শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে ঘরোয়া উপায়
আরো পড়ুনঃ শীতে উজ্জল ত্বক পেতে ঘরোয়া উপায়
গ্রীস্মের মৌসুমের দিনগুলো থাকে অনেক বড়। সেই সময় আমাদের ত্বককে সান ট্যানিং ও ড্যামেজ সহ্য করতে হয় অনেক। কিন্তু শীতের মৌসুমে শুস্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বক হয়ে যায় শুস্ক এবং রুক্ষ। তাই শীতের শুস্কতা এবং রুক্ষতার হাত থেকে বাচতে আমাদের ত্বকের কোমলতা ও উজ্জলতা ধরে রাখতে বাড়তি কিছু যত্ন নেওয়া জরুরি।
আর এই জন্য আমরা শীতের মৌসুমে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বাড়তি যত্ন হিসাবে লোশন বা ক্রীম ব্যবহার করি। কিন্তু এই সকল প্রাসাধনি ছাড়াও আমরা প্রাকৃতিক উপায়ে খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে তৈরি প্যাক ব্যবহার করতে পারি। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে ঘরোয়া উপায়'' সম্পর্কে। চলুন দেখে নেই-
আজকের পাঠ্যক্রম- শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে ঘরোয়া উপায়
- শীতে কি সমস্যা দেখা দেয় ত্বকে
- শীতে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে
- শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে ঘরোয়া উপায়
- নির্বাচন করুন ভারি একটি ক্লিনজার
- ত্বক পরিস্কার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
- ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে এক্সফোলিয়েট
- একটি ভালোমানের সানস্ক্রিম ব্যবহার করুন
- ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে ব্যবহার করুন বডি বাটার
- শীতে ত্বক কোমল ও উজ্জল রাখতে কলার ৫ ফেস প্যাক
- কলা এবং মধুর ফেস প্যাক
- কলা ও লেবুর রসের ফেস প্যাক
- কলা এবং সাদা মাখনের ফেস প্যাক
- কলা এবং টক দইয়ের ফেস প্যাক
- কলা এবং ভিটামিন "ই" ক্যাপসুলের ফেস প্যাক
- শীতে উজ্জল ত্বকের জন্য ঘরোয়া প্যাক- শেষকথা
শীতে কি সমস্যা দেখা দেয় ত্বকে
শীতে শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগ- জীবাণু প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকেও দেখা দেয় সমস্যা। কারণ এই সময় ত্বক থাকে সংবেদনশীল। ফলে ত্বকে জীবাণু প্রবেশে বাধা দেয় মূলক রোগ। এই সময় দেখা দেয় শ্বাসতন্ত্রের রোগ। আর এই সকল কারণে শীতের মৌসুমে আশংকা বেড়ে যায় ত্বকের বিভিন্ন প্রকারের রোগ ব্যাধির। তাই শীতের শুরুতেই এই সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
শীতে যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে
- শীতে পরিবেশের আদ্রতা ও জলীয় বাস্পের পরিমাণ কম থাকায়, ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক এবং খসখসে।
- ঠোঁট ও পায়ের চামড়া ফেটে যায়, চামড়া উঠে যায় হাতের, চুলকানি এবং খুসকির সমস্যা বেড়ে যায়।
- হাইপো থাইর্যেডিজম, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যসহ জন্মগত জাদের চামড়ার রোগ থাকে তাদের তীব্রতা বেশি হয় ড্রাইনেসের।
- তাছাড়াও অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে লাল হয়ে যায় এবং ফুলে যায় হাত ও পায়ের নোখ, একে বলা হয় রেনড ফেনোমেনং।
শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে ঘরোয়া উপায়
শীতে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে ত্বক উজ্জল, প্রণবন্ত এবং বজায় রাখা সম্ভাব তারুণ্য। শীতের মৌসুমে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে, কিন্তু নিস্প্রাণ হয়ে যায় ত্বক। শীতের কারণে অনেকের ত্বকে দেখা দেয় কিছুটা কালো ছাপ। কিন্তু আমাদের সকলের চাওয়া সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জল ত্বক। তাই প্রয়োজন পড়ে ত্বকের বাড়তি যত্ন নেওয়া। চলুন দেখে নেই শীতে ত্বকের উজ্জলতা বাড়ানোর উপায়-
নির্বাচন করুন ভারি একটি ক্লিনজার
ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন করা প্রয়োজন ত্বকের যত্নেরও। কারণ আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয় আমাদের শরীরের আর্দ্রতা। তাছাড়া আমরা যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি শরীরে ও ত্বকে, তার আর্দ্রতারও পরিবর্তন হয়।
গ্রীস্মের মৌসুমে হালকা জেলভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার আমরা ব্যবহার করে থাকি, কিন্তু শীতের মৌসুমে আমাদের এমন এক ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, যাতে থাকবে ভিটামিন "ই" সহ হায়ালুরোনিক এসিডের মতো উপাদান। এর জন্য আপনি বেঁচে নিতে পারেন, নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্ট্রর অয়েল বাটারমিল্ক কিংবা বেঁচে নিতে পারেন শসার কতো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার।
ত্বক পরিস্কার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
ত্বককে পরিস্কার করা নারী পুরুষ সকলের জন্য নিঃসন্দেহে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে শীতের শুরুতেই ত্বক সবচেয়ে বেশি শুষ্ক হয়, তাই শুরুতেই আপনার প্রয়োজন ভালোমানের একটি ক্লিনজার ব্যবহার করা। তাছাড়া শীতের মৌসুমে ত্বকের উজ্জলতা ঠিক রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ময়েশ্চারাইজিং ব্যবহার।
কারণ ময়েশ্চারাইজার সাহায্য করে আপনার ত্বককে হাইড্রেট রাখতে। তাছাড়া ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল। শীত মৌসুমে বাতাসের আর্দ্রতা অনেক কম থাকায় শুকিয়ে যায় আমাদের ত্বক। তাই আপনার ত্বকের এই পরিস্থিতিতে ময়েশ্চারাইজার করতে এবং অতিরিক্ত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে ব্যবহার করুন হাইড্রেটিং ক্লিনজার।
ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে এক্সফোলিয়েট
এক্সফোলিয়েট হলো আপনার ত্বকের বাইরের আবরণ থেকে ত্বকের মৃত কোষ অপসারণের প্রক্রিয়া। ময়লার স্তর অপসারণ করে এক্সফোলিয়েট, যা সাহায্য করে ত্বককে উজ্জল এবং ত্বকে ব্যবহৃত পণ্যগুলো প্রবেশ করতে সাহায্য করে ত্বকের গভীরে। আর এটি যদি সঠিকভাবে না করা হয়, তবে ক্ষতি করতে পারে।
এক্সফোলিয়েট যদি আপনি করতে চান, তবে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ হলো নিরাপদ পদ্ধতি অনুসরণ করা। কারণ এটি যেন কোনভাবেই ক্ষতি না করে আপনার ত্বকের। এক্সফোলিয়েট ব্রণ এবং ত্বকের লালভাব দূর করতে সাহায্য করে।
একটি ভালোমানের সানস্ক্রিম ব্যবহার করুন
শীতের মৌসুমে আবহাওয়া থাকে কুয়াডাচ্ছন্ন এবং নাও দেখা যেতে পারে সূর্য। তা সত্ত্বেও ব্যবহার করুন নিয়মিত সানস্ক্রিম। কারণ শীতের মৌসুমেও আপনার ত্বক খতিগ্রস্ত হতে পারে সূর্যের রশ্মিতে। যা ত্বকে সানস্পট, পিগমেন্টশনসহ ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্য হতে পারে। তাই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ব্যবহার করুন সানস্ক্রিম, যা মেকাপের সঙ্গে আপনার সৌন্দর্যে সুরক্ষা দেবে।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটির উপকারিতা
ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে ব্যবহার করুন বডি বাটার
ত্বক যদি আপনার সুপার ড্রাই হয় কিছুক্ষণ পর পর করতে হয় ময়েশ্চারাইজার, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হলো বডি বাটার। কেননা ত্বকে প্রোটেক্টিভ লেয়ার হিসাবে বডি বাটার কাজ করে থাকে। আপনার ত্বককে দিনভর ময়েশ্চারাইজাড, সফট এবং ডিউয়ি করে রাখবে। এটি শুধু আপনার ত্বকের উপরিভাগ নয়, পৌঁছে দিবে ত্বকের ডিপ লেয়ার পর্যন্ত। যা ময়েশ্চার দীর্ঘ সময় লক রাখে।
শীতে ত্বক কোমল ও উজ্জল রাখতে কলার ৫ ফেস প্যাক
শীতের মৌসুমে ত্বকের কমলতা ও আর্দ্রতা বজায় রাখতে আমরা অনেক ধরণে পণ্য যেমন লোশন, ক্রিম ইত্যাদি ব্যবহার করি। কিন্তু যদি এটি প্রাকৃতিকভাবে করা যায়, তবে কেমন হয়? হ্যা আপনি চাইলেই ত্বকের কোমলতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ত্বক উজ্জল করে তুলতে পারবেন, সহজলোভ্য একটি প্রাকৃতিক উপাদান কলা ব্যবহার করার মাধ্যমে।
নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেখে নেই, শীতে ত্বক কোমল ও উজ্জল রাখতে কলার ৫ ফেস প্যাক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-
কলা এবং মধুর ফেস প্যাক
আপনার ত্বক ময়েশ্চারাইজড করবে এই ফেস প্যাকটি এবং ত্বকে কমিয়ে দিবে শীতের ফলে তৈরি এজিং ইফেক্টগুলো। কারণ কলায় রয়েছে ভিটামিন "ই", যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং উজ্জল করে তোলে। এই ফেস প্যাকটি তৈরি এবং ব্যবহার করুন নিম্নের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী-
- পাকা কলা ১ টি।
- মধু ১ টেবিল চামচ।
- অলিভ অয়েল ১ টেবিল চামচ।
কলা ছোট ছোট করে কেটে পেস্ট তৈরি করার জন্য মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যাশ করুন। মসৃণ হয়ে গেলে এর সঙ্গে লেবুর রস এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ তৈরি করে আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে, নরমাল পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
কলা ও লেবুর রসের ফেস প্যাক
এই ফেস প্যাকটি তৈরি এবং ব্যবহার করুন নিম্নের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী-
- পাকা কলা ১টি।
- লেবুর রস ১ টেবিল চামচ।
কলা ছোট ছোট করে কেটে পেস্ট তৈরি করার জন্য মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যাশ করুন। মসৃণ হয়ে গেলে এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে মিশ্রণ বানিয়ে আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। ১০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
কলা এবং সাদা মাখনের ফেস প্যাক
এই ফেস প্যাকটি তৈরি এবং ব্যবহার করুন নিম্নের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী-
- পাকা কলা ১ টি।
- সাদা মাখন ২ টেবিল চামচ।
কলাটি ম্যাশ করে সুন্দরভাবে তৈরি করুন স্মুথ একটি পেস্ট। এবার এর সঙ্গে মাখন মিশিয়ে দুটিকে স্মুথ বানান। এর সঙ্গে যুক্ত করুন বাটার, তবে বাটার না থাকলে ব্যবহার করুন ফুল ফ্যাট মিল্ক। এবার সব উপকরণ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। এই প্যাকটি বেশি হাইড্রেট হবে, ড্রাই স্কিনের জন্য। ত্বকে ১৫ মিনিট রাখার পর নরমাল পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
কলা এবং টক দইয়ের ফেস প্যাক
কলা এবং টক দইয়ের ফেস প্যাকটি ত্বক হাইড্রেট করার পাশাপাশি আপনার ত্বককে সাহায্য করবে সান ট্যানিং দূর করতে। এই ফেস প্যাকটি তৈরি এবং ব্যবহার করুন নিম্নের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী-
- পাকা কলা ১টি।
- টক দই ২ টেবিল চামচ।
পাকা কলা এবং টক দই, দুটি একসঙ্গে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন। যতক্ষণ পর্যন্ত স্মুথ নাহয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ব্লেন্ড করতে থাকুন এবং একটি স্মুথ পেস্ট তৈরি করুন। এবার আপনার তৈরি করা পেস্ট ব্যব্যহার করুন পুরো ত্বকে, ১৫ মিনিটের মত রেখে শুকিয়ে গেলে নরমাল পানি দিয়ে পরিস্কার করুন।
কলা এবং ভিটামিন "ই" ক্যাপসুলের ফেস প্যাক
- পাকা কলা ১ টি।
- মধু ১ টেবিল চামচ।
- ভিটামিন "ই" ক্যাপসুন ১ টি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url