ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডুমুরের উপকারিতা

আরো পড়ুনঃ কিসমিসের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

সকল রোগের জননী ডায়াবেটিস। এখন এই রোগটি কমন রোগে পরিণত হয়েছে। কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত কাউকে ছাড় দেয়না ডায়াবেটিস। তাছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করাও বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়ছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস গড়ে তোলা সম্ভাব হয়। তবে খাবারের ক্ষেত্রে শর্করা বিবেচনায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভাব।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে ডুমুরের রয়েছে কার্যকরী বিশেষ কিছু ক্ষমতা। ডুমুর তাজা কিংবা শুকনো উভয়ই প্রকার ডুমরই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারি। আর আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডুমুরের উপকারিতা'' সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই- 

আজকের পাঠ্যক্রম- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডুমুরের উপকারিতা

  • ডুমুরে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
  • তাজা এবং শুকনো ডুমুরের মধ্যে পার্থক্য
  • তাজা ডুমুরের উপাদান
  • শুকনো ডুমুরের উপাদান
  • ডায়াবেটিসের জন্য ডুমুর কেন উপকারি
  • কিভাবে ডুমুর ডায়াবেটিক ডায়াটে অন্তর্ভুক্ত করবেন
  • তাজা ডুমুর রেসিপি হিসাবে
  • শুকনো ডুমুর রেসিপি হিসাবে
  • ডুমুরের অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা
  • ডুমুর খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
  • ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা- শেষকথা

ডুমুরে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান 

ডুমুর হল তুত পরিবারভূক্ত এবং ফিকাস গাছের ফল। এটি বেশ পরিচিত এর মিষ্টি স্বাদ এবং অনন্য জমিনের জন্য। ডুমুর তাজা অথবা শুকনো উভয়ভাবেই খাওয়া যায় এবং এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে উভয় ফর্মেই। ডুমুরে বেশ কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। তার মধ্যে নিম্নে কয়েকটির নাম উল্লেখ করা হলো- 

ভিটামিন- ভিটামিন- এ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং ভিটামিন কে।

খনিজ পদার্থ- আইরন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়েম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ।

ফাইবার- যা হজমে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট- যা প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।

তাজা এবং শুকনো ডুমুরের মধ্যে পার্থক্য

তাজা এবং শুকনো উভয় প্রকার ডুমুরের রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্য উপকারিতা। তবে এই দুই প্রকার ডমুরের অল্প কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে চিনির ক্ষেত্রে এটি বেশি লক্ষ করা যায়। নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে আমরা শুকনো এবং তাজা ডুমুরের মধ্যে পার্থক্য দেখে নেই- 

তাজা ডুমুরের উপাদান

চিনির পরিমাণ- তাজা ডুমুরে শুকনো ডুমুরের তুলনায় চিনি পরিমাণ অনেক কম থাকে। সেই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে তাজা ডুমুর ভালো।

জলের পরিমাণ- তাজা ডুমুরে শকনো ডুমুরের তুলনায় অনেক বেশি পানি থাকে। তাই হাইড্রেট রাখার ক্ষেত্রে তাজা ডুমুর শুকনো ডুমুরের তুলনায় অনেক উপকারি।

শুকনো ডুমুরের উপাদান

চিনির পরিমাণ- ডুমুর শুকনোর কারণে এর ঘনত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় চিনির পরিমান। সেই কারণে ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে শুকনো ডুমুর উদ্বেগ জনক। তবে ডুমুরে থাকা অধিক ফাইবার সাহায্য করে এর প্রভাব প্রমশিত করতে।

ঘনিভূত পুষ্টি- শুকনো ডুমুরে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজসহ ডুমুরে থাকা সকল পুষ্টিকে কেন্দ্রীভূত বা ঘনিভূত করে।

ডায়াবেটিসের জন্য ডুমুর কেন উপকারি

ডুমুরে রয়েছে প্রাক্রিতিকভাবে বিভিন্ন ভিটামিন, ফাইবার, খনিজ উপাদান যা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেখে নেই, কেন ডুমুর ডায়াবেটিস রোগির জন্য উপকারি।

উচ্চ ফাইবার সামগ্রী- ডুমুরে রয়েছে উচ্চ পরিমণের ফাইবার সামগ্রী, যা ডায়াবেটিস রোগোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফাইবার সাহায্য করে রক্ত প্রবাহের ক্ষেত্রে চিনির শোষণকে করে ধীর গতিতে রাখতে। তাছাড়া ডায়াটরি ফাইবারে ডুমুর একটি চমৎকার উৎস। যা রক্তের শর্করার মাত্রাকে সাহায্য করে স্থিতিশীল রাখতে।

আরো পড়ুনঃ ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে উদ্বেগ জনক হল, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ। আর ডুমুরে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমুহ এই সকল সমস্যাগুলির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাছাড়া সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি ডায়াবেটিস সম্পর্কিত সমস্যা হ্রাস করতে সাহায্য করে।

গ্লাইসেমিক সূচক- গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমুহকে পরিমাপ করে, যে কোন খাবার কত দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি করতে পারে রক্তের শর্করার মাত্রা। ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য কম জিআইযুক্ত খাবার ভালো। কারণ তারা ধীরে বৃদ্ধি করে রক্তে শর্করার পরিমাণ। আর ডুমুরে থাকে অল্প বা মাঝারি জিআই, যা করে তোলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত বিকল্প।

কিভাবে ডুমুর ডায়াবেটিক ডায়াটে অন্তর্ভুক্ত করবেন

ডায়াবেটিক ডায়াটের ক্ষেত্রে নিম্নে বর্ণিত উপায়ে ডুমুরকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়-

তাজা ডুমুর রেসিপি হিসাবে

  • নাস্তা হিসাবে- তাজা ডুমুর একটি সবাস্থ্যকর স্ন্যাক অন্যতম বিকল্প হিসাবে উপভোগ করুন।
  • স্মুদিস হিসাবে- অধিক পরিমাণে ফাইবার এবং বেশি পুষ্টির কারণে তাজা ডুমুর স্মুদিতে মিশ্রিত করুন।
  • সালাদ হিসাবে- আপনার সালাদে মিষ্টি স্পর্শের কারণে যোগ করুন তাজা ডুমুর। এর সঙ্গে পাতাযুক্ত সবুজ শাক, হালকা ভিনাইগ্রেট কিংবা বাদাম জুড়িয়ে দিন।

শুকনো ডুমুর রেসিপি হিসাবে

  • বেকিং হিসাবে- প্রাক্রিতিক মিষ্টি হিসাবে পরিমানমত বেকড পণ্যতে ব্যবহার করুন শুকনো ডুমুর।
  • ওট্মিল হিসাবে- অতিরিক্ত পুস্টি এবং স্বাদের কারণে আপনার সকালের ওট্মিলে কাটা যোগ করুন শুকনো ডুমুর।
  • ট্রেল মিক্স হিসাবে- উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ ডায়াবেটিস বান্ধব হওয়ার জন্য ডুমুরের সঙ্গে যুক্ত করুন বাদাম এবং বীজ।

ডুমুরের অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

হার্ট স্বাস্থ্য ভালো রাখে- ডুমুর পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার, তাই সাহায্য করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং উচ্চ ফাইবার থাকার কারণে কোলেস্ট্রলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আর এই সকল কারণে ভালোরাখে হার্টের স্বাস্থ্য। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যারা রয়েছেন হ্রদ রোগের উচ্চ ঝুকিতে।

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে- ডুমুরে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তাই নিয়মিত ডুমুর খাওয়া উচিত বিভিন্ন হাড়কে মজুদ করার জন্য। ডায়াবটিস রোগীদের মধ্যে যারা অস্টিও পরোসিসের ঝুকিতে রয়েছেন, তাদের জন্য ডুমুর অন্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে- উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার ডুমুর, যা আপনাকে বেশিক্ষণ পেট পূর্ণ রাখতে সাহায্য করে, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার ক্ষেত্রে ডুমুর খুবই কার্যকর। বিশেষ করে ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য এটি অনেক কার্যকর।

ডুমুর খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা

ডুমুর যদিও অনেক উপকা্রি একটি ফল, তবুও নিয়ম মেনে খাওয়া জরুরি। কারণ যত উপকারি পদার্থ রয়েছে তার কিন্তু অপকারিতাও বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে ডুমুরও কিন্তু বিকল্প নয়, এরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই ডুমুর খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।

ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা- শেষকথা

পাঠক পাঠিকা আমরা আশাকরি, আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পুরোটাই পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই যেনে গেছেন "ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ডুমুরের উপকারিতা'' সহ এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে অনেক তথ্য। যা আমরা আর্টিকেলে ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি।
আশাকরি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭