উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনের স্কলারশিপ
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবে কোম্পানি ভিসা খরচ ২০২৪
জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীন দেশে যাও, বিশ্ব নবীর এই হাদিসটা আমাদের প্রায় সকলের যানা। বিশ্ব নবী হজরত মোহাম্মাদ (সঃ) এর এই হাদিস থেকে খুব সহজেই বুঝা যায় যে, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় এই দেশটি জ্ঞান চর্চার জন্য শত শত বছর আগে থেকেই এগিয়ে রয়েছে। পাহাড়- পর্বত থেকে শুরু করে সমুদ্র- নদী, মরুভূমি- তৃণভূমি সব কিছুর সমন্বয়ে গঠিত চীন।
ইংল্যান্ড এবং আমেরিকার পর মহা প্রাচীরের দেশ চীনে লেখাপড়ার জন্য সবচেয়ে বেশি পাড়ি জমায় মানুষ, প্রাচ্যের এই দেশে। কয়েক বছর আগের এক হিসাব অনুযায়ী সারা পৃথিবী থেকে শিক্ষার জন্য এই দেশে এসেছেন ৪,৪০,০০০ শিক্ষার্থী। বর্তমান সময়ে চীনের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে অনেকটাই সুনাম অর্জন করেছে।
আর এইগুলো সম্ভাব হয়েছে সেদেশের সরকারের উদার নীতির কারণে। ফলশ্রুতিতে চীনে দিন দিন বেড়েই চলছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনের স্কলারশিপ'' সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক এই সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য-
আজকের পাঠ্যক্রম- উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনের স্কলারশিপ
- উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনে যে কারণে যাবেন
- চীনে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে নুন্যতম যোগ্যতা
- চীনে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোর্স নির্বাচন
- চীনে আপনি কোন ভাষায় পড়তে চান
- চীনে উচ্চ শিক্ষার জন্য ডকুমেন্ট সত্যায়ন
- ভর্তির আবেদনের জন্য সময়সীমা
- ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
- চীনে পড়াশোনার জন্য প্রতিবছর খরচ
- চীনে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ
- উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
- চীনে ভিসা আবেদনের ডকুমেন্ট চেকলিস্ট
- চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন ব্যবস্থা
- চীনে চলাচলের জন্য যানবাহন ব্যয়
- চীনে পার্ট টাইমের চাকুরীর সুযোগ
- উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনের স্কলারশিপ। শেষকথা
উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনে যে কারণে যাবেন
মান্দারিন ভাষার দেশ চীন এবং এদেশের মুদ্রার নাম ইউয়েন। আয়তন আর জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশটির রাজধানীর নাম বেইজিং। উৎপাদন থেকে শুরু করে কৃষি কিংবা শিল্প সব ক্ষেত্রেই দেশটি রয়েছে একনম্বারে। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশ্বমানের ল্যাব, খেলাধুলা এমনকি গবেষণাগার, কি নেই এই দেশে।
তাছাড়া প্রযুক্তির দিক থেকে চীন রয়েছে উচ্চ শিখরে, তাই চীনে পড়াশুনা করলে দৃষ্টিসীমা প্রসারিত হবে বিশ্বের প্রযুক্তি সম্পর্কে। দিন দিন ব্যবসার পথ অনেকটাই প্রসারিত হলেও এইদেশে ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে চাকুরীর বাজার। তাই অবারিত দ্বার আর নিজের উচ্চ স্বপ্ন পূরণের জন্য আপনারও হয়তো প্রসারিত হবে দৃষ্টিসীমা।
চীনে উচ্চ শিক্ষার জন্য যেতে নুন্যতম যোগ্যতা
আমেরিকা বা ইউরোপের মতো শিক্ষার জন্য চীনে GMAT/SAT/GRE/ACT অথবা নিদেন পক্ষে TOEFL/IELTS জাতীয় কোন প্রকারের পরীক্ষায় অংশ নিতে হবেনা। কিন্তু পাস মার্ক যেহেতু চীনে ৬০%, সেহেতু একাডেমিক পরীক্ষায় আপনার যদি ৬০% এর উপর মার্ক থাকে, তাহলে আপনি আবেদন করতে পারবেন চীনের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আবার আপনার যদি মার্ক ৮০% থাকে তাহলে আপনি সুবিধা পাবেন স্কলারশিপের। আর HSC তে যদি ৪.৪৩ পয়েন্ট থাকে তাহলে আপনি আবেদন করতে পারবেন ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য। আবার ব্যাচেলরে আপনি আবেদন করতে পারবেন যদি আপনার SSC ও HSC দুটির গড় পয়েন্ট ৮.০ থাকে, মাস্টার্স এ আবেদন করতে আপনার ৩.২০ পয়েন্ট থাকতে হবে।
আর আপনি যদি চীনে পিএইচডি প্রগ্রামে ভর্তির জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে আপনার থাকতে হবে ৩.৪০ পয়েন্ট এবং সঙ্গে পাবলিশড রিসার্চ পেপার থাকতে হবে। তবে চীনে বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তির যোগ্যতা অনেক সময় পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই আপনাকে দেখে নিতে হবে সেদেশের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মূলত আপনার কাছে কি চাচ্ছে।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোর্স নির্বাচন
দুইটি সেমিস্টারের মাধ্যমে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরণের কোর্সের অফার করে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। আপনি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা, গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স, জেনারেল স্ক্লার, সিনিয়র স্কলার কিংবা পিএইচডিসহ যেতে পারেন যে কোন প্রোগ্রামে। চীনে অবস্থিত ১১০০ এর অধিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় সমুহে বিভিন্ন প্রোগ্রামের অধিনে অফার করে থাকে বিভিন্ন কোর্সের।
কিন্তু এখানে কিছু সমস্যা রয়েছে, কারণ চীনের সব বিসববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দেয়না ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের। আবার অনেক দামী দামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়না বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের। তাই বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য আবেদন করার সময় অবশ্যই জেনে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে।
সেই দেশে পড়াশুনা করানো হয়, মেডিকেল ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, প্রকৌশল, বিজনেস ও ম্যানেজমেন্টস, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে। বিশেষ করে চীনে উন্নত শিক্ষা প্রদান করা হয় প্রকৌশল বিজ্ঞান শাখায়। তবে চীনে পড়াশুনার জন্য বর্তমানে সুযোগ সুবিধা বেশি দেওয়া হচ্ছে মেডিকেল ও স্বাস্থ্য বিষয়ে। চীনের রেজিস্ট্রার্ড যে কোন ্মেডিকেল থেকে পড়াশুনা শেষ করে প্যাকটিস করতে পারবেন বাংলাদেশে।
তবে এর জন্য আপনাকে শুধু সংগ্রহ করতে হবে সম্মতি পত্র মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে। তবে যাইহোক চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে তুলেছে এখন অনেক উন্নত ও বিশ্বমানের করে। যা শিক্ষা প্রদান করে আসছে উন্নত মানের। নিম্নে চীনে নামকরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হলো-
- Fudan University.
- Peking University.
- Tsinghua University.
- University of Science and Technology of China.
- Zhejiang University.
চীনে আপনি কোন ভাষায় পড়তে চান
চীনে উচ্চ শিক্ষার জন্য ডকুমেন্ট সত্যায়ন
ভর্তির আবেদনের জন্য সময়সীমা
ভর্তির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
- নোটারাইজড করা একাডমিক সকল মার্কশীট ও সার্টিফিকেট।
- নোটারাইজড করা পাসপোর্টের কপি এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি ১কপি ব্যাক গ্রাউন্ডের।
- ২টি রিকমেন্ডেশন লেটার ও Study Plan (অধ্যাপক ব সহকারি অধ্যাপকের)।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট।
- জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম সনদ এবং বায়োডাটা।
চীনে পড়াশোনার জন্য প্রতিবছর খরচ
চীনে পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ
- Chinese Government Scholarship.
- Local Government Scholarship/ Provincial Scholarship.
- Presidential/ University Scholarship.
- Confucius Institute Scholarship.
- Enterprise Scholarship.
উচ্চ শিক্ষার জন্য চীনে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
চীনের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আপনার আবেদন পত্র গ্রহন করে, তাহলে তারা আপনাকে JW202 প্রদান করবে, যা সিলযুক্ত থাকবে চীনা শিক্ষা মন্ত্রানালয়ের। আর এই JW202 একান্ত প্রয়োজন ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে। আর সকল ডকুমেন্টসহ ভিসা আবেদনের জন্য যেতে হবে বাংলাদেশে থাকা চীনা এম্বাসীতে।
চীনে ভিসা আবেদনের ডকুমেন্ট চেকলিস্ট
চীনে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভিসা আবেদন করতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের তালিকা নিম্নে আলোচনা করা হলো-
- Admission Letter এবং JW 202 যা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্যুকৃত।
- আর্থিক সবচ্ছলতা প্রমাণের ডকুমেন্ট এবং ব্যাংক স্টেট্মেন্ট।
- নোটারাইজড করা সকল ডকুমেন্টস, সনদ ও মার্কশিট।
- রেফারেন্স লেটার বা রিকমেন্ডেশন।
- স্কপ্লারশিপের পেপার (যদি থাকে)।
- IELTS এর সনদ (যদি থাকে)।
- পাসপোর্ট এবং ফটোগ্রাফ।
- মেডিকেল রিপোর্ট।
চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন ব্যবস্থা
চীনে চলাচলের জন্য যানবাহন ব্যয়
- আপনার যদি স্টুডেন্ট পাস থাকে তবে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে প্রতিমাসে খরচ হবে প্রায় ১৩০০ টাকা।
- সিটি বাস- প্রায় ২৫ টাকা।
- ট্যাক্সি - প্রায় ৩০ টাকা।
- মেট্রো- প্রায় ৪০ টাকা।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url