মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার

আরো পড়ুনঃ ব্রিটিশ শাসনামলের জমিদারবাড়ী ময়েজ মঞ্জিল

বাংলাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত ঢাকা বিভাগের পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে রাজবাড়ী জেলা। এই জেলাকে আবার ''পদ্মা কণ্যা'' বলেও ডাকা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফেরীঘাট দৌলতদিয়া ফেরীঘাট রাজবাড়ী জেলায় অবস্থিত। সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই দৌলতদিয়া ঘাট খুবই পরিচিত। আবার রাজবাড়ী জেলা শহর রেলকেন্দ্রিক হওয়ার কারণে রেলের শহর হিসাবেও এই জেলা বেশ পরিচিত। 

লেবু চাষের জন্য বিখ্যাত বালিয়াকান্দি উপজেলা এবং বিখ্যাত চমচমের জন্য রাজবাড়ী জেলা বাংলাদেশের মানুষের বেশ পরিচিত। রাজবাড়ী জেলায় রয়েছে "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার, মীর মোশারফ হোসেনের'' পৈতৃক বাড়ীসহ অনেক দর্শনীয় স্থান। আজকের আর্টিকেলে আমরা শেয়ার করবো "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার'' প্রসঙ্গে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক-

আজকের পাঠ্যক্রম- মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার 

  • কোথায় অবস্থিত মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার
  • রাজবাড়ী জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের নাম
  • মুর্শিদ জামাই পাগলের অলৌকিক ঘটনা
  • মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার
  • মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে ওরশ 
  • কিভাবে যাবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে
  • কোথায় থাকবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে
  • কি খাবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে
  • শেষকথা

কোথায় অবস্থিত মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার

রাজবাড়ীর সদর উপজেলার আলীপুর ইউপির অন্তর্গত আলাদীপুর গ্রামে "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার'' অবস্থিত। ধারণা করা হয় সম্ভাবত ১৯৬০ সালের দিকে বর্তমান মাজারের নিকট থাকা শেওড়া গাছের নিচে নেংটি পরা অবস্থায় মুর্শিদ জামাই পাগল অবস্থান নেন।

রাজবাড়ী জেলার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানের নাম

রাজবাড়ী জেলায় রয়েছে বারেক গ্রাম ও মোহনপুর গ্রামের মতো গ্রামীণ সৌন্দর্যের প্রতিকসহ নিম্ন বর্ণিত দর্শনীয় স্থান সমূহ-

  • আর্চ ব্রিজ।
  • ইউকে বিচ।
  • গোদার বাজার।
  • পাংশা হেনা পার্ক। 
  • কালুখালি ঠাকুর বিল।
  • কালুখালি স্বপ্ন বিলাস।
  • পাংশা বহরপুর আবাসন।
  • বিশই সাওরাইল জমিদারবাড়ী।

মুর্শিদ জামাই পাগলের অলৌকিক ঘটনা

মুর্শিদ জামাই পাগলের নামে রয়েছে প্রচলিত অলৌকিক বিভিন্ন ঘটনা। লোকশ্রুতি রয়েছে পাবনা জেলার কোন এক ধনি ব্যক্তি তার এক বোবা মেয়েকে বিয়ে দেন। বিয়ের রাত শেষে কথা বলতে শুরু করেন উক্ত বোবা মেয়েটি। এই কথাটি তখন মানুষের মুখে মুখে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু পাগল জামাইকে আর কোথাও সন্ধ্যান পাওয়া যায় না এবং খোঁজা- খুঁজির পর ্তার দেখে মেলে রাজবাড়ী জেলার আলাদীপুর গ্রামে। বর্তমানে যেখানে তাঁর মাজার রয়েছে।

তার সন্ধ্যান পাওয়া গেলেও তিনি তাঁর স্ত্রীকে জানিয়ে দেন যে, সে আর করবেন না ঘর সংসার। এই ঘটনার পর হতে মানুষের মুখে মুখে পাগলের কথা ছড়িয়ে পড়ে জামাই। আরো জানা যায়, যে সময় জামাই পাগল আলাদীপুর গ্রামে আসেন, এই সময় এখানকার অনেক মানুষ মারা যাচিল কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে। তখন জামাই পাগল সারিয়ে তোলেন আক্রান্তদের এবং ধীরে ধীরে জামাই পাগলের নিকট মানুষ আসতে থাকেন বিভিন্ন মানত নিয়ে এবং অনেক মানুষ তাঁর উছিলায় রোগ মুক্ত হন।

মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার

"মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার" মৃত্যু হলে এক আগস্তুক তাঁকে আলাদীপুর গ্রামে সৎকারের ব্যবস্থা করেন এবং জামাই পাগল নামে একটি মাজার এখানে স্থাপন করা হয়। এই জামাই পাগলের ভক্ত নূর বারেক শাহ ও গৌরি পাগলী নামে দু'ইজন মাজার দেখা- শোনা করেন এবং তারা ইন্তেকাল করলে তাদেরকেও এখানে সমাহত করা হয়। এই মাজারে বর্তমানে তিনজনের কবর সারিবদ্ধ ভাবে রয়েছে। এই মাজারে সুবিশাল একটি সুন্দর মসজিদ রয়েছে।

মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে ওরশ 

উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতনামা কামেল অলী বাবা "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার" শরীফে প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসের ১৫ তারিখে ওরশ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

কিভাবে যাবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে

রাজধানী ঢাকার হতে আপনারা বাসযোগে ও রেলযোগে দুইভাবেই রাজবাড়ী জেলা শহরে যেতে পারবেন।

বাসযোগে- ঢাকার গাবতলী হতে রাজবাড়ী জেলা শহর পর্যন্ত হানিফ, রাবেয়া, সপ্তবর্ণা, রাজবাড়ী, সাউদিয়া ইত্যাদি নামের বাস সকাল ৭টা হতে রাত ১১টা পর্যন্ত নিয়মিতভাবে চলাচল করে। এই সকল বাসের ভাড়া মানভেদে ৪০০ টাকা হতে ৫০০টাকা। এখান হতে সিএনজি, রিক্সা বা ইজিবাইকে করে সহজে ''মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে'' যেতে পারবেন।

রেলযোগে- ঢাকা কমলাপুর রেল স্টেশন হতে মধুমতি, সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস রেলে করে রাজবাড়ী জেলা শহরে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে মানভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৩৪০টাকা হতে ৮০০টাকা লাগবে।

কোথায় থাকবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে

রাজবাড়ী জেলা শহরে বেশ কয়েকটি সরকারি ডাকবাংলা ও বিভিন্ন ধরনের আবাসিক হোটেল রয়েছে। জনপ্রতি আপনাদের ভাড়া লাগবে ৩০০ টাকা হতে মানভেদে আরো বেশী। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত হোটেল ভাড়া করে নিরাপদে রাত্রি যাপন করতে পারবেন।

কি খাবেন মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজারে

রাজবাড়ী জেলা শহরে অনেক খাবারের হোটেল রয়েছে। কিন্তু আপনরা যা নাখেয়ে রাজবাড়ী হতে আসবেন না তাহল- ঝালাই পট্টির কুলফি মালাই, পান বাজারে ভাদু শাহার দোকানের চমচম ও রেলগেটের হীরা শাহার দোকানের চপ।

আরো পড়ুনঃ প্রাক মুসলিম যুগের উন্নত নগরীর অবস্থান

শেষকথা

আশাকরি আমরা আপনাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার'' সম্পর্কে সকল তথ্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশাকরি। বিশেষ করে "মুর্শিদ জামাই পাগলের মাজার" ভ্রমনের ক্ষেত্রে। আর্টিকেলটি যদি ভালো ও উপকারি মনে হয়, তাহলে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭