নাটোর জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান
আরো পড়ুনঃ মাটির মায়া ইকো রিসোর্ট গাজিপুর
নাটোর বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের একটি জেলা শহর। এক সময় এই নাটোর জেলা শহর থাকা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজবাড়ি ছিল। আর এই রাজবাড়ি থেকে শাসন করা হত বৃহত্তর রাজশাহি, রংপুর, কুষ্টিয়া এমনকি ভারতের বেশ কিছু অঞ্চল।
এখন বাংলাদেশে নেই কোন রাজা জমিদারদের শাসন, কিন্তু রয়েছে তাদের রেখে যাওয়া এই স্মৃতি। আর সেই প্রাচীন স্মৃতিকে আজও সযত্নে বুকে ধারণ করে রেখেছে নাটোর জেলা। এই জেলায় রয়েছে প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক স্থানসহ বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ''নাটোর জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান'' সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। তাহলে চলুন আমরা দেখে নেই-
আজকের পাঠ্যক্রম- নাটোর জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
- নাটোর জেলার ইতিহাস
- নাটরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি
- লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী নাটোর
- গ্রীন ভ্যালী পার্ক নাটোর
- গ্রীন ভ্যালী বিনোদন পার্ক ভ্রমনের সময়সূচী
- শহীদ সাগর স্মৃতিস্তম্ভ নাটোর
- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চলন বিল
- চলন বিল জাদুঘর নাটোর
- চলনবিল জাদুঘর পরিদর্শন সময়সূচী
- নাটোর জেলার ঐতিহাসিক স্থান- শেষকথা
নাটোর জেলার ইতিহাস
"নারোদ" শব্দ থেকে এসেছে নাটোর, যা নাটোর জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। আর এই নদীর নাম করণ করা হয়েছিল নরোত্তম নামক একজন পৌরাণিক ঋষির নাম অনুসারে। নাটোর জেলাটি মূলত স্থাপন করা হয়েছে একটি বৃহৎ জলাশয় বা বিলের উপর।
রাজা রাম জীবন রায় ১৭০৬ সালে এই বিলটি ভরাট করেন এবং সেখানে তিনি তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন এবং এর নাম করণ করেন নাট্যপুর। পরবর্তীতে নাট্যপুর থেকে নাম হয় নাটোর। এটি বর্তমান রাজশাহীর সদর দপ্তর (১৭৬৯ সাল থেকে ১৮২৫ সাল) ছিল।
রাজশাহীতে ১৮২৫ সালে সদর দপ্তর স্থানান্তরিত করা হয় এবং রাজশাহী জেলার অধিন একটি মহকুমায় পরিণত করা নাটোর জেলাকে। নাটোরকে ১৮৪৫ সালে মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। নাটোর ১৬৮৯ সালে পৌরসভায় পরিণত হয়। ১৯৮৪ সালে নাটোর মহকুমা থেকে জেলায় পরিণত হয়।
নাটরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ি
বাংলাদেশের নাটোর জেলা সদরে অবস্থিত নাটোরের ঐতিহাসিক রাজবাড়িটি। এই রাজবাড়ি নাটোরের রাজ বংশের একটি স্মৃতিচিহ্ন। এই রাজ বংশের গোড়া পত্তন শুরু হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে। পরগণা বানগাছির জমিদার ভবাণী চরণ চৌধুরী ও গনেশ রায় ১৭০৬ সালে রাজস্ব প্রদানে ব্যর্থ হয়ে চাকুরিচ্যুত হন।
সেই সময় জমিদারিটি দেওয়ান রঘুনাথ বন্দোবস্ত নেন তার ভাইয়ের রাম জীবনের নামে। আর এভাবেই নাটোর রাজবংশের সূচনা হয়। নাটোরের রাজবংশের প্রথম রাজা হিসাবে রাজা রাম জীবন ১৭০৬ বা ১৭১০ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তিনি ইন্তেকাল করে ১৭৩৪ সালে।
রাজা রাম জীবন জীবিত থাকা অবস্থায় ১৭৩০ সালে তাঁর দত্তক পুত্র রাম কান্তের সঙ্গে রাণী ভবানীর বিয়ে দেন। রাজা রাম জীবনের মৃত্যুর পর, নাটোরের রাজা হয় রামকান্ত। রাজা রামকান্ত ১৭৪৮ মৃত্যু বরণ করলে, নবাব আলীবর্দী খাঁ জমিদারি পরিচালনার দায়িত্ব, রাণী ভবানীর উপর অর্পণ করন।
রাণী ভবানীর রাজত্বের সময় তিনি তাঁর জমিদারি বিস্তৃত করেন, বর্তমান রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর, যশোর, পাবনা, কুস্টিয়া বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, বীরভূম জেলা পর্যন্ত। রাম জীবন, রঘুনাথ এবং পণ্ডিতবর্গ তাঁদের জমিদারির রাজধানী নিজ জন্মভূমিতে স্থাপনের জন্য নির্বাচন করেন, তৎকালীন ভাতঝাড়ার বিলকে।
ভাতঝাড়ার বিলটি সম্পত্তি ছিল পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়ণের। এ কারণে রাজা দর্পনারায়ণের নিকট বিলটি রঘুনন্দন ও রামজীবন আবেদন করেন রায়তী স্বত্বে পত্তনীর জন্য। রাজা দর্পনারায়ণ তখন নতুন রাজাকে জমিটি ব্রহ্মোত্তোর দান করেন।
রামজীবন বিলটি সমতল করেন, দীঘি, পুকুর এবং চৌকি খনন করে। রাজবাড়ি স্থাপন করে এই এলাকাটির নাম করণ করেন, নাট্যপুর। এই রাজবাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছিল ১৭০৬ সাল থেকে ১৭১০ সাল পর্যন্ত। রাজবাড়ির আয়তন ১২০ একর। তবে, রঘুনাথ থাকতেন মুর্শিদাবাদের বড়নগরে।
রাজবাড়িতে ছোট বড় মিলে ৮ট ভবন, ২ টি বড় এবং ৫টি ছোট পুকুর রয়েছে। রাজবাড়িটি ছোট এবং বড় তরফ নামে এই দুটি অংশে বিভক্ত। রাজবাড়িটির দুইস্তরের বেস্টনী ছিল। রাজবাড়িতে থাকা উল্লেখযোগ্য মন্দির হলো, আনন্দময়ী কালিমন্দর, শ্যামসুন্দর মন্দির, তারকেশ্বর শিব মন্দির ইত্যাদি।
লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী নাটোর
নাটোর জেলার বনপাড়া অবস্থিও ক্যাথলিক মিশনকে বলা হয়, লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী। আর খ্রিষ্ট ধর্ম পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে সংক্ষেপে বলা হয়, খ্রিষ্টমন্ডলী বা শুধু মন্ডলী। এর মূলত পরিচালনা করে থাকে ভাটিকান কর্তৃপক্ষ।
খ্রিষ্টধর্মে যারা বিশ্বাসী সেই সকল জনসাধারণকে পরিচালনা ও সেবাদান বা আধ্যাতিক পরিচর্যার উদ্দেশ্যে গঠিত একটি সাংগঠনিক অঞ্চলকে বলা হয় ধর্মপল্লী। আর লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লীকে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিশুখ্রিষ্টের জননীর পুণ্য নামের স্মৃতিকে।
নাটোর জেলার দক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত বনপাড়া পৌরসভার পাঁচটি গ্রাম এবং জোয়াড়ী ও মাঝগ্রামের দুটি করে গ্রাম সহ মোট সাতটি গ্রাম নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লী। ঐতিহ্যবাহী বড়াল নদীর তীরে বনপাড়া গ্রামে ধর্মপল্লীর নির্ধারিত গির্জাটি রয়েছে।
প্রথম ১৯৪০ সালে ফাদার থমাস কাত্তান নামক একজন ইতালীয় ধর্মযাজক এখানে আসেন। এই লুর্দের রাণী মা মারিয়া ধর্মপল্লীতে বাস করেন, প্রায় ৭ হাজার ক্যাথলক খ্রিষ্টান। তাদের মধ্যে প্রায় ৯৫ ভাগ বাঙ্গালী এবং ৫ ভাগের মত সাঁওতাল আদিবাসী রয়েছে।
গির্জা বা ধর্মপল্লী প্রশাসনের অধীনে রয়েছে সেন্ট জোসেফস উচ্চ বিদ্যালয় এবং সেন্ট জেভিয়া্র ও সেন্ট জোসেফস নামক ২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাছাড়া প্রায় ৪৫০ জন্য আদিবাসী দরিদ্র ছাত্র/ ছাত্রী অবস্থানের জন্য পৃথক পৃথক আবাসনের ব্যবস্থা।
এখানে গির্জা প্রশাসন সমাজের অবহেলিত নারীদের ক্ষমতায়ন এবং উন্নয়নের জন্য পরিচিলিত হয় একটি সেলাই কেন্দ্র। এছাড়াও দরিদ্র প্রসুতি মা বোনদের সেবা দেওয়ার লক্ষে গত ষাটের দশকে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে একটি দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্র।
গ্রীন ভ্যালী পার্ক নাটোর
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপূর, বর্তমান অন্যতম জনপ্রিয় গ্রীন ভ্যালী পার্ক নাটোর জেলার উপজেলা শহর লালাপুর থেকে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আধুনিকভাবে গড়ে উঠা বিশাল এই বিনোদন স্পটটি সব বয়সী বিনোদনপ্রেমী এবং ভ্রমন পিপাসুদের প্রাণকেন্দ্র।
নয়নাভিরাম গ্রীনভ্যালী পার্কটি প্রায় ১২৩ বিঘা জনির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে সব বয়সীদের বিনোদনের জন্য রয়েছে, প্যাডেল বোট, স্প্রিডবোট, মিনি ট্রেন, বুলেট ট্রেন, পাইরেট শীপ, ম্যারিগো রাউন্ড, নাগর দোলা, সুইমিং পুল ইত্যাদি।
তাছাড়াও, এই পার্কে রয়েছে, ৩০ একর জমির উপর একটি নয়নাভিরাম লেক। লেকের আঁকা বাকা পথে চলা এবং দূরন্ত বোটের স্প্রিডবোটে ঘুরলে, যে কারো মন আনন্দে ভরে উঠবেই। সাথে রয়েছে, বিনোদন পার্কে থাকা বিভিন্ন বাহারি ফুলের সুবাস।
আরো পড়ুনঃ দিনাজপুর জেলার ১০ জনপ্রিয় বিনোদন পার্ক
গ্রীন ভ্যালী পার্কে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য রয়েছে পিকনিক স্পট, এ্যাডভেঞ্চার রাইডস, শুটিং স্পট, কনসার্ট এবং প্লে গ্রাউন্ড। আরো রয়েছে সভা সেমিনার করা্র স্থান, রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে, সুন্দর আবাসিক সুবিধ। এই কারণে গ্রীন ভ্যালি পার্কটি এখন অনেক জনপ্রিয়।
গ্রীন ভ্যালী বিনোদন পার্ক ভ্রমনের সময়সূচী
গ্রীন ভ্যালী বিনোদন পার্কে প্রবেশের জন্য, দর্শনার্থীদের জন প্রতি ৫০ টাকা প্রবেশ মুল্য দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। পার্কটি প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বৈকাল ৫ টা পর্যন্ত নিয়মিত খোলা থাকে। তবে, ঋতুর পরিবর্তনের সঙ্গে কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে।
শহীদ সাগর স্মৃতিস্তম্ভ নাটোর
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নাটোরের নর্থ বেঙ্গল চিনি কলে কাছে গণহত্যার স্মরণে শহীদ সাগর স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে। শহীদ সাগর স্মৃতিস্তম্ভটি মূলত গড়ে উঠেছে একটি পুকুরকে কেন্দ্র করে। এই পুকুরের পানি ১৯৭১ সালের ৫মে শহীদের রক্তে জমাট বেধে লাল হয়েছিল।
১৯৭৩ সালের ৫ মে শহীদ স্মৃতিসৌধটি উদ্বোধন করে শহীদ সাগর চত্বরে শহীদ হওয়া লেঃ আনোয়ারুল আজিমের স্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার। স্তম্ভের পূর্বদিকে রয়েছে, সন্দর ফুল বাগান ও পিছনে রয়েছে স্মৃতি জড়িত সেই পুকুরটি। আর এর কাছেই রয়েছে একটি জাদুঘর, যা উদ্বোধন করেন ২০০০ সালের ৫মে।
স্মৃতিস্তম্ভের যে সকল স্থানে বুলেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল, সেই সকল স্থানে এখনও, শহীদের রক্তের প্রতিকী লাল চিহ্ন রয়েছে। এলাকায় লোকশ্রুতি রয়েছে যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের কয়েক বছর পরও, উক্ত পুকুরের পানি, শহীদের রক্তের লাল চাপ বাধা অবস্থায় ছিল।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চলন বিল
চলন বিল হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল। এই বিলটি অবস্থিত মূলত উত্তর বঙ্গের নাটোর, পাবনা এবং সিরাজগঞ্জ জেলা নিয়ে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিলটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, অনেকগুলো ছোট ছোট বিল। এই বিল আপনাকে বছরের কোন ঋতুতেই হতাশ করবে না।
শীতে এখানে দেখা মেলবে অথিতি পাখি, বসন্তে সবুজ গ্রাম ও সুনীল আকাশ, বর্ষায় নীল আকাশ আর পানি ভর্তি বিল মিলে মিশে হয়ে যায় একাকার, শরতে বিলের ধারে সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে কাশফুল। তবে, এই বিল ভরা মৌসুমে ফিরে পায় তাঁর আসল রূপ। আর দর্শনার্থীর ভিড় থাকে বর্ষা মৌসুমে।
এই বিল বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৩৬৮ বর্গ কিলোমিটার পানিতে ভরপুর হয়ে যায়। এই বিলের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে, ছোট ছোট যে বিলগুলো, তা হলো- চলন, চিরল, গাজনা, শুরকা, নিয়ালা, ঘুঘুদহ, লারোর, বড়বিল, খরদহো, তাজপুর, কুরলিয়া, ব্রিয়াশো, পিপরুল, মাঝগাও, শাতাইল, দারিকুশি, দিক্ষিবিল, ডাঙ্গাপাড়া, কাজীপাড়া, চোনমোহন, পূর্ব মধ্যনগর, সোনা পাতিলা ইত্যাদি বিল।
চলন বিল জাদুঘর নাটোর
চলন বিল দেখা শেষ হয়ে গেলে, পাশেই রয়েছে চলন বিল জাদুঘর। জাদুঘরটি জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর গ্রামে অবস্থিত। ১৯৭৮ সালে স্থানীয় একজন শিক্ষক আব্দুল হামিদ তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যতিক্রমী এই জাদুঘরটি গড়ে তুলেছেন।
এই জাদুঘরের সংগ্রহ সালায় রয়েছে, মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রীসহ দুর্লভ অনেক সামগ্রী। চলন বিল এলাকার স্থানীয় কিছু সমাজকর্মীরা তাঁদের শ্রম দিয়েছেন এই জাদুঘরে। গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভবনে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাদুঘরটি।
জাদুঘর প্রতিষ্ঠার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন নিদর্শন সামগ্রী বিশেষ করে, চলন বিলের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে জাদুঘরটি সমৃদ্ধ হয়ে উঠে এবং ২ জুলাই ১৯৮৯ সালে চলন বিল জাদুঘরটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় আসে।
এখানে রয়েছে, সম্রাট নাসিরুদ্দিন ও বাদশা আলমগীরের নিজ হাতে লেখা দুটি কোরআন শরীফ এবং তুলট কাগজে হাতে লেখা ৩শ থেকে ৪শ বছরের পুরনো ৭টি আংশিক ও ৮টি সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ সহ ১৫টি হাদিস শরিফ ও ২৫৭টি ধর্মগ্রন্থ।
এছাড়াও চলনবিল জাদুঘরের সংগ্রহ শালায় রয়েছে, মাতৃকামূর্তি ও কষ্টি পাথরের বিষ্ণু মূর্তি, সূর্যদেবের মূর্তিসহ ৯০টি দেশের মুদ্রা, ঘট, ডাকটিকিট, বিভিন্ন সময়ের শাসনামলের টেরাকোটা, শিলা বিভিন্ন গবেষণাগ্রন্থ ইত্যাদি।
চলনবিল জাদুঘর পরিদর্শন সময়সূচী
গ্রীস্ম মৌসুমে অর্থাৎ এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত, সোমবার থেকে শনিবার (রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি) সকাল ১০.০০টা থেকে বৈকাল ০৬.০০টা পর্যন্ত। তবে, এর মধ্যে ৩০ মিনিট অর্থাৎ দুপুর ০১.০০টা থেকে দুপুর ০১.৩০টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের জন্য দুপুর ১২.৩০টা থেকে ০৩.০০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
শীত মৌসুমে অর্থাৎ অক্টোবর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত, সোমবার থেকে শনিবার (রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি) সকাল ০৯.০০টা থেকে বৈকাল ০৫.০০টা পর্যন্ত । তবে এর মধ্যে ৩০ মিনিট অর্থাৎ দুপুর ০১.০০টা থেকে দুপুর ০১.৩০টা পর্যন্ত বিরতি থাকে। শুক্রবার জুম্মার নামাজের জন্য দুপুর ১২.৩০টা থেকে ০৩.০০টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।
তবে, গ্রীস্ম বা শীত উভয় সময়েই সোমবার বেলা ২টা পর্যন্ত এবং সকল সরকারী ছুটির দিন মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর বন্ধ থাকে।
নাটোর জেলার ঐতিহাসিক স্থান- শেষকথা
নাটোর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক একটি জেলা। এই জেলায় থাকা রাজবাড়িটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি বৃহৎ রাজবাড়ি এবং এখান থেকে শাসন করা হতে বেশ কিছু অঞ্চল। নাটোর ছাড়াও এই জলার পাশে থাকা উপজেলা পুঠিয়ায় রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক স্থান।
প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ, আমরা আশাকরি আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই যেনে গেছেন "নাটোর জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান'' সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
আরো পড়ুনঃ ২২০ বছরের প্রাচীন সূর্যপুরি আমগাছ
যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশাবাদী। আর আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালোলাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অবশ্যই শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url