ইতালি কোন ভিসার খরচ কত ২০২৫? | কোন কাজের চাহিদা ইতালিতে বেশি?

আরো পড়ুনঃ কাতার কাজের ভিসার দাম কত টাকা | কাতার কোন কাজের বেতন কত টাকা

ইতালি ইউরোপের সুন্দর এবং সংস্কৃতির দিক দিয়ে বিশ্বের অন্যতম একটি সমৃদ্ধশালী দেশ। যারা, ইউরোপের কোন দেশে বসবাস কিংবা কাজের জন্য যেতে চান, তাদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি গন্তব্য স্থান ইতালি।

বর্তমানে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশীরা ইতালিতে বসবাস করেন। গত কয়েক বছর আগের এক হিসাব অনুযায়ী, সেখানে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার বাংলাদেশী বাস করেন। বাংলাদেশি অন্যতম একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হিসাবে পরিণত হয়েছে ইতালি।

আর বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ভেনেটা, লম্বারডি বা লাজিও এলাকায় বিশেষ করে ভেনিস, রোম বা মিলান শহরে বসবাস করে। সেই কারণে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য বাংলাদেশীরা খুব সহজেই আবেদন করতে পারেন।

কিন্তু, আপনাকে ইতালি যেতে হলে, বিশেষ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কাজের জন্য ইতালি যাওয়ার ক্ষেত্রে। তাই, ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। চলুন তাহলে দেখে নেই-

ইতালি কোন ভিসার খরচ কত ২০২৫?

বর্তমানে বাংলাদেশ থেক ইতালি যাওয়া যায় দুই  প্রকার ভিসায়। যেমন, শর্ট টার্ম বা সাময়িক ভিসার মাধ্যমে এবং লং টার্ম বা দীর্ঘ মেয়াদি ভিসার মাধ্যমে। তবে, বাংলাদেশ থেকে প্রায় সকলেই লং টার্ম বা দীর্ঘ মেয়াদি ভিসার মাধ্যমে ইতালি জান।

আর ইতালি বা যে কোন দেশের ভিসার খরচ নির্ভর করে, ভিসার ধরণ অনুযায়ী। কারণ, বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে ইতালি যাওয়া যায়। নিম্নে ইতালি ভিসার ধরণ অনুযায়ী ভিসার খরচ দেখানো হলো। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক- 
  • ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ৮ লক্ষ টাকা থেক প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
  • ইতালি কনস্ট্রাকশন ভিসা ৯ লক্ষ টাকা থেক প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
  • ইতালি টুরিস্ট ভিসা ৩ লক্ষ টাকা থেক প্রায় ৫ লক্ষ টাকা মত।
  • ইতালি স্পন্সর ভিসা ৮ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা মত।
  • ইতালি স্টুডেন্ট ভিসা ৮ লক্ষ টাকা থেক ৯ লক্ষ টাকা মত।
  • ইতালি কৃষি ভিসা ৭ লক্ষ টাকা থেক ৮ লক্ষ টাকা মত।

ইতালি ভিসার ধরণ ২০২৫

ইতালি কয়েক ধরণের ভিসা দিয়ে থাকে। তবে, ভিসা আবেদন অনেক সহজ, কিন্তু সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম অনুসরণ করে এগুতে হবে। তাই বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সেই দেশের ভিসা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি।

বাংলাদশী নাগরিকেরা সাধারণত ইতালি ভিসার আবেদন করেন, কাজের ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা বা পর্যটক ভিসা ইত্যাদি। আর আপনি যদি ইতালিতে কাজের জন্য যেতে চান, সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন পড়বে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার।

আর, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই, সেখানকার কোন নিয়োগ কর্তার চাকুরীর প্রস্তাব লাগবে। অর্থাৎ ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদনের পর্বেই চাকুরির ব্যবস্থা করতে হবে এবং এরপর আপনি ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন এবং যেতে পারবেন।

কোন কাজের চাহিদা ইতালিতে বেশি?

ইউরোপের উন্নত একটি দেশ ইতালি হওয়ার কারণে, সেখানে বিভিন্ন সেক্টরে বিভিন্ন ধরণের কাজের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশীদের সেখানকার শ্রম বাজারের নির্দিষ্ট কিছু সেক্টরে প্রচুর পরিমাণে কাজের চাহিদা রয়েছে।

কারণ, সেখানকার স্থানীয় শ্রকিকের পাশাপাশি প্রবাসী শ্রমিকদের এই খাতগুলোতে অনেক সুযোগ রয়েছে। আর আমরা আজকের আর্টিকেলে ইতালিতে যে সকল খাতে বাংলাদেশীদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে, তা নিম্নে আলোচনা করা হলো-

  • মানব সম্পদ ব্যাবস্থাপনা।
  • আইটি এবং সফটওয়ার।
  • বিক্রয় এবং বিপণন।
  • স্বাস্থ্য সেবাখাত।
  • অর্থ ও হিসাব।
  • আতিথেয়তা।
  • নির্মাণ খাত।
  • প্রকৌশল।
  • শিক্ষাদান।
  • কৃষি খাত।
  • নির্মাণ।
  • স্টেম।

বাংলাদেশ থেকে কিভাবে যাওয়া যাবে?

বাংলাদেশীদের ইতালি যাওয়ার জন্য বেশ কয়েটি উপায় রয়েছে। এর জন্য সর্ব প্রথম আপনাকে ইতালি ভিসা পাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করতে হবে। আর ভিসা পেয়ে গেলে আপনি বিমান যোগে খুব সহজেই ইতালি যেতে পারবেন।

বাংলাদশ থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স রয়েছে। এই এয়ারলাইন্স পরিচালনা করে ইতালির বিভিন্ন শহরের পরিবহণ সংস্থা। যেমন, ভেনিস, রোম মিলান ইত্যাদি। আর বাংলাদেশ থেকে বিমানে ইতালি যেতে সময় লাগে প্রায় ১০- ১২ ঘন্টা।

ইতালি ভিসা প্রসেসিং এর নিয়ম কি?

ইতালি ভিসা প্রসেসিং করার জন্য, অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট একটি সময়সীমার মধ্যে, ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং সকল প্রকার ডকুমেন্ট সঠিকভাবে জমা প্রদান করতে হবে। আর ভিসা আবেদনের জন্য আপনাকে সেই দেশের ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।

ভিসা আবেদন ফরম পূরণ করা হলে সেটি আপনাকে জমা দিতে হবে, ইতালি দূতাবাসের ওয়েবসাইটে। আর ইতালি দুতাবাসের অয়েব সাইটের ঠিকানাসহ ভিসা আবেদন ফরম কিভাবে পাওয়া যাবে, সেই সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

ইতালি যেতে কত খরচ লাগে ২০২৫?

বাংলাদেশ থেক ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, কৃষি ভিসা, ইস্টুডেন্ট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে হাজার মানুষ প্রতি বছর ইতালি যান। আর ইতালি যাওয়ার খরচ নির্ভর করে আপনার ভিসার ধরণ এবং যাওয়ার মাধ্যমের উপর। কারণ, সরকারি এবং বেসরকারি উভয়ভাবেই যাওয়া যায়।
সরকারিভাবে ইতালি যেতে খরচ হয়, প্রায় ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা এবং বেসরকারি বা এজেন্সির মাধ্যমে যেতে খরচ ৮ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা। আর সেক্ষেত্রে আপনি যদি সরকারিভাবে ইতালি যেতে পারেন, তাহলে অনেক খরচ কম পড়ে।

ইতালি কাজের বেতন কত ২০২৫

ইউরোপের শক্তিশালি দেশ ইতালিতে কাজের বেতন নির্ভর করে, সেই দেশের শহরের উপর। যেমন ইতালির প্রধান প্রধান শহরের বেতন, তুলনামূলকভাবে বেশি। তব, বর্তমানে ইতালিতে প্রতি মাসের বেতন সর্বনিম্ন ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা এবং সর্বচ্চ বেতন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।

তাছাড়া, ইতালিতে সকল কাজের ক্ষেত্রেই, ওভার টাইম করার সুবিধা থাকায়, কোন ব্যক্তি যদি সেখানে ওভার টাইম কাজ করেন, সেক্ষেত্রে সে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রতিমাসে আয় করতে পারবেন।

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বেতন কত?

ইতালি অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত এবং সেই দেশে কাজের অনুপাতে শ্রমিক অনেক কম। সেই কারণে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে লোক নিয়োগ দিয়ে থাকেন সেই দেশের সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

তবে, বর্তমান সময়ে একজন শ্রমিক ইতালিতে প্রতিমাসে কমপক্ষে ১১৫০ ইউরোর মত আয় করে থাকেন। যা, বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার মতো। আবার একজন অভিজ্ঞ শ্রমিকের বেতন আরো বেশি হয়ে থাকে।

ইতালি কাজের ভিসার বেতন কত?

বর্তমানে কাজের ভিসা পাওয়া ইতালিতে অনেক কঠিন। তবে, চেস্টা করলে নিম্ন পর্যায়ের কাজের ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়। আর কাজের ভিসার চাহিদা বেশি হওয়ার কারণে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ বেশি।

ইতালিতে বেতন কম বা বেশি হয়ে থাকে, আপনার কাজের ধরণ বা ক্যাটাগরির উপর। আপনি যদি কাজের ভিসায় ইতালি যান, সেক্ষেত্রে আপনার বেতন হবে, কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।

কোন কাজের বেতন ইতালিতে বেশি?

আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা যদি বেশি থাকে, তাহলে আপনার বেতন অনেক বেশি। আর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কাজের বেতন কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকা থেকে ২ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। কিন্তু বাংলাদেশী বেশিরভাগ অভিজ্ঞতা ছাড়া ব্যক্তিরা ভিসার জন্য আবেদন করেন।

আবার সেখানে ইলেকট্রিশায়ান, ড্রাইভার, ওয়ারকার এবং ক্লিনার কাজের বেতন সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। আর এই সকল কাজের বেতন কমপক্ষে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ইতালি ভিসা আবেদনের লিঙ্ক

ইতালি যেতে চান এমন অনেকে আছেন, কিন্তু ইতালি ভিসা আবেদনের জন্য যে, লিঙ্কের প্রয়োজন তা অনেকেই জানেন না। জার কারণে, তারা সঠিকভাবে ইতালি ভিসা আবেদন করতে ব্যর্থ হন। কারণ, ইতালি ভিসা আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট একটি ওয়েবসাইট রয়েছে।

আর আপনার ভিসা আবেদনের কাজ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করার জন্য, উক্ত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদনের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। আর ইতালি ভিসা আবেদনের লিঙ্ক বা ওয়েবসাইট হলো visa.vfsglobal.com/bgd/ita/apply-visa.

তবে,আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে কারণ, অনলাইনে অনেক ভূয়া লিঙ্ক রয়েছে। আর এই সকল ভূয়া লিঙ্কের মাধ্যমে প্রতারকেরা অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করছে। তাই ইতালি ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে অবশ্যই লিঙ্কটি ভালোকরে যাচাই করে নিতে হবে।

প্রয়োজনে আপনি কোন অভিজ্ঞ মানুসের সাহায্য নিন এবং শতভাগ নিশ্চিত হয়ে আবেদনের কাজ সম্পূর্ণ করুন। আর জারা কাজের ভিসার মধ্যমে ইতালি জাবেন, তারা ভালোকরে জেনে নিবেন সেখানে কোনা কাজের চাহিদা রয়েছে। অন্যথায় সেখানে গিয়ে কাজ পাওয়া কস্টকর হয়ে যাবে।

ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা- শেষকথা

আপনারা যারা ইতালি ভিসার মাধ্যমে বা কাজের ভিসায় যেতে চান, তারা অবশ্যই সরকারিভাবে যাওয়ার চেস্টা করবেন। আর যদি বেসকারিভাবে যেতে হয়, সেক্ষেত্রে ভালো এবং কোন পরিচিত এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়ার চেস্টা করবেন।

প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ, আপনারা যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চই জেনে গেছেন, "ইতালি কোন ভিসার খরচ কত ২০২৫? ও কোন কাজের চাহিদা ইতালিতে বেশি?" সহ বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

আরো পড়ুনঃ কুয়েত ভিসার দাম কত টাকা ২০২৫? | কুয়েত কোন কাজের বেতন কত টাকা?

যা, আমরা আর্টিকেলে ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url