চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য
আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে সবুজ চা গোলাপজল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য চুল অন্যতম। স্বাস্থ্য উজ্জল, সুন্দর আর ঘন কালো চুলের আধিকারি হলে যেকারো সৌন্দর্যকে অনেকাংশে বাড়ীয়ে তোলে। তাইতো যারা রূপ চর্যার করেন তাঁরা খোঁজেন সুন্দর চুলের রহস্য। এই কিছুদিন আগেও আমাদের দেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের চুল ছিল স্বাস্থ্য উজ্জল, সুন্দর এবং ঘন কালো।
তবে বর্তমানে মানুষের জীবন যাত্রার মান, বায়ুদূষণের হার ও ভারসাম্যহীন জলবায়ুর কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন তাছাড়া মানুষের অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে ধবংস হয়ে যাচ্ছে চুলের স্বাস্থ্য। কিন্তু আশার আলো জাগিয়েছে আয়ুর্বেদীয় কয়েকটি গোপন রহস্য।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য'' সম্পর্কে। যা আমাদের চুলের হারানো সেই স্বাস্থ্য উজ্জলতা কে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক গোপন রহস্যগুলি-
আজকের পাঠ্যক্রম- চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য
- চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য
- চুলের ফলিকলকে করে পুষ্ট করে মেথি
- চুল পাকা রোধ করতে আমলকি
- চুল পড়া রোধ করতে ভৃঙ্গরাজ
- মাথার ত্বকের সংক্রমণ ও শুস্কতা কমায় অ্যালোভেরা
- চুল বৃদ্ধি এবং ঘন করে ব্রাহ্মী ব্যবহারের ফলে
- শেষকথা
চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য
চুলের যত্নে আদিকাল হতেই ব্যবহার হয়ে আসছে আয়ুর্বেদিক তেল। চুল ঘন, কালো এবং লম্বা করতে আয়ুর্বেদিক এর জুড়ি মেলাভার। আয়ুর্বেদিক উপাদান চুলের যত্নে অনেক উপকারী। আর এর সবচেয়ে বড়গুণ হলো এতে রাসায়নিক কিছু ব্যবহার করা হয় না। নিম্নে আলোচনা করা হলো ''চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য'' সম্পর্ক।
চুলের ফলিকলকে করে পুষ্ট করে মেথি
মেথি রান্নায় ব্যবহার করার একটি সাধারণ উপাদান এবং এটি পাওয়া যায় সারা বছর। এতে রয়েছে অসাধারোণ কিছু ওসুধি উপাদন যা চুলের জন্য অত্যান্ত উপকারী। মেথিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টসহ প্রোটিন এবং আয়রন, যা চুলকে দেয় পুষ্টি এবং সহায়তা করে দ্রুত বৃদ্ধিতে। এতে আরো রয়েছে নিকোটিনিক অ্যাসিড যা খুশকি দূর করে, চুল ঝরে যাওয়া কমায়।
মেথিতে আরো থাকে ভিটামিন "এ, সি এবং কে'', ফ্লাভোনয়েড, ফলিক অ্যাসিড, স্যাপোনিনে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি আর বিশিষ্ট রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গালের। যা মাথার ত্বকের সমস্যাসহ চুলের শুস্কতার মতো সমস্য দূর করতে সাহায্য করে। মেথি রোধ করতে সক্ষম চুল পাতলে হয়ে টাক পড়ার হাত থেকে। তাছাড়া চুলকে স্বাস্থ্যকর এবং দ্রুত বৃদ্ধিতে চুলের ফলিকলকে করে পুষ্ট।
আরো পড়ুনঃ চুল ভালো রাখতে ১০ সাবধানতা
চুল পাকা রোধ করতে আমলকি
আমলকি চুলের জন্য অন্যতম একটি ফল যা ব্যবহারে চুলে যোগায় শক্তি এবং চুলকে করে সতেজ। আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন, অ্যামিনো অ্যাসিড, ফাইটোনিউট্টিয়েন্ট এবং খনিজ যা পুষ্টি যোগয় মাথার ত্বকে এবং শক্তিশালি করে তোলে চুলের গোড়াকে। আকলকি পরিপূর্ণ থাকে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টে।
তাই আমলকি ব্যবহারে সহায়তা করে খুশকি কমাতে, ময়লা দূর করতে এবং দূর করে চুলের অতিরক্ত তেল চিটচিটে ভাব। নিয়মিত আমলকির নির্যাস তেলের সঙ্গে ম্যাসেজ করলে বৃদ্ধি পায় রক্ত সঞ্চালন এবং ত্বরান্বিত হয় চুলের বৃদ্ধি। এই উপাদানটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে চুলের অকাল পাকা রোধ করতে।
চুল পড়া রোধ করতে ভৃঙ্গরাজ
ভৃঙ্গরাজে ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগ্নেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো আছে, যা চুলের যত্নে ব্যবহৃত প্রায় সকল উপাদান রয়েছে এর মধ্যে। এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা আদ্র অঞ্চলে হয়ে থাকে। ভৃঙ্গরাজ বহুল পরিচিত "চুলের রাজা" নামেও। এই ভেষজটিতে ফাইটোস্টেল, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং চুল বান্ধব বিভিন্ন উপাদান রয়েছে, তাই এটি চুল পড়া অনেক রোধ করে।
তাছাড়া ভৃঙ্গরাজ চুলের গোড়ার মধ্যে বৃদ্ধি করে রক্ত সঞ্চালন। ফলে প্রাকৃতিকভাবে ত্বরান্বিত করে চুলের বৃদ্ধিকে এবং সক্রিয় কর তোলে ফলিকলকে। এছাড়াও ভৃঙ্গরাজ মাথার ত্বকের সংক্রামণ ও খুশকি কমায়। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি ফাঙ্গাল। অ্যান্টি মাইক্ররিয়াল অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বিশিষ্ট। বিভিন্ন সুপার স্টোরে গুড়ো করা অবস্থায় পাওয়া যায় এটি।
মাথার ত্বকের সংক্রমণ ও শুস্কতা কমায় অ্যালোভেরা
চুলের চিকিৎসায় অ্যালোভেরার ব্যবহার অনেক পুরাতন। অ্যালোভেরায় রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা মাথার ত্বকের সংক্রমণ এবং নিরাময় করে শুস্কতা। এতে রয়েছে ভিটামিন "এ, সি এবং ই' যা ত্বরান্বিত করে চুলের বৃদ্ধিকে এবং চুলের ভেতর থেকে ফলিকলগুলোকে মেরামতসহ পুনরুজ্জীবিত করে।
অ্যালোভেরায় থাকা ভিটামিন বি ১২ আর ফলিক অ্যাসিডের অন্যতম একটি সমৃদ্ধ উৎস। এটি ব্যবহারে নিরাময় হয় বিভিন্ন সমস্যা, যেমন- চুলকানি, অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ এবং সেবোরিক ডার্মাটাইটিসকে কমাতে পারে। এছাড়াও এটি ব্যবহার করার ফলে শীতল, ময়েশ্চারাইজার এবং মাথার ত্বকে করে হাইড্রেট করে তোলে।
চুল বৃদ্ধি এবং ঘন করে ব্রাহ্মী ব্যবহারের ফলে
ব্রাহ্মী সাধারণত ব্যবহার করা হয় মস্তিস্কের কার্যকারিতা বাড়াতে। চুলের টনিক হিসাবে এই উপাদানটি ব্যাপক ব্যবহার হয়। আবার ব্রাহ্মী শুকনো এবং গুড়ো করে ব্যবহার করা যায়, চুলের হেয়ার প্যাক হিসাবে। ফলে চুল বৃদ্ধি এবং ঘন করতে এটি অনেক সাহায্য করে। মাথার খুশকি সমস্যার সমাধান করতে নারিকেলের সঙ্গে ব্রাহ্মী পাতা গরম করে প্রয়োগ করলে। বিভিন্ন সুপারসপে এটি যেমন পাওয়া যায় গুড়ো হিসাবে আবার সবজি হিসাবেও পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ ত্বকের যত্নে আনারসের তৈরী জাদুকরী মাস্ক টিপস
শেষকথা
আশাকরি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পেরেছি "চুলের যত্নে আয়ুর্বেদিকের গোপন রহস্য'' সম্পর্কে অনেক তথ্য। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আসাবাদি। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে ও উপকারি মনে হয় তবে, এটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url