নান্দনিক হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ

আরো পড়ুনঃ স্বপ্নের সেই গোলাপ গ্রাম ঘুরে আসুন

বাংলাদেশে এমন কিছু প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে যা দেখে খুব সহজেই সকলের মন ভরে যায়। এমনি এক ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুর হাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় অবস্থিত প্রায় সত্তর বছরের "নান্দনিক হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ"।

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো মুঘল স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে চিনামাটি, কাচের টুকরা, দেওয়াল বিভিন্ন নকশায় নির্মিত মসজিদ সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক মসজিদের সকল তথ্য- 

আজকের পাঠ্যক্রম- নান্দনিক হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ

  • হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ কোথায় অবস্থিত
  • হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের ইতিহাস
  • হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের নির্মাণশৈলী
  • হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদটি এলাকার গর্ব
  • কিভাবে যাবেন হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ
  • কোথায় থাকবেন হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ
  • শেষকথা

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ কোথায় অবস্থিত

নান্দনিক হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদটি বাংলাদেশের উত্তরের জেলা জয়পুর হাটের ক্ষেতলাল উপজেলাধীন হিন্দা নামক গ্রামে এটি অবস্থিত। মসজিদটি জয়পুর হাট জেলা সদর হতে মাত্র ১৫ (পনেরো) কলোমিটার দূরে অবস্থিত। 

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের ইতিহাস

বাগমারি পীর হিসাবে এলাকায় বহুল পরিচিত চিশতীয় তরিকার অনুসারী অন্যতম পীরে কেবলা হযরত আব্দুল গফুর চিশতী (রহ) নির্দেশে বাংলা ১৩৬৫ সালে আব্দুল খালেক চিশতীর আমলে এবং সরাসরি তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় নান্দনিক এই মসজিদ। এই মসজিদটির নকশা তৈরী করেন হযরত আব্দুল কাদের নিজেই এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের নির্মাণশৈলী

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর অবকাঠামো। কারণ এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে ইসলামিক প্রাচীন স্থাপত্য নির্মাণশৈলী বা মুঘল আমলের নির্মাণশৈলীর অনুকরণে। তবে মুঘল আমলের বেশিরভাগ নির্মাণশৈলীতে দেখা পাওয়া যায়, পোড়া মাটির আস্তরন থাকে মসজিদের বাইরের দেওয়ালে।

কিন্তু এই মসজিদের নির্মাণশৈলীতে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদের ক্ষেত্রে পোড়ামাটি ও কাচের টুকরার সমন্বয়ে মসজিদের বাইরের দেওয়ালের আস্তরণে বিভিন্ন নকশা পরিলক্ষিত হয়। আর এই মসজিদের বাইরের দেওয়ালের আস্তরনে সূর্যের আলো পড়লেই ঝলমলে রূপ নেয়। যা খুব সহজেই যে কাউকে এর নজর কাড়া রূপে মগ্ধ করে তোলে।

মসজিদটির কক্ষ ৪৯.৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ২২.৫ ফুট প্রস্ত। ইসলাম ধর্মের প্রধান পাঁচটি স্তম্ভের কথা চিন্তা করে মসজিদের উপরে নির্মাণ করার হয়েছে পাঁচটি গম্বুজ। পাঁচটি গম্বুজের মধ্যে মাঝখানে থাকা গম্বুজটি চারিপাশে থাকা চারটি গম্বুজের তুলনায় অনেটাই বড়। মসজিদের উত্তর দিকে রয়েছে চল্লিশ ফুট লম্বা একটি মিনার।

আরো পড়ুনঃ একদিনের ছুটিতে ঘুরে আসুন নারায়ণগঞ্জের মনোমুগ্ধকর আটস্থান

মিনারের উপরে স্থাপন করা হয়েছে মাইক, যার মাধ্যমে আজান দিয়ে নামাজের জন্য এলাকার মুসল্লিদের নামাজের আহবান করা হয়ে থাকা। মিনারের নিচে রয়েছে একটি ঘর, যেখান থেকে মুয়াজ্জিম আযান দেন। মসজিদের পূর্ব পার্শ্বে রয়েছে হযরত শাহ্‌ সুলতান বখতি (রহ) এর চারজন শিষ্যের মাজার। এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় চারশত জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে।

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদটি এলাকার গর্ব

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদটি জয়পুরহাট জেলাসহ উত্তরাঞ্চের মানুষের গর্ব। এই মসজিদের অপূর্ব কারুকাজ খচিত সৌন্দর্য দেখার এবং সালাত আদায়ের জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন অনেক পর্যটক এবং মুসুল্লিরা। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার এবং রমজান মাসে এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় আরো কয়েকগুণ। 

তখন দিনভর চলে রান্না- বান্না এবং রমজান মাসে সাহরী ও ইফতারীর সময় বেড়ে যায় মানুষের সংখ্যা। নওগাঁ, রাজশাহী বিশেষকরে কুমিল্লার চিশতিয়া তরিকার লোক এখানে অনেক বেশি আসে। হিন্দা কসবা মসজিদের পেশ ইমাম ও মুয়াজ্জিমের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান এই মসজিদে ইমামতি করা অনেক সৌভাগ্যের ভাগ্যের ব্যপার।

কিভাবে যাবেন হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ

রাজধানী ঢাকা বা যে কোন জেলা শহর থেকে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে জয়পুর হাট জেলা সদরে। এখান থেক বগুড়াগামী বাসে চড়ে ক্ষেতলাল উপজেলার হাটখোলায় নেমে, সেখান থেকে রিক্সা কিংবা অটোতে চড়ে ১৫/২০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। আবার আপনি চাইলে জয়পুর হাট থেকে সরাসরি রিক্সা কিংবা অটোতে করে হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ

হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ গ্রামে হওয়ার কারণে এখনে থাকা বা খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই রাত্রি যাপনের জন্য আপনাকে যেতে হবে জয়পুর হাট জেলা শহরে। এছাড়াও এখানে সকালে এসে সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে জাওয়া যায়। আর রাত্রি যাপন করতে চাইলে জয়পুরহাট সদরে বিভিন্ন মানের আবাসিক ও খাবারের হোটেল আছে। আপনি আপনার সাধ্যমত খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।

শেষকথা

আমরা আশাকরি আপনি যদি আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকে্‌, তবে অবশ্যই "হিন্দা কসবা শাহী জামে মসজিদ" সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে ও উপকারি বলে মনে হয় তবে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭