প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড় বগুড়া
আরো পড়ুনঃ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা মহস্থানগড় বগুড়া । বগুড়ার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের ইতিহাস অতি প্রাচীনতম। একসময় গোটা বাংলাদেশ শাসন করেছেন, বিভিন্ন রাজা, জমিদারগণ। এখন নেই তাদের রাজত্ব কিংবা জমিদারি। কারণ, বাংলাদেশে রাজার শাসন এবং জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
কিন্তু রয়ে গেছে তাদের শাসন আমলের প্রাচীন বিভিন্ন স্মৃতি। আর সেই স্মৃতিকে যুগের যুগের ধরে রাখার জন্য, প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সারা বাংলাদেশে বেশকিছু প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। আর এমনি এক জাদুঘর হলো বগুড়া মহাস্থানগড় জাদুঘর। বাংলাদেশে তথা সারা বিশ্বে অনেকে আছেন, জাদের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসের প্রতি অনেক আগ্রহ রয়েছে।
তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদে সঙ্গে শেয়ার করবো "প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড় বগুড়া'' সহ বাংলাদেশে থাকা বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা সম্পর্কে তথ্য। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর সম্পর্কে-
আজকের পাঠ্যক্রম- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড় বগুড়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
- বগুড়া প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর কোথায় অবস্থিত
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বগুড়ার ইতিহাস
- প্রত্নতাত্ত্বিক মহাস্থানগড় জাদুঘর প্রবেশ মুল্য
- প্রত্নতাত্ত্বিক মহাস্থানগড় জাদুঘর পরিদর্শন সময়সূচী
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড় বগুড়া
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত মুল্যবান সম্পদ
- প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বগুড়ার বর্তমান অবস্থা
- বাংলাদেশের মোট প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
- ঢাকা বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- রাজশাহী বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- খুলনা বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- বরিশাল বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- রংপুর বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- কিভাবে যাবেন প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড়
- মহাস্থানগড় জাদুঘর- শেষকথা
বগুড়া প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর কোথায় অবস্থিত
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বগুড়া বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত বগুড়া জেলা শহর থেকে মাত্র ১৩.৬ কিলোমিটার দূরে বগুড়া রংপুর মহাসড়কের পার্শ্বে, ধবংসপ্রাপ্ত প্রাচীন স্থাপনা মহাস্থানগড় ঢিপির নিকটে অবস্থিত।
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বগুড়ার ইতিহাস
বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে বগুড়া জেলায় প্রবাহমান করতোয়া নদীর তীরে, ঐতিহাসিক মহস্থানগড়ে ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। এই জাদুঘরটি মুলত মহাস্থান গড়ের প্রাচীন ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের গুরুত্বকে উপলব্দি করেই প্রতিষ্ঠা করা হয়।
পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকার এই প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের গুরুত্ব উপলব্দি করেন এবং সেটি দেখাশোনার দায়িত্ব নেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
প্রত্নতাত্ত্বিক মহাস্থানগড় জাদুঘর প্রবেশ মুল্য
প্রত্নতাত্ত্বিক মহাস্থান্গড় জাদুঘরে সংরক্ষিত দর্শনীয় এবং মুল্যবান দুর্লভ জিনিস দর্শনার্থীদের দেখার জন্য জনপ্রতি ৩০ টাকা প্রবেশ মুল্য পরিশোধ করতে হয়। তবে, বিশেষ কোন দিনে পর্যটকদের যাদুঘরটি বিনা মুল্যে পরিদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।
প্রত্নতাত্ত্বিক মহাস্থানগড় জাদুঘর পরিদর্শন সময়সূচী
গ্রীস্ম মৌসুমে অর্থাৎ এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত, সোমবার থেকে শনিবার (রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি) সকাল ১০.০০টা থেকে বৈকাল ০৬.০০টা পর্যন্ত। তবে, এর মধ্যে ৩০ মিনিট অর্থাৎ দুপুর ০১.০০টা থেকে দুপুর ০১.৩০টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের জন্য দুপুর ১২.৩০টা থেকে ০৩.০০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
শীত মৌসুমে অর্থাৎ অক্টোবর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত, সোমবার থেকে শনিবার (রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি) সকাল ০৯.০০টা থেকে বৈকাল ০৫.০০টা পর্যন্ত । তবে এর মধ্যে ৩০ মিনিট অর্থাৎ দুপুর ০১.০০টা থেকে দুপুর ০১.৩০টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের জন্য দুপুর ১২.৩০টা থেকে ০৩.০০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
তবে গ্রীস্ম বা শীত উভয় সময়েই সোমবার অর্ধ দিবস এবং সকল সরকারী ছুটির দিন মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বন্ধ থাকে।
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর মহাস্থানগড় বগুড়া
বংলাদেশের উত্তর বঙ্গের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ঐতিহাসিক স্থানের যেমন, বগুড়ার মহাস্থানগড়, নওগাঁর ঐতিহাসিক পাহাড়পুর, দিনাজপুরের কান্তনগর, শেরপুর, রাণী ভবানী ইত্যাদি এলাকায় বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার হওয়া প্রাচীন সামগ্রী এই জাদুঘরে ধীরে ধীরে (মহাস্থানগড়) সংরক্ষণ করা হয়।
বগুড়া মহাস্থানগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে রয়েছে হাজার হাজার বছরের প্রাচীন সোনা, রূপা, ব্রোঞ্জ, পাথর, লোহা, তামা, কাঁসা ইত্যাদি মুল্যবান ধাতব পদার্থসহ আত্নরক্ষায় ব্যবহৃত বিভিন্ন ধারলো অস্ত্র, পোড়ামাটির তৈরি মূর্তি নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র, বগুড়া মহাস্থানগড়ের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে শোভাবর্ধন করছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত মুল্যবান সম্পদ
মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে, মৌর্য, গুপ্ত এবং পালসহ বিভিন্ন রাজবংশের অসংখ্য দূলভ এবং স্মৃতিচিহ্ন। এখানে রয়েছে স্বর্ণবস্তু, ব্রোঞ্জের সামগ্রী, বেলে পাথরের মূর্তি, কালো পাথরের মূর্তি, দামি পাথরের একাধিক মূর্তি, মাটির মূর্তি, মুল্যবান পাথর, খোদাইকরা মাটির ইট, বিভিন্ন বাসনপত্র বিভিন্ন সময়ে শিলালিপি।
আরো পড়ুনঃ বরিশাল জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত । বরিশাল জেলার প্রাচীন ইতিহাস
এছাড়াও মাটি ও বিভিন্ন ধাতুর তৈরি কান ও নাকের ফুল, বোতাম, পোড়া মাটির পুতুল, মার্বেল, বিভিন্ন ধরণে প্রাচীন অলংকার, খেলনাসহ মুল্যবান এবং বহু প্রাচীন নিদর্শন। এছাড়াও এখানে সংরক্ষণ করা আছে প্রাচীন কালের সাক্ষ্য বহন করে এমন শিলালিপি, পোড়ামাটি, অলঙ্কার এবং মুল্যবান ধাতব দ্রব্যাদি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটির নাম নিম্নে আলোচনা করা হলো-
- ১১শ শতাব্দির বিষ্ণু মূর্তি।
- ১২শ শতাব্দির ব্রহ্ম মূর্তি।
- ১৫শ শতাব্দির আরবী শিলালিপি।
- বিভিন্ন সময়ের লৌহ দ্বারা নির্মিত দ্রব্য।
- ৮-১২ শ শতাব্দির স্বর্ণ এবং রৌপ্য মুদ্রা।
- ১১ শ শতাব্দির কালো পাথরের পম্বিকা।
- ১০ - ১১ শ শতাব্দির পোড়া মাটির ফলক।
- ৯- ১০ শ শতাব্দির অষ্ট ধাতু নির্মিত বালা।
- ৭ - ১১ শ শতাব্দির পোড়া মাটির বিভিন্ন দ্রব্য।
- ৮- ১০ ম শতাব্দির অলংকৃত মাটির বিভিন্ন বল।
- ১৮ শ শতাব্দির মুল্যবান মার্বেল পাথরের গণেশ মূর্তি।
- খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দির পোড়া মাটির দন্ডায়মান মূর্তি।
- খ্রিষ্টপূর্ব ৭- ৯ ম খ্রিষ্টপূর্ব বিভিন্ন ধরণের ব্রোঞ্জের তৈরি মূর্তি।
- চতুর্থ এবং পঞ্চম শতাব্দির পোড়ামাটির মূর্তির ধবংশসাবেশ।
প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বগুড়ার বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশের মোট প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ২১ টি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। যা বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্গত রয়েছে। নিম্নে বাংলাদেশের বিভাগ অনুযায়ী প্রত্নতত্ত্ব জাদু ঘরের তালিকা দেখানো হলো। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক-
ঢাকা বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
ঢাকা বিভাগে বর্তমানে মোট ০৩ টি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। নিম্নের এই সকল প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা দেখানো হলো-
- ময়মনসিংহ জাদুঘর।
- লালবাগ কেল্লা জাদুঘর।
- বালিয়াটি কেল্লা জাদুঘর।
রাজশাহী বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
রাজশাহী বিভাগে বর্তমানে মোট ০৮ টি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। নিম্নের এই সকল প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা দেখানো হলো-
- পতিসর।
- বাঘা জাদুঘর।
- চলনবিল জাদুঘর।
- কান্তনগর জাদুঘর।
- রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি।
- পুঠিয়া রাজবাড়ি জাদুঘর।
- মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর।
- পাহাড়পুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর।
খুলনা বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
খুলনা বিভাগে বর্তমানে মোট ০৭ টি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর রয়েছে। নিম্নের এই সকল প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা দেখানো হলো-
- মধুপল্লী জাদুঘর।
- বাগের হাট জাদুঘর।
- রবীন্দ্রকুটিবাড়ি জাদুঘর।
- খুলনার বিভাগীয় জাদুঘর।
- মেহেরপুর আমঝুপি নীলকুঠি।
- রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি দক্ষিণ ডিহি।
- মির্জানগর নবাব বাড়ির হাম্মাম খানা।
বরিশাল বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- শেরেবাংলা স্মৃতি জাদুঘর।
- বরিশালের বিভাগীয় জাদুঘর।
চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের তালিকা
- ময়নামতি জাদুঘর, কমিল্লা।
- জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর আগ্রাবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url