সূর্যের আলোর উপকারতা ও অপকারিতা
আরো পড়ুনঃ চিনা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
গায়ের রঙ কালো হবে, এই ভেবে আমরা অনেকেই চেস্টা করি রোদ থেকে দূরে থাকার। তাছাড়া সারা শরীরে অনেকে লাগিয়ে রাখে সানস্ক্রিম। কিন্তু আমারা অনেকেই ভুলে জাই যে, আমাদের শরীরের জন্য সূর্যের আলোর প্রয়োজনীয়তা কত। সূর্যের ইউএভি রশ্মি আমাদের নাইট্রিক অক্সাইড বৃদ্ধি করে এবং রক্ত সঞ্চালন করে সঠিক। ফলে দূর হয় আমাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা।
সূর্যের আলোতে এনার্জি বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পায় মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। তাছাড়া মানুষের উপর ভালো এবং মন্দ উভয় প্রকার প্রভাব ফেলে সূর্যের রশ্মি থেকে পাওয়া অতিবেগুনী ইউভি রশ্মির বিকিরণ। বিশেষজ্ঞারা জানিয়েছেন যদিও ত্বকের জন্য ইউভি রশ্মি ক্ষতিকর, তবে এটি অনেক রোগ নিরাময় করে থাকে।
যাইহোক সূর্যের আলোর কিছু খারাপ বা মন্দ দিক থাকলেও সূর্যের আলোর রয়েছে অনেক ভালো বা উপকারিতা। আর আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো সূর্যের আলোর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই-
আজকের পাঠ্যক্রম- সূর্যের আলোর উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জানুন
- সূর্যের আলোর উপকারতা ও অপকারিতা
- সূর্যের আলোর ১০ উপকারিতা
- সূর্যের আলোর অপকারিতা বা ক্ষতি
- রোদের উপকারিতা ও উপকারিতা- শেষকথা
সূর্যের আলোর উপকারতা ও অপকারিতা
মানুষের শরীরের পরম বন্ধু হতে পারে সূর্যের আলো। এটি শুধুমাত্র মানুষের মেজাজ, বিষণ্ণতা এবং এস,এ,ডি এর চিকিৎসার জন্য হতে পারে কার্যকর অংশ। তবে সূর্যের রশ্মি হতে পারে মানুষের শরীরকে সুস্থ্য রাখার বাস্তব উপকারি। এক সপ্তাহ বা তারচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে আটকে রয়েছেন মেঘলা অবস্থায়, একটি হালকা বা কম থেরাপি ল্যাম্প বিবেচনা করুন।
যা কোন ঘরে করা যেতে পারে ইনস্টল এবং সূর্যের জন্য প্রদান করতে পারে অস্থায়ী বিকল্প। তবে অতিরিক্ত সূর্যের আলো বা রোদ গ্রহন করার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি এবং আপনার ত্বকে যে ক্যানসারের কোন ঝুকি নেই, তা নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে নিয়মিত ত্বক পরীক্ষার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
সূর্যের আলোর ১০ উপকারিতা
সূর্যের আলো মানুষের শরীরের অনেক উপকারিতা করে থাকে। আমরা নিম্নের আলোচনা থেকে জেনে নেই ১০ উপকারিতা সম্পর্কে-
ভিটামিন ডি- মানুষের শরীরের জন্য ভিটামিন ডি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি মানুষের শরীরের রোগ কমানোর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করে কোষের বৃদ্ধিকে। আর ভিটামিন ডি শুধুমাত্র খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া সম্ভাব নয়। সূর্যের আলো বা রোদ হলো প্রাক্রিতিক উপায়ে ভিটামিন "ডি" পাওয়ার প্রধান উৎস।
অতি প্রয়োজনীয় এই ভিটামিন শোষণ করতে আপনি প্রতিদিন ঘরের বাইরে জান এবং মুখ থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে সরাসরি সূর্যের আলো বা রোদ দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। তবে আপনাকে স্মরণ রাখতে হবে যে, এইভাবে নিয়মিত ঘরের বাইরে গিয়ে সূর্যের আলো বা রোদে ভিটামিন নিলে সানস্ক্রিম ব্যবহার এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
ঠিক রাখে মেজাজ- মানুষর মন মেজাজ ঠিক রাখতে সূর্যের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা। রৌদ্রোজ্জ্বল স্বভাব দেখা যাচ্ছে যে, কোন একটি অভিব্যক্তির চেয়েও অনেক বেশি। একটি গবেষণায় উঠেছে যে, সূর্যের আলো কম থাকা ঋতুতে মানুষের মধ্যে অনেক বেশি খুজে পেয়েছেন মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা। অপরদিকে সূর্যের আলো বেশি থাকা দিনগুলোতে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
আসল কথা হলো মেঘলা আকাশ, বৃষ্টিপাত কিংবা অন্য যে কোন পরিবেশের চেয়ে রোদের প্রাপ্যতা মেজাজের উপর প্রভাব ফেলে। রোদ পেলে আপনার সেরোটিন বাড়ায় এবং সাহায্য করে মৌসুমি ডিসঅর্ডার থেকে এবং সূর্যের এক্সপোজার এবং বিষণতায় আক্রত্ন মানুষদের অনেক সাহায্য করে, বিশেষ করে এটি চিকিৎসার ক্ষেত্রে সম্পূক্ত।
রক্তচাপ কমায়- এটি শুনতে অবাক লাগলেও সত্য যে, সূর্যের আলো সাহায্য করে রক্তচাপ কমাতে। কারণ সূর্য যখন মানুষের শরীরে আঘাত করে, তখন নিঃসরণ করে মানুষের শরীরের রক্তে নাইট্রিক অক্সাইড। রক্তচাপ কমিয়ে আনে এই যৌগ এবং উন্নতি করে হার্টের স্বাস্থ্যের।
আরো পড়ুনঃ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডুমুরের উপকারিতা
সুস্থ রক্তচাপ বজায় থাকার কারণে মানুষের কার্ডিয়াক রোগ এবং মানুষের স্টকের ঝুকি কমতে পারে। আর অনুভূত হয় শিথিলতা ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমিয়ে আনতে পারে রক্তচাপকে। তাছাড়া সূর্যের আলো মানুষের শরীরের সাহায্য করে রক্তচাপ কম রাখতে।
ঘুমের উন্নতি ঘটে- সূর্যের আলো মেলাটোনিন নামে এক প্রকার হরমোন মানুষের শরীরে তৈরি করে, যা মানুষের ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের শরীরে যেহেতু অন্ধকার হলে শুরু করে এটি তৈরি করতে। মানুষ সাধারণত ঘুমাতে যান সূর্য ডুবার চার/পাচ ঘন্টা পরে। আর গ্রীস্মের পরে মানুষের শরীর জেগে থাকা একটি অন্যতম কারণ।
স্ট্রেস কমায়- সূর্যের আলোর অন্যতম প্রধান উপকারিতা হলো এটি সাহায্য করে স্ট্রেস কমাতে। কারণ এতে থাকা মেলাটোনন মানুষের শরীরের স্ট্রেস রিঅ্যাক্টিভিটি কম করে এবং বাইরে থাকা মানুষের শরীরকে সঠিকভাবে মেলাটোনিন ঠিক রাখতে পারে, ফলে সাহায্য করতে পারে মানুষের স্ট্রেস লেভেল কমাতে।
যেহেতু, মানুষ বাইরে থাকে সেইসময় সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন কাজের বা ব্যায়ামের মধ্যেযুক্ত থাকেন, যেমন কাজ, হাটা বা খেলা ধুলা ইত্যাদি। আর সেই অতরিক্ত শারীরিক ব্যায়ামের কারণে মানুষকে সাহায্য করে মানসিক চাপ কমাতে।
ওজন কমায়- সূর্যের আলোর অপর একটি বড়গুণ হলো এটি মানুষের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে নিয়মিত সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট বাইরে বের হওয়া যুক্ত থাকে ওজন কমানোর সঙ্গে। আর অবশ্যই সেখানে অন্য কোন কারণ থাকতে পারে, তবে মনে করা হয় ভোরর সূর্যের আলো ওজন কমানোর মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে।
হাড়ের গঠন মজবুত করে- আমরা প্রায় সকলেই জানি যে, সূর্যের আলোতে রয়েছে ভিটামিন "ডি" যা মানুষের শরীরে জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। কারণ কম ভিটামিন "ডি" থাকার অন্যতম কারণ অস্টিওপোরোসিস রিকোটিন রোগের কারণ এবং ভিটামিন "ডি"র সবচেয়ে সুবিধা হলো এটি একটি শক্তিশালী হাড এবং দাঁত গঠনে সাহায্য করে।
মানুষের শরীরে কতোখানি প্রয়োজন ভিটামিন "ডি"? আন্তর্জাতিক ইউনিট (আই ইউ) এর পরামর্শ হলো পূর্ণ বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৪০০০ আইইউ। আর হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য যদিও ক্যালসিয়াম গ্রহন করা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ, মানুষের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ রোদ পাওয়াতে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে।
আয়ু বৃদ্ধি- একটি গবেষণা পরিচালিত হয় প্রায় ৩০ হাজার সুইডিস মহিলাদের উপর গবেষণায় উঠেছে যে, যারা সূর্যের আলোর মধ্যে বেশি সময় কাটিয়েছেন, তারা কম সূর্যের আলোতে কাটানো মহিলার তুলনায় ছয় থেকে প্রায় ২ বছর বেশি বাঁচেন। এই বিষয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন, তবে বিজ্ঞানীরা এটি অধ্যায়ন চালিয়েছে।
শক্তিশালী করে ইমিউন সিস্টম- মানুষের শরীরের জন্য ভিটামিন "ডি" ইউনিক সিস্টম অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সূর্যের আলোর ধারাবাহিকতা মানুষের শরীরকে সাহায্য করে এটিকে শক্তিশালী করতে। একটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেম সংক্রামণ, অসুস্থতা, অস্ত্রোপাচার এবং অনেক ক্যানসারের মতো মৃত্যুর ঝুকি রোধ করতে অনেক সাহায্য করতে পারে।
বিষণ্ণতা দূর করে- সূর্যের আলো শুধু মানুষের মাথায় নয়, একটি বৈজ্ঞানিক কারণ হলো যে, সূর্যের আলো মানুষের মেজাজকে উন্নত করে। কারণ রোদ মানুষের শরীরে সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। আর এটি একটি রাসায়নিক উপাদান, যা মানুষের মেজাজকে করে উন্নত এবং সাহায্য করে শান্ত ও মনোযোগী হতে।
তাছাড়া প্রাকৃতিক আলোর অধিক এক্সপোজার ঋতুগত সংবেদনশীল রোগের লক্ষণগুলিকে সাহায্য করতে পারে সহজ করতে। মেজেজের পরিবর্তন ঘটে সাধারণত শরৎ এবং শীতের ঋতুর সময়, যেই সময় সূর্যের আলো কম থাকে। এতে করে মানুষ বিষণ্ণতা কাটিয়ে উঠে সতেজ ও সাজীব অনুভূতি লাভ করতে পারেন।
সূর্যের আলোর অপকারিতা বা ক্ষতি
সূর্যের আলোর ক্ষতি বা অপকারিতা নেই বললেই চলে। তবে সূর্যের আলোতে দীর্ঘ সময় থাকার কারণে ত্বক পুড়ে যায় এবং রঙ পরিবর্তন হয়। আর এটিই হলো সূর্যের সবচেয়ে বড় অপকারিতা, যদি কেউ দীর্ঘ সময় সূর্যের আলোতে থাকে তাহলে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, সূর্যের আলোতে রয়েছে, অতিবেগুনি রশ্মি বা আল্ট্রাভালোলেট লাইট।
রোদের উপকারিতা ও উপকারিতা- শেষকথা
পাঠক পাঠিকাগণ আমরা আশাবাদী যে, আপনারা যদি আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই জেনে গেছেন "সূর্যের আলোর উপকারিতা ও অপকারিতা'' সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা আর্টিকেলে আমরা ইতিপূর্বেই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
আরো পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
আশাকরি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে যারা সূর্যের সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহী, তাদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারি। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ুন এবং সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url