জবাই বিলে নৌকা ভ্রমনের উপযুক্ত সময়
আরো পড়ুনঃ ড্রিম হলিডে পার্কে ভ্রমন
চলছে বর্ষা মৌসুমের শেষ সময়। এখন সবাই ব্যস্ত কোথায় নৌকা ভ্রমন করা যায় সেটি নিয়ে। অনেকেই আবার গুগলে সার্চ করছেন নৌকা ভ্রমনের জন্য ভালো এখটা স্থান সম্পর্কে জানার জন্য। আর আপনি কি এমন একটি স্থানের সম্পর্কে জানতে চান। তাহলে আপনি সঠিক স্থানে এসেছেন।
কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "নৌকা ভ্রমনের জন্য বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত জবাই বিল'' সম্পর্কে। আশাকরি আপনারা আজকের এই আরটিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং যেনে নিবেন এই বিল সম্পর্কে সকল তথ্য।
আজকের পাঠ্যক্রম- জবাই বিলে নৌকা ভ্রমনের উপযুক্ত সময়
- জবাই বিল কোথায় অবস্থিত
- বিলের নাম জবাই হয়ার কারণ
- জবাই বিলে নৌকা ভ্রমনের উপযুক্ত সময়
- জবাই বিলের ভিন্ন রূপ
- আতিথি পাখির আগমন
- কিভাবে যাবেন জবাই বিল
- কোথায় থাকবেন জবাই বিল
- জবাই বিলে কোথায় খাবেন
- শেষকথা
জবাই বিল কোথায় অবস্থিত
বাংলাদেশের অন্যতম সীমান্তবর্তী এলাকা নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার সীমান্ত এলাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় এই বিলটি অবস্থিত। এটি নওগাঁ জেলা শহর হতে প্রায় ৬৩ কিলোমিটার এবং সাপাহার উপজেলা সদর হতে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বিলের নাম জবাই হয়ার কারণ
এই বিলটির আসল নাম বা পূর্বের নাম ছিল মাহিল এবং ডমরইল বিল। জবাই বিল সাপাহের উপজেলার পাহাড়ীপুকুরে নির্মিত ব্রিজ দুটিকে পৃথক করেছে। এই ব্রিজের উত্তরে ডমরইল এবং দখিণে মাহিল বিল। পূর্বে জবাই বিল নামের কোন অস্তিত্ব ছিল না। জবাই বিল নামকরণের প্রধান কারনই হলো বিলের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে দুটি ইউনিয়ন আইহাই ও পাতাড়ি।
এই দুটি ইউনিয়নের লোকজনকে উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য বেশির ভাগ সময় জবই নামক গ্রামের উপর দিয়ে যেতে হয়। সেই থেকে এই বিলের নাম করণ হয়েছে জবাই বিল। বর্তমানে এই বিল ''জবাই বিল'' নামেই পরিচিত।
জবাই বিলে নৌকা ভ্রমনের উপযুক্ত সময়
শুধু পানি আর পানি। বিলের বুক চিরে বয়ে যাওয়া প্রায় এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা এখন নওগাঁ জেলাসহ আশপাশের জেলার ভ্রমন পিপাসুদের জনপ্রিয় স্থান। প্রতিদিন এখানে শত শত ভ্রমন পিপাসু মানুষ ভীড় জমায়। কেউবা পরিবার পরিজন নিয়ে আবার কেউ বন্ধু বান্ধাবদের নিয়ে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে কিংবা নৌকা বা স্প্রিট বোট নিয়ে উপভোগ করেন এই মনোরম দৃশ্য।
এই বিলে পানি আসা শুরু করে মে মাস হতে। আর এই পানি থাকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে বেশি পানি থাকে আগস্ট, সেপ্রেম্বে ও অক্টোম্বর এই তিন মাস। এই সময় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় গোটা বিল। রাস্তার উপর দাড়িয়ে উত্তর কিংবা দখিণ যেদিকে তাকাবেন দেখবেন শুধু পানি আর পানি।
আরো পড়ুনঃ এক দিনের ছুটিতে ঢাকার পাশেই ঘুরে আসুন
রাতে এই বিল আরো মনোমুগ্ধকর হয়ে উঠে কারণ তখন ভারতের কাটা তারের বেড়ার সঙ্গে থাকা লাল নীল বাতির আলো দেখা যায়। এই গুলো দেখলে মনে পড়ে এই বিখ্যাত গানের কলি "লাল নীল বাতি দেখে নয়ন জুড়াইছে, ঢাকা শহর আইজায়,মনের আসা ফুরাইছে''। তবে জাই হোক এই বিলে নৌকা ভ্রমনের করতে চাইলে আপনাকে আসতে হবে আগস্ট- অক্টোম্বর মাসে।
জবাই বিলের ভিন্ন রূপ
এই বিল একেক মৌসুমে একেক রূপ ধারন করে। নভেম্বর মাস শেষ হতেই রূপ পাল্টে হয়ে উঠে হলুদ। কারণ এই সময়ে প্রচুর পরিমণে সরিষার চাষ হয়ে থাকে। এর পর আবার রূপ পাল্টে হয়ে উঠে সবুজ এবং অল্প কিছুদিন পর পাকা ধানের সোনালী রঙ্গে ভরে উঠে গোটা বিল। এই বিলে ধান উৎপাদন হয় এলাকার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি।
আতিথি পাখির আগমন
প্রতিবছর শীত মৌসুমে এই বিলে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমনে কল- কাকলীতে ভরে উঠে। প্রতি বছর এই বিলে প্রায় ৩০ প্রজাতির ১০ হাজারের উপর বিভিন্ন দেশী এবং পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে। স্থানীয় লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এই সংখ্যা অতিতে আরো বেশী ছিল, কিছু অসাধু পাখি শিকারীদের কারণে অনেক অতিথি পাখি এখন আর আসে না।
কিভাবে যাবেন জবাই বিল
ঢাকা থেকে আপনি সরাসরি সাপাহার আসতে পারবেন অথবা নওগাঁ জেলা সদর হয়ে সাপাহারে যেতে হবে। সাপাহার উপজেলা সদর হতে মাত্র ৮ কিলো মিটার দূরে এই বিল অবস্থিত। আপনি সাপাহার উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২০ বা ৩০ টাকা ভাড়ায় রিকশা ও ভ্যানযোগে খুব সহজে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন জবাই বিল
আপনি চাইলে সাপাহারে কম খরেছে থাকতে পারবেন অথবা ভালো মানের আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করতে চাইলে আপনাকে নওগাঁ জেলা সদরে যেতে হবে। নওগাঁতে হোটেল প্লাবন, হোটেল যমুনা, হোটেল অবকাশ, মল্লিকা ইন, হোটেল ফারিয়াল ও হোটেল রাজ প্রভৃতি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এসকল হোটেল ভাড়া ৩০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত লাগবে।
জবাই বিলে কোথায় খাবেন
সাপাহারে অনেক ভালো মানের খাবারের হোটেল আছে। আপনি চাইলে সাপাহারে খেতে পারবেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আরো ভালো মানের খাবারের জন্য নওগাঁর গোস্তহাটির মোড়ে ভালমানের কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁ পাবেন।
আরো পড়ুনঃ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পাগলা রাজার রাজবাড়ী
শেষকথা
আশা করি আপনার জবই বিল সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। যা কিনা আপনার ভ্রমণে সাহায্য করবে। এই বিল দেখতে বছরের যে কোন সময় দর্শনার্থীরা অল্প ভিড় করলেও দুই ঈদে দর্শনার্থীদের উপচে পরা ভিড় লক্ষণীয়। পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনাময় বিল এর প্রতি প্রয়োজনীয় নজরদারি দিলে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসাবে এটি গড়ে উঠবে। তাই সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url