পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি জয়পুর হাট
আরো পড়ুনঃ প্রাচীন স্থাপনা লালদীঘি নয় গম্বুজ মসজিদ
বাংলাদেশে যতগুলো বধ্যভূমি রয়েছে তাঁর মধ্যে অন্যতম একটি হলো জয়পুর হাট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত পাগলে দেওয়ান বধ্যভুমি। এই বধ্যভূমিতে মুক্তযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ১৯৭১ সালে প্রায় দশ হাজার নিরীহ বাঙ্গালী নারী- পুরুষকে পাকিস্তানী ও তাঁদের দোষরা হত্যাকরে গণ কবর দেয় এই বধ্যভূমিতে।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ''পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি জয়পুর হাট'' সম্পর্কে সকল তথ্য। আশাকরি আপনারা আমাদের আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পুরোটাই পড়বেন এবং যেনে নিবেন এই বধ্যভূমি সম্পর্কে সকল তথ্য।
আজকের পাঠ্যক্রম- পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি জয়পুর হাট
- পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি কোথায় অবস্থিত
- পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমির ইতিহাস
- পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণশৈলী
- কিভাবে যাবেন পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি
- কোথায় থাকবেন ও খাবেন পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি
- শেষকথা
পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি কোথায় অবস্থিত
পাগোলা দেওয়ান বধ্যভূমি বাংলাদেশের অন্যতম সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুহাট সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চকবরকত এলাকায় অবস্থিত। এই বধ্যভূমিটি জয়পুর হাট সদর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে নওগাঁ জেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত।
পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমির ইতিহাস
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানী দোসর বা রাজাকার বাহিনীর সহযোগিতায় কোন উস্কানী ছাড়াই পাক সেনারা মধ্যযুগীয় কায়দায় ১২২ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাগলা দেওয়ান বধ্যভুমিতে গণকবর দেয়। জয়পুর হাট সদর উপজেলার প্রত্যান্ত গ্রাম পাগলা দেওয়ানে ছিলো পাকিস্তানী সেনা ক্যাম্প ও বাঙ্কার।
পাকিস্তানি সেনারা এখানে গণহত্যা, লুট- পাট এবং বিভিন্ন নির্যাতন চালান নওগাঁ, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট জেলাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ, যারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রাণ ভয়ে আশ্রায়ের জন্য ভারতে পালানোর সময় এই পথ দিয়ে জাচ্ছিলেন। তাঁদের সব কিছু লুটে নেন এবং নির্মমভাবে হত্যা করে এই বধ্যভুমিতে গণকবর দেন।
আরো পড়ুনঃ প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা দোল মন্দির পুঠিয়া রাজশাহী
এলাকায় বসবাসকারী প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা জানান যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দুই/ তিন মাস পচা লাশের গন্ধে বসবাস করতে পারেনি এই এলাকার মানুষ। তাঁরা আরো জানান পাগলা দেওয়ান এলাকার বিভিন্ন ফসলী জমিতে কাজ করতে গিয়ে একটু মাটি খনন করলেই বেরিয়ে আসতো অর্ধ গলিত লাশসহ মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ।
পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমিটি প্রত্যন্ত গ্রামে হওয়ায় এটি সম্পর্কে সঠিকভাবে কোন ধারণা দিলো না কর্তৃপক্ষের। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৯২ সালে দেশবাসী এই বধ্যভূমি সম্পর্কে জানতে পারে। বর্তমানে গণপূর্ত বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উক্ত স্থানে নির্মাণ করা হয় একটি স্মৃতিসৌধ।
পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণশৈলী
কিভাবে যাবেন পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি
কোথায় থাকবেন ও খাবেন পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি
পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি প্রত্যন্ত গ্রামে হওয়ার কারণে সেখানে থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই। আপনকে রাত্রি যাপন করতে হলে যেতে হবে জয়পুর হাট সদরে। সেখানে বিভিন্ন মানের আবাসিক ও খাবারের হোটেল রয়েছে। সেখানে রাত্রি যাপনের জন্য আবাসিকে ২৫০ টাকা হতে মানভেদে আরো বেশী ভাড়া লাগবে। আপনি আপনার সমর্থ অনুযায়ী খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
শেষকথা
আশাকরি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পেরেছি "পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি জয়পুর হাট" সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আসাবাদি। বিশেষ করে যারা এই বধ্যভূমি সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক, তাঁদের ক্ষেত্রে।
আরো পড়ুনঃ ধবংপ্রাপ্ত ঐতিহাসিক সীতাকোট বৌদ্ধ বিহার দিনাজপুর
আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাবে এটি অবশ্যই অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url