কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা
আরো পড়ুনঃ কৃমি কি, কেন হয়, প্রতিকার ও চিকিৎসা
কালো জিরা মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের মহাওষুধ। এই কথা আমাদের সকলেরই জানা থাকলেও অনেকেই আমরা জানিনা এর তেলের গুণাগুণ সম্পর্কে। কালো জিরার তেল খাবারার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি খাবারের সুগন্ধ বাড়াতেও বেশ পারদর্শী।
কালো জিরার তেল দিয়ে তরকারি ছাড়াও বিভিন্ন ভাজি যেমন, বিস্কুট, সিংগাড়া, নিম্কি, সামুচা, পাপড় ইত্যাদি ভাজার জন্য এই তেল ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাছাড়া কালোজিরার ভর্তা গরমভাতে বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার। কালো জিরায় রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন, আয়রন, নিয়াসিন, ক্যালসিয়ামসহ আরো বিভিন্ন উপাদান।
তাই কালো জিরার তেলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা সম্পর্কে। আশাকরি আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং যেনে নিবেন কালো জিরার তেল সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক কালো জিরার তেল সম্পর্কে-
আজকের পাঠ্যক্রম- কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা
- ১০০ গ্রাম কালো জিরার পুষ্টি উপাদান
- কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কালো জিরার তেল
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে কালো জিরার তেল
- কিডনি সুরক্ষা করবে কালো জিরার তেল
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও হাপানি দূর করে কালো জিরার তেল
- জয়েন্টের ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে কালো জিরার তেল
- মাথা ব্যথা উপশম করে কালো জিরার তেল
- দাঁত ভালো রাখতে কালো জিরার তেল
- শেষকথা
১০০ গ্রাম কালো জিরার পুষ্টি উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম কালো জিরার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
পুষ্টির নাম পুষ্টির পরিমাণ
- ভিটামিন বি-১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম।
- প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম।
- আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম।
- জিঙ্ক ৬০ মাইক্রোগ্রাম।
- নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম।
- কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম।
- ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম।
- ফসফরাস ৫.২৬ মিলিগ্রাম।
- ফোলাসিন ৬১০ আইউ।
কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা
কালো জিরা নিয়মিত খেলা ভালো থাকবে হার্ট, শ্বাসকষ্টের সমাধানসহ লুব্রিকেট করে জয়েন্টগুলোকে। কালো জিরায় রয়েছে অ্যান্টি কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য। যার ফলে এর রয়েছে অনেক উপকারিতা। পাশাপাশি এর তেলের রয়েছে বিশেষ সাত উপকারিতা। নিম্নে এর তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কালো জিরার তেল
ডায়াবেটিস রোগ এখন একটি কমন রোগে পরিনিত হয়েছে। আর আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে আর দেরি না করে এখোনই শুরু করুন কালো জিরার তেল সেবন। কারণ কালো জিরার তেলের সবচেয়ে বেশী উপকারিতা পাওয়া যায় ডায়াবেটিসে।
আরো পড়ুনঃ কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস
আর এই জন্য আপনাকে প্রতিদিন সকালে এক কাপ কালো চা এর সঙ্গে কালো জিরার তেল মিশিয়ে নিন, এক চা চামচ কালো জিরার তেল এবং পান করুন। আর এভাবে কয়েক সপ্তাহ পান করলেই আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন পার্থক্য।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন করতে কালো জিরার তেল
ডায়াবেটিস এর মতো উচ্চ রক্তচাপও এখন কমন রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপে ভূগছেন তাঁরা নিয়মিতভাবে পরিমানমতো গরম পানির সঙ্গে হাপ চামাচ কালো জিরার তেল মশিয়ে পান করুন। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এমন খাবার নিয়মিত খান। দেখবেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
কিডনি সুরক্ষা করবে কালো জিরার তেল
বর্তমানে পরিচিত একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিডনির পাথর। কিডনির সংক্রমণ, পাথর কিংবা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনি সেবন করুন কালো জিরার তেল। আর এই জন্য আপনাকে এক চা চামচ মধু ও পরিমাণ মতো হালকা গরম পানি এবং কালো জিরার তেল মিশিয়ে নিয়মিত সেবন করতে হবে। পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ মতে খাদ্যা গ্রহন করুন দেখবেন আপনি উপকৃত হবেন।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও হাপানি দূর করে কালো জিরার তেল
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কালো জিরার তেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়মিত পান করুন। এই টোটকা প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশু উভয়ের জন্য সাহায্য করে শ্বাসকষ্ট উপশম করতে। তবে এই টোটকা আপনাকে নিয়মিতভাবে কমপক্ষে ডেড় (৪৫) মাস করতে হবে। কিন্তু এই সময়ে আপনাকে এডিয়ে চলতে হবে ঠান্ডা খাবার এবং ঠান্ডা পানি খাওয়া থেকে।
জয়েন্টের ব্যাথা নিয়ন্ত্রণে কালো জিরার তেল
জয়েন্টের ব্যাথা কমাতে একটি টোটকা ব্যবহার করতে হবে। এর জন্য আপনাকে পরিমাণ মতো খাটি সরিষার তেলের সঙ্গে এক মুষ্টি কালো জিরা ভালো করে গরম করুন। গরম করার সময় যখন তেল দিয়ে ধোয়া উঠা শুরু করবে তখন এটি নামিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে ঠান্ডা করুন। এবার জয়েন্টের যেখানে পেইন হচ্ছে সেখানে হালকা ভাবে কিছুক্ষণ ম্যাসেজ করুন। এইভাবে কয়েক দিন ম্যাসেজ করলেই আপনি অনেক উপকার পাবেন।
মাথা ব্যথা উপশম করে কালো জিরার তেল
মাথা বিভিন্ন কারনে ব্যথা করতে পারে, যেমন টেনশন করলে, সর্দিজর কিংবা ঘুম কম হলে। আর এইজন্য আমরা বিভিন্ন ওষুধ সেবন করি। কিন্তু এর সমাধান প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়াভাবে বেশ কার্যকর। এর জন্য আপনি কালো জিরার তেল কপালে হালকা ভাবে ম্যাসেজ করুন এবং আরাম করে একটু শুয়ে থাকুন দেখবেন আপনার মাথা ব্যথা সেরে যাবে।
দাঁত ভালো রাখতে কালো জিরার তেল
আমাদের দাঁতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন দাঁত দূরবল হয়া, দাঁত দিয়ে দিয়ে রক্ত পড়া বা দাঁত ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। আর দাঁতের মাড়িকে শক্তি শালি এবং চকচকে করতে আপনি কালো জিরার তেল সকাল বিকাল দিনে দুবার দাঁতে ম্যাসেজ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত সমস্যা দেখা দিলে একজন ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ নেওয়া ভালো।
আরো পড়ুনঃ মাসরুমের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপায়
শেষকথা
আশাকরি আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের "কালো জিরার তেলের বিশেষ সাত উপকারিতা'' এবং কালো জিরার পুষ্টি উপদান সম্পর্কে অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url