ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো? | ফ্রিল্যান্সিংয়ে বর্তমানে জনপ্রিয় কাজ

আরো পড়ুনঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? | কিভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে?

ফ্রিল্যান্সিং, বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত নাম। কারণ, ২০২৩ সাল থেকে ফ্রিল্যান্সিং এতোটাই পরিচিত যে, এই নাম জানেনা, এমন মানুষ খুজে পাওয়া অনেক দুস্কর। ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি এখন ছোট থেকে বড় সকলের কাছেই পরিচিত একটি শব্দ।

অনলাইনে জগতে আয় করার জত প্রকার উপায় রয়েছে, তার মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং অন্যতম। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রচার ও প্রসারের কারণে, সারা বিশ্বে এর জনপ্রিয়তা অনেক তুঙ্গে। আমরা দেখি ফ্রিল্যান্সং কি? কিভাবে কাজ করে, এর জনপ্রিয় কাজ এবং কিভাবে শুরু করবো ইত্যাদি সম্পর্কে।

কারণ, আপনাদের মধ্যে অনেকেই এই বিষয়গুলো জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয় সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা নিম্নের আলোচনা থেকে জেনে নেই- 

আজকের পাঠ্যক্রম- ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিংয়ের বর্তমানে জনপ্রিয় কাজ

  • ফ্রিল্যান্সিং কি?
  • ফ্রিল্যান্সিংয়ে কি কাজ করতে হয়?
  • ফ্রিল্যান্সিংয়ের বর্তমানে জনপ্রিয় ৭ টি কাজ
  • ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?
  • অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়- শেষকথা

ফ্রিল্যান্সিং কি?

ফ্রিল্যান্সিং এর বাংলা স্বাধীন পেশা। কোন কাজ বা চাকুরি এবং ফ্রিল্যান্সিং এর মধ্যে বড় পার্থক্য কাজের সময়। কারণ, চাকুরীর ক্ষেত্রে আপনাকে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় আর ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে বাধা ধারা কোন সময় নেই।

ফ্রিল্যান্সিং এ আপনি আপনার সুবিধামত সময়ে সবাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন। আবার ফ্রিল্যান্সিং শব্দকে অন্যভাবে বর্ণনা করলে দাঁড়ায়, অনলাইনে আয়ের টার্ম ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ অনলাইনে যে সকল কাজ পাওয়া যায়, তা করার মাধ্যমে আয় করাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা হয়ে থাকে।

আরো সহজভাবে বললে, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর কাজ না করে, চুক্তি ভিত্তিক কোন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর কাজ করাকে ফ্রিল্যান্সিং বা অনলাইনে আয় বলে। আর ফ্রিল্যান্সিং বা চুক্তিভিত্তিক কাজের ধারণাটি সমাজে, প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত রয়েছে।

বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির দুনিয়ায় ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি আলাদাভাবে আত্নমর্যাদা পেয়েছে। যাইহোক, ফ্রিল্যান্সিং কি? এ সম্পর্কে জানার আগ্রহ অনেকটা বেড়ে গেছে। কারণ, বর্তমানে বিভিন্ন মিডিয়া অনলাইন ইনকাম এর খবর প্রতিনিয়ত কভার করে চলছে।

এরফলে, সমাজে পজেটিভ একটি পরিবেশ বিরাজ করছে। তাছাড়া, চুক্তিভিত্তিক কাজ করা মানে, কেউ বস নেই, নিজের বস নিজেই। আর অনলাইনে বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে, সেই কাজ ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ক্লাইন্টের কাছে বিক্রি করে আয় করা যায়।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে কি কাজ করতে হয়?

ফ্রিল্যান্সিং হলো একটি মুক্ত পেশা, যা অনেকে অনলাইনে আয় করা বলে জানে। আর যারা ফ্রিল্যান্সিং করে তাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্সার। বর্তমানে ইউটিউব এবং ফেসবুকের মাধ্যমে প্রায় সকলের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে ফ্রিল্যান্সিং শব্দটি। আর ধীরে ধীরে সকল কাজ অনলাইনে ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে।

দেশ- বিদেশে বর্তমানে অনলাইনে কনভার্ট হচ্ছে বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং বাণিজ্যিক কাজ। এর ফলে কাজের গতি যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সঙ্গে সময়ও বেচে যাচ্ছে। তবে, অনলাইনের কাজগুলো গতানু গতিক কাজের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে।

আর এই কারণেই সেই কাজ করার জন্য, নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের উপর অভিজ্ঞতা অর্জন দরকার। বর্তমানে অনলাইনে সচারাচর যে সকল পাওয়া যায়, তারমধ্য অন্যতম হলো, গ্রাফিক্স, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভলপমেন্ট, অ্যাপ ডেভলপমেন্ট, প্রোগ্রামিং, মার্কেটিং, আর্টিকেল রাইটিং ইত্যাদি।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের বর্তমানে জনপ্রিয় ৭ টি কাজ

সবাধীনভাবে ঘরে বসে খুব সহজে টাকা আয় করার জনপ্রিয় মাধ্যম ফ্রিল্যান্সিং। আর এই জগতে প্রচুর পরিমাণে কাজ থাকায়, দিন দিন বেড়েই চলেছে এর পরিধি। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে নতুন নতুন ফ্রিল্যান্সা্রের সংখ্যাও।

তবে, বেশিরভাগ নতুন ফ্রিল্যান্সারের অনেটা দ্বিধা দ্বন্দ্বে থাকেন। কারণ, তারা কোন ক্যাটাগরিতে কাজ শুরু করবেন, এটি তাদের অজানা। ফলে, সঠিকভাবে না জেনে কোন একটি কাজ শুরু করেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিফল ও হতাশ হয়ে সরে জান ফ্রিল্যান্সিং জগত থেকে।

মূলত ফ্রিল্যান্সিং হলো এমন এক ধরণের কাজ, যেখানে কোন ব্যক্তি তার নিজের কাজ করার জন্য, অন্যদের বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের করে, জোগদান করেন নির্দিষ্ট কোন প্রকল্পে এবং সেটি একটি নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সেবা প্রদান করে।

ফ্রিল্যান্সার হিসাবে সবাধীনভাবে আপনি কাজ করতে পারবেন, সেই কাজের সময় ও পরিমাণ নির্ধারণ করে। তবে, ফ্রিল্যান্সিং সাধারণত নির্দিষ্ট কয়েকটি অনলাইন প্লাটফর্মে এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আপনাকে কাজ করার সুজোগ দেয়। নিম্নে জনপ্রিয় ৭টি প্লাটফর্ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো- 

** ডাটা এন্ট্রি- ফ্রিল্যান্সিং জগতে জতগুলো কাজ রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে সহজ কাজ হলো ডাটা এন্ট্রি। তাছাড়া, এই কাজটি অন্য সকল কাজের তুলনায় কিছুটা সহজ হওয়ায়, নতুন ফ্রিল্যান্সারদের পছন্দের তালিকার এর স্থান প্রথম।

তবে, ডাটা এন্ট্রির কাজ সহজ হলেও, এই কাজের উপর থাকতে হবে কিছু দক্ষতা। এখানে টাইপিং দক্ষতা ছাড়াও বিভিন্ন টুলের ব্যবহার জানতে হবে যেমন, এমএস ওয়ার্ড, এমএস এক্সেল ইত্যাদিতে কাজের দক্ষতা প্রয়োজন। 

যারা, অল্প কিছু কাজের দক্ষতা নিয়ে, ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, মুলত তাদের জন্য ডাটা এন্ট্রির কাজ খুব সহজ হবে। কিন্তু ডাটা এন্ট্রির কাজের তুলনামুলক প্রতিজোগিতা অনেক বেশি। যার কারণে, নতুনদের কাজ পাওয়া প্রথম দিকে কিছুটা কঠিন।

** কন্টেন্ট রাইটিং- বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ ফ্রিল্যান্সিং জগতে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া, এই কাজের বিশ্বব্যপি প্রচুর চাহিদা থাকায়, লেখা লেখির বিষয়ে জ্ঞান এবং দক্ষতা রয়েছে তারা এই পেশাটিকে বেচে নিতে পারেন।

অনলাইনের বিভন্ন মার্কেটপ্লেসে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কন্টেন্ট রাইটিং সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভাব। তবে, বাংলার তুলনায় সারা বিশ্বে ইংরেজি ভাষার কন্টেন্টের চাহিদা বেশি, তাই ইংরেজি ভাষা দক্ষতা এবং ইংরেজি কন্টেন্ট লিখলে ভালো হবে।

কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টর আবার কয়েকটি ক্যাটাগরিতে বিভিক্ত রয়েছে। যেমন, আর্টিকেল বা ব্লগ পোস্ট রাইটিং, ওয়েবসাইট কন্টেন্ট রাইটিং, কপিরাইটিং বা ক্রিয়েটিভ ইত্যাদি। এ গুলোর মধ্যে থেকে যে কোন একটি ক্যাটাগরির কাজকে বেচে নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

** ডিজিটাল মারকেটিং- বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং জগতের কাজের মধ্যে অনেক জনপ্রিয় একটি কাজ হলো ডিজিটাল মারকেটিং। ডিজিটাল মারকেটিংয়ের কাজ ছাড়া অনলাইনের প্রায় কোন খেত্রকেই কল্পনা করা যায় না।

এই কাজের চাহিদা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বা লোকাল মার্কেট প্লেসে রয়েছে। বর্তমানে অনলাইন বা অফলাইনে বিভিন্ন ধরণের ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটারদের দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে তাদের প্রচারণার কাজ করে থাকেন। ফলে দিন দিন এর চাহিদা বেড়েই চলছে।

তবে, শুধু একটি কাজকে ডিজিটাল মার্কেটিং বুঝায় না, এটি অনেক বড় সেক্টর। আর এই সেক্টরে অনেক ক্যাটাগরি বা কাজের খেত্র রয়েছে। তাই, ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে কোন একটি বিষয়ের উপর দক্ষতা অর্জন করে আয় করতে পারবেন প্রচুর পরিমাণে টাকা।

সেখেত্রে, এক বা একাধিক কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে ক্যারিয়ার শুরু করা যায় ফ্রিল্যান্সিং। তবে, এর জনপ্রিয় সেক্টর হলো, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেইল বা কন্টেন্ট মার্কেটিং, ভিডিও, এফিলিয়েট মার্কেটিং, অনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং ইত্যাদি।

** ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট- ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামিং এর একটি অংশ হলেও, অনেক বড় একটি জায়গা ফ্রিল্যান্সিং জগতে দখল করে আছে। বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং কাজের অন্যতম সেরা একটি কাজ হলো ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট।

অনলাইনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ওয়েবসাইট। যার ফলে, প্রতিনিয়ত প্রচুর ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন। এতে করে প্রচুর পরিমাণে বাড়ছে ওয়েবসাইট তৈরি এবং ডেভেলপমেন্ট কাজের চাহিদা।

আরো পড়ুনঃ এসইও (SEO) কি? কিভাবে এসইও করতে হয়?

তাছাড়া, বর্তমানে মার্কেটপ্লেসে ওয়েবডেভলপমেন্ট কাজের চাহিদা যেমন বেশি তেমন এই কাজের রেটও অনেক বেশি। তাই অনেকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে বেচে নিচ্ছেন, ওয়েবডেভলপমেন্ট সেক্টরটি।

** সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে ব্যপক জনপ্রিয়তার কারণে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের কাজগুলো। এমন অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সারা বিশ্বে রয়েছে, যাদের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট রয়েছে।

তাই তারা, তাদের একাউন্ট পরিচালনা থেকে শুরু করে ক্যাম্পেইন মেনেজম্যান্ট বা মার্কেটিং, কন্টেন্ট রাইটিং নিয়মিত পোস্টিংসহ বিভিন্ন ধরণের কাজ করার জন্য তারা, এক্সপার্ট সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ করে থাকেন।

যাদের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন ধরণের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভালোভাবে ব্যবহারের দক্ষতার পাশাপাশি মানসিকতা রয়েছে মাল্টি টাস্কিংয়ের, তারা চাইলে এই সেক্টরটি বেচে নিতে পারেন এবং ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। 

** গ্রাফক্স ডিজাইন- বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বিস্তৃতও এবং সবচেয়ে বড় সেক্টর হলো গ্রাফক্স ডিজাইন। গ্রাফক্স ডিজাইনের উপর আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারলে ভালো বেতনে অনেক বড় কোম্পানিতে চাকুরী করাসহ নিজেকে স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত করতে পারবেন।

এরজন্য freelancer.com, fiveer, Upwork ইত্যাদি অনলাইন মার্কেটপ্লেসে প্রচুর কাজ পাওয়া যায় গ্রাফিক্স ডিজাইনের। আর এই সকল মার্কেটপ্লেসে আপনি চাইলে কাজ করতে পারবেন এবং প্রচুর পরিমাণে টাকা আয় করে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

বর্তমানে প্রায় সকল কোম্পানির বা ব্যবসার জন্য তারা লোগো ডিজাইন, বিজ্ঞাপনের জন্য তাদের ব্যানার ডিজাইনসহ অন্য বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য, তাদের প্রয়োজন পড়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন করার। আর এ কারণে প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ গ্রাফিক্স ডিজাইনারের।

গ্রাফিক্স ডিজাইনারের বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজের মধ্যে রয়েছে, লোগো ডিজাইন, ফ্যাশান ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, টি-শার্ট ডিজাইন, বিজনিজ কার্ড ডিজাইন, বিজ্ঞাপন ডিজাইন, ইলেস্ট্রেটর, ভেক্টর, পোস্টার ও ব্যানার ফেস্টুন ডিজাইন, ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন ইত্যাদি।

** ট্রান্সক্রিপশন- যাদের বিভিন্ন ভাষা সম্পর্কে জ্ঞান ও পারদর্শীতা এবং ভাষান্তর কাজে পারদর্শিতা রয়েছে, ফ্রিল্যান্সি জগতে তাদের প্রচুর চাহিদা। তাছাড়া, ট্রান্সক্রিপশনে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তির বর্তমানে অনেকটা চাহিদা বেড়েছে।

তাই যারা ফ্রিল্যান্সিং নতুন করে করতে চান এবং তারা যদি ভাষান্তরের দক্ষতা অর্জন করতে পারেন, আপনি ইংরেজি, আরবি মান্দারিন, রুশ, ফ্রেঞ্চসহ যত ভাষার প্রতি জ্ঞান রয়েছে, আপনি ততবেশি টাকা আয় করে ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?

ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শুরু করার আগে আপনাকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বা পদ্ধতি অনুসরণ করে এগুতে হবে। অন্যথায় আপনার এখানে টিকে থাকা অনেক কষ্টসাধ্য হবে। নিম্নে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার ধাপ বা পদ্ধতি আলোচনা করা হলো- 

** পরিকল্পনা- ফ্রিল্যান্সার সেক্টরে বিভিন্ন ধরণের কাজ পাওয়া যায়। আর সেই কাজ সম্পর্কে আপনার যদি অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে আপনি সে কাজ করতে পারবেন না। এই জন্য আপনাকে এই সেক্টরে আসার আগে ঠিক করে নিতে হবে, আপনি নিজেকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে চান কি না।

তাই, সকল বুদ্ধিমানের কাজ হলো, কোন কাজ শুরুর আগে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা। আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, এখানে সহজ এবং কঠিন উভয় প্রকার কাজ রয়েছে এবং কোন কাজ ১ ঘন্টায় করা যায় আবার কোন কাজ ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।

** কাজ শেখার আউটলাইন তৈরি- আপনার পছন্দের টপিক ঠিক করার জন্য পরিশ্রম করতে হবে। অনলাইনে যে সকল কাজ পাওয়া যায়, সেইগুলো সম্পর্কে জানার জন্য গুগলে সার্চ করতে হবে। এবং আপনি যে বিষয় সম্পর্কে বোঝেন, সেটিকে নির্বাচন করতে হবে।

স্মার্ট ক্যারিয়ারের জন্য, লোভে পড়ে কোন টপিক নির্বাচন করবেন না। কারণ, সেই কাজ শিখতে গিয়ে ইন্টারেস্ট কমে যাবে মাঝপথে, এমনকি অসম্পূর্ণ থেকে যেতে পারে। তাই আপনার পছন্দের বিষয় ঠিক করার আগে, একটি আউটলাইন তৈরি করতে হবে।

আর আপনি যদি, সঠিক আউটলাইন তৈরি করেন, তবে, আউটলাইন অনুযায়ী কাজ শেখা সহজ ও দ্রুত হয়। আপনার যদি গাইটলাইন থাকে, এবং রুটিন অনুযায়ী কাজ করলে কখনো সময় নষ্ট হবে না এবং কাজ শেখা যায় খুব অল্প সময়ে। 

** নির্দিষ্ট প্রোজেক্ট তৈরি- পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় নিয়ে কাজ শেখা হয়ে গেলে, আপনার কাজ হলো সঠিক একটি প্রোজেক্ট তৈরি করা। অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ে এতদিন শিখলেন, তার উপর ভিত্তিকরে সুন্দর একটি প্রোজেক্ট তৈরি করতে হবে।

আর এই প্রোজেক্ট যেমন আপনাকে সাহায্য করবে দক্ষতা বৃদ্ধিতে তেমনি স্ট্রং করবে আপনার পোর্টফোলিও । আপনি প্রোজেক্ট তৈরি করার জন্য গুগল থেকে আইডিয়া নিয়ে, ভালোমানের একটি প্রোজেক্ট তৈরি করতে পারবেন।

পোর্টফোলিও তৈরির কাজ শেখা শেষ করে, আপনি যখন প্রোজেক্ট তৈরি করবেন, তখন প্রয়োজন পড়বে পোর্টফোলিও। আর পোর্টফোলিও হলো আপনার অভিজ্ঞতার প্রমাণ। যত বেশি কাজের প্রমাণ আপনার পোর্টফোলিওতে থাকবে, কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাও ততবেশি বাড়বে।

আর এইজন্য আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটিকে পোর্টফোলিও হিসাবে রাখেন, তাহলে আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন অন্যান্য ফ্রিল্যান্সারদের থেকে।

** মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট তৈরি- উপরের সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করা শেষ হয়ে গেলে, এখন আপনি অনলাইনে আয় করার জন্য প্রস্তুত। আর শুরুতে কাজ পাওয়ার জন্য আপনাকে freelancer.com, fiveer, Upwork ইত্যাদিতে একাউন্ট করতে হবে।

এছাড়াও আপনি আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন, লিংকডইনসহ অন্যান্য ওয়েবসাইটে। বিশেষ করে আপনাকে সবসময় মার্কেটপ্লেসে এক্টিভ থেকে আবেদন করতে হবে বিভিন্ন কাজের জন্য।ফাইবার নিতুন ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বর্তমানে অনেক সহজ সুবিধা দিয়েছে ক্লাইন্ট খোজার জন্য।

ফাইবারে নিতুন ফ্রিল্যান্সারেরা গিগ খোলার মাধ্যমে, আপনার নিজের কাজের অভিজ্ঞতা এবং পারদর্শিতা শেয়ার করলে, ক্লাইন্ট নিজে থেকেই আপনাকে কাজের অফার দিয়ে থাকে।

** পেমেন্ট সিস্টেম- পেমেন্ট একাউন্ট সেটাপ করা অনেক সহজ কাজ। তবে, বাংলাদেশে পেপাল না থাকার কারণে, প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সারেরা ওয়াইজ, পেওনিয়ার, বা সরাসরি ব্যবহার করে ব্যাংক ট্রান্সফার মেথড।

মার্কেটপ্লেসে আপনি যখন কাজ সাবমিট করবেন এবং তার বিনিময়ে প্রাপ্ত টাকা পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে আপনাকে নিয়ে আসতে হবে ব্যাংক একাউন্টে। অর্থাৎ অনলাইনে ইনকামের টাকা পেমেন্ট মেথডের মাধ্যমে দেশে নিয়ে আসতে হবে।

আর সর্বশেষ ধাপ বা পদ্ধতি হিসাবে এ কারণেই পেমেন্ট মেথডকে নেওয়া যাবে, এমন সার্ভিসে বা ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করতে হবে। উপরের ধাপ বা পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে, পরিশ্রম করে প্রবেশ করা যাবে ফ্রিল্যান্সার পেশায়।

অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়- শেষকথা

বর্তমানে অনলাইনে কাজ করে খুব সহজেই টাকা আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। তবে এর জন্য আপনাকে বেচে নিতে হবে সঠিক পথ। অন্যথায় আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে, উল্ট নষ্ট করে ফেলতে পারেন আপনার ক্যারিয়ার।

প্রিয় পাঠক পাথিকাগণ, আমরা আশাকরি আপনারা যদি আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চই জেনে গেছেন "ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?   ফ্রিল্যান্সিংয়ে বর্তমানে জনপ্রিয় কাজ'' সম্পর্কে।

আরো পড়ুনঃ অনলাইনে টাকা ইনকাম করার সহজ অ্যাপ

যা, আমরা আর্টিকেলে ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭