আরো পড়ুনঃ কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ ২০২৪
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনজেনভূক্ত এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী দেশ জার্মানি। জার্মানিতে প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ শিক্ষা, ভ্রমন কিংবা কাজের জন্য গমন করেন। আর এইজন্য প্রয়োজন পড়ে উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসার। বর্তমানে জার্মানিতে ভিসার সকল কার্যক্রম অনলাইনের মাধ্যমে সম্পাদন করা যায়।
তবে অনলাইনে ভিসার আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনার যদি জটিলতা মনে হয়, তবে সরাসরি ভিসা অফিসের মাধ্যমে আবাদন করা যায়। আর প্রতিনিয়ত সেই দেশের সরকার শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেন সরকারি এবং বেসরকারি ভিবিন্নভাবে। জার্মানিতে চাকুরি পাওয়ার জন্য আপনি যদি চাকুরির সারকুলার অনুযায়ী আবেদন করেন, তবে ভিসা পাওয়া অনেক সহজ হবে।
আর আপনি যদি জার্মানির ভিসা ও চাকুরি সম্পর্কে জানতে চান, তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে। কারণ আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ''জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪'' ও সেই দেশের ভিসার সকল প্রকার তথ্য। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪
- জার্মানিতে ভিসা আবেদন ২০২৪
- জার্মানিতে ভিসা আবেদনে যে কাগজ লাগে
- জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪
- জার্মানিতে ভিসা খরচ ২০২৪
- জার্মানি যাওয়ার জন্য খরচ ২০২৪
- জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন ২০২৪
- জার্মানি ভিসা আবেদন ২০২৪। শেষকথা
জার্মানিতে ভিসা আবেদন ২০২৪
জার্মানিতে বর্তমানে ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন। তবে জার্মানির ভাষার উপর আপনার দক্ষতা আছে এমন সার্টিফিকেটসহ এবং চাকুরীর নিয়োগপত্র সহ আবেদন করলে খুব সহজে ভিসা পাওয়া যায়। আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে জার্মানি ভিসার আবেদন করতে চান, তবে আপনাকে প্রথমেই ভিজিট করতে হবে সেই দেশের ভিসা অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
এরপর আপনাকে উক্ত ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করতে হবে আবেদন ফরম। আবেদন ফরমটি ডাউনলোড এবং প্রিন্ট করে সঠিক উপায়ে পূরণ করার মাধ্যমে এটি জমা দিতে হবে ভিসা অফিসে। আপনাকে সাবধানতার সঙ্গে সকল প্রকার ডকুমেন্ট বা কাগজ পত্র সমূহসহ কিন্তু জমা দিতে অফিসে। তবেই আপনার আবেদন গ্রহন করা হবে।
জার্মানিতে ভিসা আবেদনে যে কাগজ লাগে
জার্মানি বা যে কোন দেশের ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে আপনার ভিসা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে ডকুমেন্ট বা কাগজ পত্র প্রয়োজন পড়ে। আপনি যদি সঠিক ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র জমাদানের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করেন, তবে আপনার ভিসা পেতে ৭ (সাত) থেকে ১৫ (পনেরো) কর্ম দিবসের মতো সময় লাগবে ভিসা পেতে।
আর যদি আপনার ডকুমেন্ট বা কাগজ পত্রের সমস্যা হয়, তা পুনোরায় সঠিকভাবে জমা দিলে সেক্ষেত্রে আপনার ভিসা পাওয়া জন্য প্রায় ২২ দিন থেকে ১ মাসের মতো সময় লাগবে। আমরা নিম্নে দেখে নেই যে সকল কাগজ বা ডকুমেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য সাধারণত জমা দিতে হয়-
- কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি বাংলাদেশী বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের সনদ পত্র।
- আপনার জমা দেওয়া ভিসা আবেদনের পূরণকরা ফরম।
- কমপক্ষে ৩ মাস ব্যাংক লেনদেন করার প্রমাণ পত্র।
- ড্রাইভিং ভিসার ক্ষেত্রে আপনার ড্রাইভিং সনদপত্র।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি রঙ্গিন ছবি।
- মেডিকেল ফিটনেসের সার্টিফিকেট।
- পুলিশের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সেনজেনভূক্ত অন্যতম শক্তিশালি দেশ জার্মানি। এই দেশে প্রবাসিদের কজের জন্য প্রচুর সুযোগ- সুবিধা রয়েছে। তাছাড়া ইউরোপের এই দেশে কাজের বেতন তুলুনামূলক অনেক বেশির সঙ্গে সঙ্গে অনেক উন্নত জার্মানির জীবন যাত্রার মান। আর এই সকল সুযোগ- সুবিধার কারণে প্রবাসীরা ইউরোপের দেশ জার্মানিতে যেতে অনেক আগ্রহী।
আর জার্মানিতে কাজের জন্য যাওয়ার আগে আপনার যানা প্রয়োজন কাজের ভিসা সম্পর্কে সকল তথ্য। তাছাড়া আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে জার্মানিতে পাড়ি জমাতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে, সেই দেশে কোন কাজের চাহিদা বেশী এবং বেতন সম্পর্কে। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে শেয়ার করছি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার বিস্তারিত সকল তথ্য।
জার্মানিতে ভিসা খরচ ২০২৪
শধু ইউরোপের দেশ জার্মানি নয়, বিশ্বের যে কোন দেশের ভিসার খরচ নির্ভর করে, আপনি কোন ভিসার মাধ্যমে সেই দেশে পাড়ি দিতে চান, সেই ভিসা ক্যাটাগরির উপর। তাছাড়া জার্মানিতে কাজের বেতন ও দেশটি উন্নত হওয়ার কারণে, জার্মানি ভিসার খরচ কিছুটা বেশি। আমরা নিম্নের আলোচনা থেকে দেখে নিব, কোন ভিসার খরচ কত সে সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখি-
- জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকার মতো।
- জার্মানিতে কোম্পানির ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার মতো।
- জার্মানিতে ড্রাইভিং ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার মতো।
- জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মতো।
- জার্মানিতে টুরিস্ট ভিসা পাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার মতো।
জার্মানি যাওয়ার জন্য খরচ ২০২৪
বর্তমানে জার্মানিতে আপনি চাইলে সরকারি বা বেসরকারি উভয়ভাবে যেতে পারবেন। সরকারিভাবে প্রায় ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাঁকা এবং দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাঁকা লাগে। তবে আপনার ভিসার ধরণ, কাগজ পত্র তৈরি, বিমানের ধরণ এবং এজেন্সি বা দালালের উপর নির্ভর করে জার্মানিতে যেতে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাঁকা খরচ হয়।
জার্মানিতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
পৃথিবীর অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ জার্মানি। অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার। তবে জার্মানিতে কয়েক প্রকার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রয়েছে। আর এই ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হয়, আপনার যোগ্যতা এবং কাজের দখতার উপর নির্ভর করে। কাজের জন্য বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যাওয়ার একমাত্র ভিসা হলো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।
তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কিন্তু সেনজেন ভিসা নয়। এটিকে জার্মানির জাতীয় ভিসা হিসাবে পরিচিত। আর এই ভিসা আবেদন করার জন্য আপনার প্রয়োজন লাগবে চাকুরীর অফার লেটার। দুইভাবে জার্মানিতে কাজের বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করা যায়। আপনি চাইলে সরকারি কিংবা এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রয়োসিং করতে পারবেন।
আপনি যদি সারকারিভাবে বা নিজে নিজে ভিসা প্রসেসিং করার পূর্বেই সংগ্রহ করতে হবে ওয়ার্ক মারমিট এবং সম্পূর্ণ করতে হবে আবেদনের সকল কাজ। আর এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করার জন্য সকল প্রকার ডকুমেন্ট বা কাগজ পত্র সংগ্রহ এজেন্সি বা দালালের কাছে জমা দিতে হবে।
আর আপনার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ভিসার টাঁকা এজেন্সি বা দালালকে জমা দিয়ে সম্পূর্ণ করতে হবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার কাজ। তবে আপনি সবসময় চেস্টা করবেন, পরিচিত এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করার। নিম্নের আলোচনার মাধ্যমে দেখে নেওয়া যাক ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য যা যা ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়।
- সকল একাডেমিক সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
- মেডিকেল ফিটনেসের সার্টিফিকেটের।
- জার্মানির ভাষা জানার প্রমাণ পত্র।
- কাজের এক্সপেরিয়েন্স সনদ পত্র।
- পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
- চাকুরীর ওফারের লেটার।
- ব্যাংক লেনদেনের প্রমাণ।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ।
- দক্ষতার সনদ পত্র।
- বৈধ পাসপোর্ট।
- স্বাস্থ্য বীমা ও
- বায়োডাটা।
জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি
স্বপ্নের এই ইউরোপের দেশটিতে যাওয়ার আগে আপনাকে জানতে হবে, সেখানে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে যাওয়া প্রবাসীরা বেশী কাজ করে থাকেন, বিভিন্ন দক্ষতা ভিত্তিক কাজ। তবে জার্মানিতে বিভিন্ন ধরণের কাজের জন্য লোক নিয়ে থাকেন। আর সেখানে বাংলাদেশি প্রবাসিরা নিম্নের কাজগুলো বেশি করে থাকেন।
- ফুট ডেলিভ্যারি ম্যান।
- কনস্ট্রাকশন শ্রমিক।
- ফ্যাক্টরী ওয়ার্কার।
- সিকিউরিটি গার্ড।
- ইলেকট্রিশিয়ান।
- হাউস কিপিং।
- ফুড সার্ভিস।
- হোটেল বয়।
- মেকানিক।
- ড্রাইভার।
- প্লাম্বার।
- ক্লিনার।
- ডাক্তার।
- নার্স।
জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন ২০২৪
অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ জার্মানি সরকার সেদেশের সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাছাড়া ইউরোপের প্রতিটি দেশে কাজের সময় নির্ধারণ করা আছে। যেখানে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে বেসিক ডিউটি বা কাজ করতে হবে ৪০ ঘন্টা। আর ইউরোপের এই দেশটিতে কাজের বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি ঘন্টায় সর্বনিম্ন ১২.৪১ ইউরো।
যা বাংলাদেশি টাকায় এসে দাড়ায় ১৪৫০ (এক হাজার চারশত পঞ্চাশ) টাকা। তবে জার্মানিতে বর্তমানে কাজের মাসিক বেতন কমপক্ষে ২৪০০০০ (দুইলখ চল্লিশ হাজার) টাঁকা। এই দেশে আপনি যে কোন কাজ করলে কমপক্ষে এই পরিমাণ টাঁকা প্রতিমাসে পাবেন। আর জার্মানির নাগরিকের মাসিক গড় আয় প্রায় ৪ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
জার্মানি ভিসা আবেদন ২০২৪। শেষকথা
আশাকরি আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয় "জার্মানিতে কাজের ভিসা ২০২৪'' ও জার্মানি ভিসা আবেদন ২০২৪ সহ জার্মানিতে ভিসার সকল প্রকার তথ্য যেনে গেছেন। যা আমরা ইতিপূর্বেই আপনাদের সঙ্গে বিস্তারিতভাবে শেয়ার করেছি।
আমরা আশাকরি এটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। বিশেষ করে যারা জার্মানিতে যেতে ইচ্ছুক, তাদের ক্ষেত্রে। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তবে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url