আরো পড়ুনঃ জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪
জাপান এশিয়া মহাদেশের অন্যতম অর্থনৈতিকভানে উন্নত একটি দেশ। এই দেশে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য মানুষ শিক্ষা, ভ্রমন কিংবা কাজের জন্য গিয়ে থাকেন। তাছাড়া অর্থনৈতিকভানে উন্নত দেশ হওয়ার কারণে সে দেশের জীবন যাত্রার মান অনেকটাই ভালো।
জাপানে অবস্থিত বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কাজের জন্য লোক নিয়ে থাকেন। তাছাড়া সেদেশে উচ্চ বেতনে বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আপনি জাপান কিভাবে যাবেন। প্রতিটি দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে ভিসার। সেক্ষেত্রে জাপান যাওয়ার জন্যও প্রয়োজন লাগে ভিসার।
কিন্তু জাপান যাওয়ার জন্য সে দেশের সরকার কয়েক ধরণের ভিসা প্রদান করে থাকে এবং ভিসার ধরণ অনুযায়ী ভিসা খরচ ভিন্ন হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো জাপান কেন জাবেন, জাপানে যাওয়ার উপায়সহ জাপানের ভিসা সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য।
আর আপনারাও যদি জাপানের যাওয়ার জন্য, জাপানের ভিসাসহ অন্য সকল তথ্য জানতে জানতে চান, তবে তারা আমাদের সঙ্গে থেকে আর্টিকেলটি পড়ুন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক -
জাপান যাওয়ার কারণ
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ জাপানি ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে জাপান যাওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। এর মূল কারণ হলো জাপানের জীবন যাত্রার মান অনেকটাই আধুনিক এবং সেদেশে কাজ করলে বেতন পাওয়া যায় উচ্চ মানের।
যা আমাদের বাংলাদেশের বেতনের চেয়ে প্রায় চার/পাচগুণ বা অনেক সময় তার চেয়েও বেশি। আপনার যদি নিদিষ্ট কোন কাজের উপর দক্ষতা থাকে এবং জাপানি ভাষায় পারদর্শী হন, তাহলে জাপানের অনেক সুনামধন্য কোম্পানিতে আপনি কাজ করতে পারবেন এবং সুযোগ সুবিধা পাবেন অনেক।
তবে বাংলাদেশ থেকে জাপানে জাওয়া অনেকটাই কঠিন হলেও, বর্তমানে জাপানে যাওয়ার ভিসা পাওয়া সম্ভব। আমরা নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে দেখে নেই জাপান যাওয়ার উপায় সম্পর্কে-
কিভাবে জাপান যাওয়া যায়
বাংলাদেশ থেকে জাপান জাওয়ার ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন। কিন্তু জাপান বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র এবং ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে কয়েক প্রকারের ভিসা নিয়ে জাপান যাওয়া যায়।
যেমন, ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার ভিসা, টেকনিক্যাল ট্রেনিং ভিসা, স্টুডেন্ট ভিসা, SSW (নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী) ভিসা ইত্যাদি। তবে এই সকল ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভাষা এবং দক্ষতা টেস্ট দিতে হবে।
জাপানে ভিসার পাওয়ার প্রথমিক কাজ ভাষা শিক্ষা। কারণ সে দেশের ভাষা জানা থাকলে সহজে যেমন ভিসা পাওয়া যায়, তেমনিভাবে সেখানে গিয়ে ্বিভিন্ন কমিউনিকেশন করার পাশাপাশি অনেক সুবিধা পাওয়া যায়, আপনি যে কোম্পানিতে কাজ করবেন সেখানে। আপনি চাইলে উপরের আলোচনা করা যেকোন একটি ভিসা পেতে পারেন।
তবে যাইহোক, আপনি এই সকল ভিসার মধ্যে যে কোন একটি ভিসাতে জাপান যাওয়ার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকলে, আপনাকে ভাষা ও কাজের দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে দিতে হবে মোটা অংকের টাকা। আমরা নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই, জাপানে যাওয়ার জন্য কোন ভিসার দাম কতো সে সম্পর্কে।
জাপানে কোন ভিসার দাম কত
বাংলাদেশ থেকে জাপানে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা আবেদনে জন্য কোন আবেদন ফি প্রয়োজন হয় না। কিন্তু এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসা পাওয়ার প্রোসেসিং করতে প্রয়োজন পড়ে বেশ কিছু টাকার। আর এটা অনেকটাই নির্ভর করে এজেন্সি বা দালালের উপর। নিম্নে জাপানের বিভিন্ন ভিসার দাম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
আরো পড়ুনঃ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ ২০২৪
- স্টুডেন্ট ভিসার দাম ১০ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা।
- ইন্টারন্যাশনাল জব ভিসার দাম ১২ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
- SSW (নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী) ভিসার দাম ৫ লক্ষ টাকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা
- TITP (টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম) ভিসার দাম ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
কিভাবে জাপানের ভিসা পাওয়া যাবে
বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি উপায়ে জাপান যাওয়ার ভিসা পাওয়া যায়। এর মধ্যে TITP (টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম) ভিসা, SSW (নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী) ভিসা, ইন্টারন্যাশনাল জব ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে যাওয়া যায়। আপনি কিভাবে জাপানের ভিসা পাবেন সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
** প্রথমে আপনাকে নির্বাচন করতে আপনি কোন কজেরযোগ্য এবং কোন ক্যাটাগরির ভিসার মাধ্যমে আপনি জাপানে যেতে চান। এরপর সেই কাজের জন্য আপনার কতটুকু ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন তা অর্জন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজ বা ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে আবেদন করতে হবে ভিসার জন্য। জাপানি দূতাবাসে ভিসা পাওয়ার জন্য একটি শর্ট ইন্টারভিউ দিতে হবে।
** বর্তমানে জাপানে যে সকল ভিসার মাধ্যমে যাওয়া যায়, তারমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিসা হলো SSW (নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী) ভিসা। কারণ এই ভিসার রেশীও বর্তমানে অনেক ভালো হওয়ার ফলে, এই ভিসার মাধ্যমে অনেক সহজে জাপান যাওয়া সম্ভব। তাছাড়া ভালো মানের কোন এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।
SSW ভিসার মাধ্যমে জাপান যাওয়ার উপায়
** বর্তমানে জাপানে যাওয়ার জন্য Specified Skilled Worker (SSW) বা নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী ভিসা একটি অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি জাপানে যাওয়ার ফলে আপনি জাপানি কর্মীর মতই সকল সুযোগ সুবিধা এবং বেতন পাবেন।
আর এই কারণে বেশিরভাগ মানুষ জাপানে যাওয়ার জন্য এই ভিসাটি বেচে নিয়ে থাকেন।
** কিন্তু Specified Skilled Worker (SSW) বা নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী ভিসায় জাপানে যাওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হয়। যেমন, জাপানি ভাষার দক্ষতা থাকাসহ স্কিল টেস্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
চলুন নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে আমরা জেনে নেই Specified Skilled Worker (SSW) বা নিদিষ্ট দক্ষ কর্মী ভিসা পাওয়ার জন্য কি যোগ্যতা প্রয়োজন হয়।
** এই ভিসা পাওয়ার জন্য মূলত প্রাথমিকভাবে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে। যেমন-আপনাকে অবশ্যই এসএসসি পাশ থাকতে হবে। আপনি যদি এসএসসি পাশ করে থাকেন তবে, যে কোন জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাপানি ভাষা শিক্ষা শুরু করতে হবে।
তবে জাপানি ভাষার লেবেন প্রয়োজন N4 বা জাপানি ফাউন্ডেশন ট্রেনিং। আপনি প্রাথমিকভাবে শুরু করতে পারেন N5 থেকে।
** আপনার জাপানি ভাষা শিক্ষার কাজ শেষ হয়ে গেলে আপনাকে পরীক্ষা দিতে হবে (JLPT) জাপানিজ ল্যাংগুয়েজ প্রোফেসনিক টেস্ট। আর এই পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে আপনি যে কাজের জন্য জাপানে যেতে চাচ্ছেন, সেই কাজের দক্ষতা
পরীক্ষা দিতে হবে এবং এই পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে, আপনি পেয়ে জাবেন আপনার কাঙ্খিত জাপানের ভিসা।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় জাপান যাওয়ার উপায়
জাপানে নামিদামি কোম্পানিতে চাকুরিসহ উচ্চ বেতন এবং সকল প্রকার সুযোগ- সুবিধা নিয়ে জাপানে বসবাস করার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো, সেখানের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। তাছাড়া জাপানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা তিন ধরণের হয়ে থাকে। নিম্নে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। চলুন দেখে নেওয়া যাক-
- কারিগরি প্রশিক্ষণার্থী ভিসা- এই ভিসার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ শেষ করার পর, পাওয়া যায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
- ইন্টারন্যাশনাল জব ভিসা- এই ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই দেশে আপনার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করা থাকতে হবে।
- কোম্পানির ভিসা- এই ভিসা পেতে পারেন আপনি জাপানে কোন কোম্পানিতে চাকুরি করার আবেদনের মাধ্যমে।
এছাড়াও জাপানে স্টুডেন্ট ভিসায় গিয়ে লেখা- পাড়া শেষ করার পর নির্দিষ্ট যে কোন একটি কাজের উপর বিশেষ দক্ষতা অর্জন করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়া যায়।
এটি মূলত একটি ইন্টারন্যাশনাল জব ভিসা। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই দক্ষতা থাকতে হবে জাপানি ভাষার এবং থাকতে হবে নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতা।
জাপানে টুরিস্ট ভিসা খরচ ২০২৪
জাপানে টুরিস্ট ভিসার খরচ অনেকটাই নির্ভর করে, ভ্রমণকারীর জীবন যাত্রার মানের উপর। কারণ আপনি যেমন খরচ করবেন, তেমন খরচ হবে। তবে সাধারণভাবে একজন ভ্রমনকারীর প্লেন ভাড়া, ১৫ দিনের হোটেল ভাড়া এবং খাওয়া খরচসহ প্রায় দুই লক্ষ টাকা থেকে তিন লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে। তাছাড়া এটি অনেকটাই এটি নির্ভর করে এজেন্সি বা দালালের উপর।
জাপানে ভিসার দাম। শেষকথা
আশাকরি আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই জেনে গেছেন "জাপানে কোন ভিসার দাম কত'' সহ ভিসার অন্যতথ্য সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য।
যা আমরা আর্টিকেলের মধ্যে ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি। আমরা আশাকরি যে, এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। বিশেষ করে যারা জাপানের ভিসা সম্পর্কে জানতে চান তাদের ক্ষেত্রে, এটি অনেক উপকারি।
আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url