ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
আরো পড়ুনঃ শীতে চুল ভালো রাখতে ঘরোয়া উপায়
ড্রগন ফল এখন বাংলাদেশের প্রায় সকল ফলের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। ড্রাগন ফল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি এর রয়েছে প্রচুর পরমাণে পুষ্টিগুণ এবং এর রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। যদিও আমরা প্রায় সকলেই ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা জনলেও, ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে এর গুনের কথা অনেকেই জানেন না।
প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল ত্বক পেতে চাইলে রূপচর্চায় রাখুন ড্রাগন ফল। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা, ব্যবহার এবং ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতায় ড্রাগন ফলের উপকারতা সম্পর্কে।
আর আপনারা যারা ড্রাগন ফলের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জনতে আগ্রহী, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পরোটাই পড়ুন। তাহলে, আর দেরি না করে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে তথ্য
- ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- ড্রাগন ফল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম
- ড্রাগন ফলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
- ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সমুহ
- ড্রাগন ফলের অপকারিতা
- ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা- শেষকথা
ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে, ফলে অনেকটাই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে এই ফল। এই ফলে মেলে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান। এই ফল যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি, তেমনিভাব ত্বকের যত্নেও প্রচুর উপকারি। নিম্নে ত্বকের যত্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
** অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে ড্রাগন ফলে। এছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় ড্রাগন ফল ত্বককে রক্ষা করে খতির হাত থেকে। তাছাড়াও ত্বকের বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখার সমস্যা মেটায়।
** রোদে পোড়া দাগ দূর করে- ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন বি৩ যা রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে প্রচুর উপকারি। এছাড়াও সূর্যের অতি বেগুনি রস্মির কারণে হওয়া চুলকানি, লালভাব এবং প্রদাহ থেকে পরিত্রাণ দেয়।
** ত্বকের সতেজতা বাড়ায়- ড্রাগন ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যা, ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায়। তাই ত্বককে সতেজ ও পুনরিজ্জীবিত করতে ড্রাগন ফলের ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
** ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে- ব্রণ কমাতে ড্রাগন ফলের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কারণ ড্রাগন ফলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বক ভাঙতে বাধা দেয় এবং ব্রণ দূর করে ত্বক করে আরো স্বাস্থ্য উজ্জল।
** এক্সফোলিয়েটিং- ড্রাগন ফল সাহায্য করে ত্বক স্কাব করাতে। কারণ ত্বকে জমে থাকা ময়লা ড্রাগন ফল দূর করে। ফলে ত্বকের মৃত কোষ খুব সহলেই দূর হয়।
** ত্বক করে উজ্জল- এই ফল সাহায্য করে মুখের ত্বকের বিভিন্ন ধরণের দাগ দূর করতে। এই ফল ত্বকে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জল।
** ত্বক করে ময়েশ্চারাইজার- ড্রাগন ফলে রয়েছে হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য। এই ফল ত্বকে ব্যবহার করার কারণে ত্বক হয়ে উঠে ময়েশ্চারাইজড। ফলে ত্বক হয়ে উঠে নরম, কোমল ও মসৃণ।
আরো পড়ুনঃ পায়ের গোড়ালী ফাটার কারণ ও প্রতিকার
** প্রদাহরোধী- প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য বা গুণ রয়েছে ড্রাগন ফলে। তাই এটি নিয়মিত ত্বকে ব্যবহার করার ফলে ত্বকের লালচেভাব দূর করার মাধ্যমে দূর করে প্রদাহ।
ড্রাগন ফল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম
ড্রাগন ফল স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। কিন্তু এটি ব্যবহার করার জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নিম্নে ড্রাগন ফল ব্যবহারের কয়েকটি সহজ নিয়ম আলোচনা করা হলো-
- পরমাণ মত ড্রাগন ফল, কাঁচা দুধ, বেসন বা ময়দা এবং গোলাপজন একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করন এবং তৈরি পেস্ট আপনার মুখের ত্বকে ব্যবহার করে ২০ মিনিট অপেক্ষার পর পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
- ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে এর ভিতরের শাঁস ভালোকরে চটকিয়ে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫- ২০ অপেক্ষার পর পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
- ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ড করে এর সঙ্গে টক দই মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন এবং আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। ১৫- ২০ অপেক্ষার পর পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
ড্রাগন ফলের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
- ডায়াটয়ারি ফাইবার ১-২ গ্রাম।
- কার্বোহাইড্রেট ৯-১৪ গ্রাম।
- চর্বি ১ গ্রামের নিচে।
- ক্যালোরী ৬০ গ্রাম।
- প্রোটিন ১-২ গ্রাম।
- চিনি ৮-১২ গ্রাম।
** কম ক্যালরী- তুলনা মূলকভাবে ড্রাগন ফলে রয়েছে কম ক্যালরী। আর যারা কম পরিমাণে ক্যালরি গ্রহন করতে চান, তাদের জন্য ড্রাগন হতে পারে উপযুক্ত।
** প্রিবায়োটিক সুবিধা- প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ কর ড্রাগন ফলে থাকা ফাইবার, যা বৃদ্ধি করে অন্ত্রের উপকারি ব্যাকটেরিয়া। ফলে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সাহায্য করে মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে।
ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সমুহ
ড্রাগন ফল এখন বাংলাদেশের প্রায় সব স্থানেই চাষ হচ্ছে, ফলে এই ফলটি পাওয়া যাচ্ছে দেশের সব যায়গায়। ড্রাগন ফল দেখতে অনেটাই চমৎকার এবং এটির পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যের জন্য প্রচুর উপকারি। নিম্নের আলোচনা থেকে আমরা জেনে নেই ড্রাগন ফলের উপকারিতা-
- আমাদের ক্যানসারের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে ড্রাগন ফল।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে ড্রাগন ফল গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
- ড্রাগন ফল শরীরের উপকারি ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সঠিক নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- এই ফলে রয়েছে প্রচুর বিটা- ক্যারোটিন, যা চোখ ভালো রাখে এবং ছানি পড়ার ঝুকি কমায়।
- এই ফল ফ্যাট ফ্রি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায়, ডায়াট লিস্টে নিশ্চিন্তে রাখা যেতে পারে ড্রাগন ফল।
- ড্রাগন ফল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে রক্তের শর্করার মাত্রা। ফলে এটি খেলে ঝুকি কমে ডায়াবেটিসের।
- ড্রাগন ফলে রয়েছে বেশ কয়েক ধরণের দরকারি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা, আমাদের সুস্থ্য থাকার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
- এই ফল থেকে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই ড্রাগন ফল নিয়মিত খাওয়ার কারণে বৃদ্ধি পায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
- ড্রাগন ফলের ভিতরে থাকা ছোট ছোট কালো বীজে রয়েছে, ওমেগা ৯ এবং ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, যা হার্টের জন্য খুবই উপকারি।
- ড্রাগন ফল আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। তাই যাদের রয়েছে রক্তশূন্যতার সমস্য, তারা নিয়মিত খাবারের তালকায় রাখতে পারেন এই ফল।
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
- অনেকের ড্রাগন ফলে এলার্জি হতে পারে। তাই যাদের এই ফল খাওয়ায় এলার্জির সমস্য দেখা দেয়, তারের এটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
- গর্ভবতী ও স্তনদান দান করেন, এমন মা- বোনদের ড্রাগন খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ড্রাগন ফল খেতে হবে।
- তাছাড়া যারা ডায়াবেটিস রোগে ভূগছেন, তাঁদের ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক এই ফল খাওয়া উচিত।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url