হবে, (BOESL) এর বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে।
- আবেদন ফরম সঠিক ভাবে করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে
হবে।
- আবেদন ফরম জমা দেওয়ার পর, ইন্টারভিউ এর জন্য প্রস্তুতি
গ্রহন করুন।
- নির্বাচিত হওয়ার পর ভিসা প্রসেসিং এর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ
সম্পূর্ণ করুন।
বেসরকারি উপায়ে রাশিয়া যাওয়ার নিয়ম
বেসরকারি বা এজেন্সির মাধ্যমে রাশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার খরচ অনেক
হয়া থাকে। অনেক এজেন্সি আছে যারা ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে ফ্লাইটের টিকিট
পর্যন্ত সকল কাজ সম্পূর্ণ করে দেয়। তবে, এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
অবলম্বন করা জরুরি।
কারণ, অনেকে বেসরকারি এজেন্সি বা দালালের দ্বারা অনেক সময় প্রতারিত
হচ্ছে। তাই, প্রতারণার হাত থেকে বাচার জন্য সাবধানে নিম্নের নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ
করুন। পদ্ধতিগুলো দেখি-
- চোখ কান খোলা রেখে বিশ্বস্ত এবং পরিচিত ভিসা এজেন্সি
নির্বাচন করুন।
- আগে থেকে এজেন্সির সঙ্গে খরচসহ সকল শর্ত ভালোভাবে নিশ্চিত
করুন।
- চুক্তির সময় ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট এবং বিমান ভাড়াসহ সবকিছু
সম্পূর্ণ করুন।
রাশিয়া ভিসার জন্য কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ভিসা
আবেদন করা অনেক জরুরি। আর রাশিয়া ভিসা আবেদনের জন্য সঠিক ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র
প্রস্তুত করা অত্যান্ত জরুরি। তবে, রাশিয়া ভিসা পাওয়ার জন্য নিম্নের ডকুমেন্ট
প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ কাতার কাজের ভিসার দাম কত টাকা | কাতার কোন কাজের বেতন কত টাকা
- সঠিক উপায়ে পূরণ করা আবেদন পত্র।
- রাশিয়ায় কাজ পেয়েছেন তার প্রমাণ পত্র।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (এনআইডি)।
- অপরাধ্মুক্ত থাকার পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
- পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতার সনদ পত্র।
- শিক্ষাগত
জোগ্যতার সনদ পত্র।
- নির্ধারিত
মান দন্ডের ছবি।
- কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্ট।
- শারীরিক স্বাস্থ্য
পরীক্ষায় সুস্থ্যতার সনদ পত্র।
- রাশিয়ায় কোন কোম্পানির
কাজের অফার পত্র।
- সর্বপুরি
সকল কাগজ পত্রে সঠিক এবং নির্ভুলভাবে সকল ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।
রাশিয়ায় বিভিন্ন ভিসার খরচ ২০২৫
রাশিয়া যাওয়ার খরচ মূলত নির্ভর করে আপনি কোন ভিসায় রাশিয়া যাচ্ছেন বা ভিসার ক্যাটাগরির উপর। তাছাড়া, আপনার যাওয়ার মাধ্যম সরকারিভাবে না বেসরকারিভাবে বা দালালের উপর। তবে, রাশিয়া যাওয়ার জন্য সাধারণত নিম্নোক্ত হারে খরচ হয়ে থাকে-
- কাজের ভিসা- সরকারি উপায়ে ৫ থেকে ৬ লক্ষ ৫০ হজার টাকা এবং বেসরকারি
বা এজেন্সির মাধ্যমে ৯ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগে।
- টুরিস্ট ভিসা- টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কম এবং এই ভিসার খরচ তুলনামূলক
অনেক কম। তবে, সাধারণত খরচ ১ থেকে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা লাগে।
- স্টুডেন্ট ভিসা- পশ্চিমা অন্যান্য দেশের তুলনায় স্টুডেন্ট ভিসার খরচ
রাশিয়ায় অনেকটা কম। তবে, সাধারণত খরচ ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা লাগে।
রাশিয়া ভিসা পাওয়ার জন্য কতদিন সময় লাগে?
রাশিয়া বা যে কোন দেশে ভিসা পাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি ধাপ বা প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়া, ভিসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। আর এর জন্য অনেক সময় কম বা বেশি সময় লাগে। তবে, সাধারণত রাশিয়ায় ভিসা পেতে আবেদনের পর থেকে ১০ দিন থেকে ২৫ দিন সময় লাগে।
তাছাড়া, আপনার কাজের ক্যাটাগরি বা আপনার পেশার উপর ভিসা পাওয়ার সময় অনেকটা নির্ভর করে। এছাড়াও, অনেক সময় সেই দেশের দূতাবাসের উপর অনেকটা নির্ভর করে। এক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় ৩০ দিন বা একমাস।
রাশিয়া যাওয়ার জন্য কত বছর বয়স লাগে?
বিশ্বের প্রতিটা দেশে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট একটি বয়সসীমা প্রয়োজন পড়ে। আর রাশিয়া যাওয়ার জন্য ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী একটি বয়সসীমা প্রয়োজন পড়ে। নিম্নে ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী বয়সসীমা দেখানো হলো। চলুন দেখি-
কাজের ভিসা- ১৯ বছর থেকে ৩৫ বছর। যদিও এই বয়সসীমা বাধ্যতামুলক নয়, কিন্তু এই বয়সের প্রার্থীর ভিসা পাওয়া অনেক সহজ হয়।
স্টুডেন্ট ভিসা- সর্বনিম্ন ১৬ বছর, তবে অনেক ক্ষেত্রে স্কুল বা কলেজে পড়া শুনার জন্য বয়স আরো কম হতে পারে।
টুরিস্ট ভিসা- টুরিস্ট ভিসার যেতে বয়সসীমার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। তবে প্রাপ্ত বয়স্ক বা ১৮ বছরের বেশি হলে ভিসা পাওয়া অনেক সহজ হয়।
রাশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি?
রাশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় একটি দেশ এবং সেখানে বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। তবে, সেখানে সকল কাজের চাহিদা থাকলেও কৃষি কাজে বাংলাদেশী শ্রমিকদের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাছাড়াও সেখানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে-
- প্লাম্বার ম্যান।
- মেশি অপারেটর
- পেন্টার ফোরম্যান।
- কনস্ট্রাকশন শ্রমিক।
রাশিয়াতে কাজের বেতন কত টাকা?
রাশিয়া কাজের ভিসা ২০২৫- শেষকথা
রাশিয়া বা যে কোন দেশে যাওয়ার জন্য সবসময় চেষ্টা করবেন সরকারিভাবে যাওয়ার। আর যদি বেসরকারি বা এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান, সেক্ষেত্রে চোখ কান খোলা রেখে পরিচিত এবং ভালো এজেন্সির মাধ্যেমে যাবেন। কারণ, অনেকেই দালালের দ্বারা প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ, আশাকরি আপনারা আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়েছেন, আর জেনে নিয়েছেন "রাশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ ২০২৫" সম্পর্কে অনেক তথ্য। যা, আমরা আর্টিকেলে ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি।
আরো পড়ুনঃ দুবাই কাজের ভিসা ২০২৫ | দুবাই কোনা কাজের বেতন কত টাকা?
আশাকরি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন, ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url