অবাক করা পুই শাকের ১০ উপকারিতা

আরো পড়ুনঃ ডুমুর বা তানজিমের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ 

পুঁই শাক বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত একটি সবজি। গ্রাম বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে "মাছের মধ্যে রুই আর শাকের মধ্যে পুঁই''। তাইতো পুঁই শাক ছোট হতে বড় সকল বয়সী মানুষের কাছেই একটি জনপ্রিয় খাবার। পুঁই শাক আমরা বিভিন্ন ভাবে রান্না করে খেতে পারি। এই শাক অনেকে রান্না করে নিরামিষ, অনেকে রান্না করেন হালকা ডাইল দিয়ে।

পুঁই শাকের সবচেয়ে লোভনীয় খাবার হল, যখন এটি রান্না করা হয় চিংড়ী কিংবা মাছের রাজা ইলিশ দিয়ে। অনেকে পুঁই শাককে বলে থাকেন নিরামিষ শাক হিসাবে। কারণ পুঁই শাক বেশীর ভাগ সময় রান্না করা হয় বিভিন্ন প্রকারের মাছ দিয়ে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো পুঁই শাকে কিকি উপাদান রয়েছে এবং এর ১০ উপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক-

আজকের পাঠ্যক্রম- অবাক করা পুঁই শাকের ১০ উপকারিতা

  • পুঁই শাকে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন সমূহ
  • অবাক করা পুই শাকের ১০ উপকারিতা
  • পুঁই শাক ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে
  • পুঁই শাক কমায় ব্লাড প্রেসার
  • শরীরের হাড় শক্ত করে পুঁই শাক
  • ক্যানসার প্রতিরোধে পুঁই শাক
  • শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে পুঁই শাক
  • অ্যাজমা প্রতিরোধে পুঁই শাক
  • পুঁই শাক ত্বক ও চুলকে করে স্বাস্থ্যকর
  • পুঁই শাক চোখ ভালো রাখে
  • পুঁই শাক বাড়ায় এনার্জি
  • পুঁই শাক ক্ষমতা বাড়ায় হজমের
  • পুঁই শাকের অপকারিতা সমুহ
  • শেষকথা

পুঁই শাকে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন সমূহ

পুঁই শাক একটি সহজলভ্য সবজি। কারণ এটি আমাদের চারপাশে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, খুব সহজে। পুঁই শাক বিভিন্ন ভিটামিনে ভরপুর, যেমন এতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় "এ, বি, সি এবং কে '' এর মত মুল্যবান ভিটামিন। এছাড়াও এই শবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ এবং ক্যালসিয়াম। 

আর এই সকল ভিটামিনের ফল্‌, আমরা রক্ষাপাই বিভিন্ন রোগ হতে এবং আয়রন ও ক্যালসিয়াম, যা আমাদের শরীর বৃদ্ধিতে অনেক দরকারি উপাদান। ইহা ছাড়াও পুঁই শাকে থাকে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ যেমন পটাশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, জিঙ্ক ইত্যাদি। তাইতো পুঁই শাকে রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা। চলুন নিম্নে দেখে নেওয়া যাক "অবাক করা পুঁই শাকের ১০ উপকারিতা'' সম্পর্কে।  

অবাক করা পুই শাকের ১০ উপকারিতা

পুঁই শাকে থাকে ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, জিঙ্কসহ বিভিন্ন উপদান। যা থাকার কারণে এটি খেয়ে পাওয়া যায় অবাক করা পুই শাকের ১০ উপকারিতা। চলুন দেখে নেওয়া যাক- 

পুঁই শাক ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে 

পুঁই শাকে রয়েছে বভিন্ন ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। পুঁই শাকে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের রক্তের শর্করা কমায়, ফলে বজায় রাখে ইনস্যুলেন ভারসাম্য। পুঁই শাক কমায় পেরিফেরাল এবং নিউরোপ্যাথি এটি প্রমানিত হয়েছে। অতএব আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, পুঁই শাক ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

পুঁই শাক কমায় ব্লাড প্রেসার

পুঁই শাক প্রাকৃতিক ভাবে একটি ভালো উৎস পটাশিয়ামের। আর এটা আমাদের প্রায় সকলের জানা পটাসিয়াম কমায় ব্লাড প্রেসার এবং ঠিক রাখতে সাহায্য করে শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা। তাই আমদের বেশীকরে পুঁই শাক খাওয়া উচিৎ ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন করার জন্য।

শরীরের হাড় শক্ত করে পুঁই শাক

পুঁই শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "কে", যা আমাদের মানুষের শরীরের হাড়কে মজবুত করতে অনেক সাহায্য করে থাকে। যেহেতু পুঁই শাক হলো ভিটামিন "কে" এর অন্যতম একটি উৎস, তাই আমরা আমাদের হাড়কে মজবুদ করার জন্য নিয়মিত পুঁই শাক খাব। 

এছাড়াও ভিটামিন "কে" ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় ক্যালসিয়ামের ও উন্নত করে হাড়ের মেট্রিক্স প্রোটিন এবং কম করে ইউরিনে ক্যালসিয়ামের মাত্রা। অতএব আমারা হাড়কে শক্ত করতে খাব পুঁই শাক।

আরো পড়ুনঃ কচু শাকের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

ক্যানসার প্রতিরোধে পুঁই শাক

সকল প্রকার পুঁই শাকসহ সবুজ শাকে রয়েছে ক্লোরাফিল। আর ক্লোরাফিল ভালো কাজ দেয় কার্সিনোজেনিক প্রভাবকে আটকাতে। প্রাই আমরা সকলেই জানি ক্যানসার হয় সাধারণত কার্সিনোজেনিকের প্রভাবে। পুঁই শাকে থাকা ফাইবার পাকস্থলী এবং প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কোলন ক্যানসার। তাই ক্যানসার প্রতিরোধ করার জন্য আমরা খাবো নিয়মিত পুঁই শাক।

শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধিতে পুঁই শাক

পুঁই শাকে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলসহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান। আর এই সকল উপাদান বাড়ন্ত শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে অত্যান্ত প্রয়োজন। তাই আমাদের সকলের উচিৎ বাড়ন্ত শিশুদের নিয়মিত পুঁই শাক খাওয়ার অভ্যাস করে তোলা।

অ্যাজমা প্রতিরোধে পুঁই শাক

পুঁই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। আর খুব সহজে অ্যাজমা হতে দেয়না বিটা ক্যারোটিন। একটি গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যারা কোন কোন ভাবে পুঁই শাক খান তাদের অ্যাজমা নেই। তাই অ্যাজমা প্রতিরোধে পুঁই শাক নিয়মিত খাওয়া জরুরী।

পুঁই শাক ত্বক ও চুলকে করে স্বাস্থ্যকর

পুঁই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন "এ'' যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ত্বক এবং স্কাল্পের তেল নিঃসরণসহ ধরে রাখে ময়েশ্চা রাইজার। আর অতিরিক্ত সিবান বা তেল নিঃসরণ হলে ব্রণ হয়। তাই যেহেতু পুঁই শাক তেল নিঃসরণ কমানোর ফলে ব্রণ হয় না। পুঁই শাক ভিটামিন "সি'' অন্যতম উৎস। আর এই ভিটামিন "সি" প্রয়োজন ত্বকের কোষ কোলাজিনের জন্য।

পুঁই শাক চোখ ভালো রাখে

চোখ আমাদের শরীরের অতি প্রয়োজনীয় ও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। তাই এই অঙ্গের প্রতি আমাদের আলাদাভাবে যত্ন নেওয়া দরকার। পুঁই শাকে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, লুটেইন যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকারী উপাদান। আর লেটেইনে থাকে ম্যাকুলায়, এটি একটি রেটিনার অংশ যা চোখকে ভালো রাখে অতিরিক্ত আলোর প্রভাব থকে। আরো চোখকে রক্ষা করে মেক্যুলার ডিজেনারেশনের হাত থেকেও।

পুঁই শাক বাড়ায় এনার্জি

আমাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করার জন্য প্রয়োজন হয় এনার্জির। পুঁই শাকে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা সাহায্য করে এনার্জি বাড়াতে। আবার ফোলেটের অন্যতম ভালো উৎস হলো পুঁই শাক। ফোলেট এনার্জিতে রূপান্তরিত করে খাবারকে। তাছাড়া পুঁই শাক হল প্রাকৃতিক অ্যালকালাইন যা আমাদের দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার এনার্জিকে ধরে রাখে।

পুঁই শাক ক্ষমতা বাড়ায় হজমের

বাঙ্গালী বলতেই আমরা ভোজন প্রিয়। আমাদের বিভিন্ন ধরণের ফাস্ট ফুট ও তেলে ভাঁজা খাওয়ার খাওয়ার ফলে লেগেই থাকে গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা। এই সকল সমস্যা থেকে পুঁই শাক আমাদের পারে রক্ষা করতে। যেহেতু পুঁই শাকে থেকে প্রচুর ফাইবার যা খাবার হজম করতে এবং হতে দেয়না কোষ্ঠকাঠিন্য। বের করে দেয় শরীর থেকে সকল বর্জ্য পদার্থ। তাই হজমের বা বদহজমের সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের নিয়মিত পুঁই শাক খাওয়া প্রয়োজন। 

পুঁই শাকের অপকারিতা সমুহ

সকল জিনিসের উপকারের পাশাপাশি তার অপকারিতাও থাকে। সে ক্ষেত্রে পুঁই শাকেরও অনেক উপকারিতার মধ্যে অল্প কিছু অপকারিতাও রয়েছে। অপকারিতা গুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো- 

  • যাদের সমস্যা রয়েছে এর্লাজি তাঁরা বেশী পরিমাণে পুঁই শাক খেলে বাড়তে পারে এর্লাজি।
  • অক্সালেটর সমৃদ্ধ পুইশাক, তাই এট বেশী পরিমাণে খেলে আমাদের বেড়ে যায় শরীরের তরল পদার্থ অক্সেলেটর।
  • পুঁই শাকে রয়েছে পিউরিন নামক উপাদান, তাই এটি বেশী পরিমাণে গ্রহনের ফলে বৃদ্ধি পায় আমাদের শরীরের ইউরিক এসিড আর এর ফলে হতে পারে কিডনীতে পাথর ও গেঁটে বাত এর মত রোগ। যারা ভুগছেন পিত্তথলি ও কিডনির পাথর সমস্যায়, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পুঁই শাক খাওয়া উচিৎ।

শেষকথা

আশাকরি আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে "অবাক করা পুই শাকের ১০ উপকারিতা" ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আসাবাদি। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে ও উপকারি মনে হয়, তবে এটি অবশ্যই অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭