যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখবেন
আরো পড়ুনঃ বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ
করলা বাংলাদেশের একটি অতি পরিচিত সবজি। করলা খেতে অনেকটাই তেঁতো হওয়ার ফলে এটি খেতা অপছন্দ করেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে করলাতে এতো পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে যে, যদি পুষ্টিকর সবজির তালিকা করা হয়, তবে সবার উপরে থাকবে যার নাম তা হলো করলা।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদে সঙ্গে শেয়ার করবো করলার উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও করলার সঙ্গে যে সব খাবার খাওয়া যাবেনা সে সম্পর্কে। আশাকরি আপনারা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে ফেলবেন। তাহলে আর দেরী নাকে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখবেন
- যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখবেন
- করলা নিয়মিত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ওজন
- করলায় থাকে পুষ্টিগুণে ভরপুর
- করলা খেলে ব্লাড সুগার থাকবে নিয়ন্ত্রণে
- করলা সাহায্য করে ক্যানসার প্রতিরোধে
- করলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- করলা অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস
- নিয়মিত করলা খেলে ভালো থাকবে ত্বক
- করলা ভালো রাখে হার্ট
- করলা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- করলা খেলে চোখ ভালো থাকে
- করলা দূর করে হজমের গণ্ডগোল
- প্রতি ১০০ গ্রাম করলার পুষ্টিগুণ
- করলার সঙ্গে যে সকল খাবার খাওয়া যাবেনা
- শেষকথা
যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখবেন
করলাতে থাকে প্রটিন, আয়রণ, সোডিয়াম। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার, কপার ও জিঙ্কসহ ভিবিন্ন প্রকারের ভিটামিন ও মিনারেল। এছাড়াও ক্যালসিয়াম, ডায়াটরি ফাইবার এবং পাওয়া যায় বিটা- ক্যারোটিন। এবার জেনেনিন "যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখবেন''।
করলা নিয়মিত খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ওজন
প্রতিদিন সিদ্ধ করলা খেলে বা পান করলে করলার জুস, বাড়বে বিপাকীয় হার। করলায় ফাইবার বেশি ও ক্যালোরির পরিমাণ কম পাওয়া যায়। তাই সবজিটি নিয়মিত খেলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে আপনার ওজন।
করলায় থাকে পুষ্টিগুণে ভরপুর
করলায় রয়েছে ভিটামিন 'এ এবং সি' ফলেট, আয়রণ ও পাটাসিয়ামসহ করলায় পাওয়া যায় দরকারি সকল ভিটামিন আর খনিজ পদার্থ। ফলে সবজিটি যদি প্রতিদিন খাওয়া যায় তবে দূরে থাকবে অনেক রোগ।
করলা খেলে ব্লাড সুগার থাকবে নিয়ন্ত্রণে
ইনসুলিনের ভারসাম্যতা এবং প্রাকৃতিকভাবে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এর জুড়ি মেলাভার, এর প্রতিকারের মত। রক্তের শর্করা থাকবে নিয়ন্ত্রণে করলা নিয়মিত খাওয়ার ফলে।
করলা সাহায্য করে ক্যানসার প্রতিরোধে
করলা বায়ো অ্যাক্টিভ ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর যৌগগুলো কোন বিশেষ ধরণের ক্যানসারের হাত হতে রক্ষা পেতে অনেক সাহায্য করে।
করলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
করলায় রয়েছে ভিটামিন "সি", খনিজসহ আরো বিভিন্ন প্রকারের ভিটামিন যা বাড়াতে সক্ষম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। পাশাপাশি উন্নত করতে পারে, লড়াই করার ক্ষমতা সংক্রমণের বিরুদ্ধে।
করলা অ্যান্টি অক্সিডেন্টের উৎস
করলায় শক্তিশালী পলেফেনল ও ফ্লাভোনয়েট পাওয়া যায়। যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে করতে পারে লড়াই ও ঝুঁকি কমাতে পারে দীর্ঘস্থায়ী রোগের। ইহা ছাড়াও নিশ্চিত করে বিপাকীয় স্বাস্থ্য।
আরো পড়ুনঃযে কারণে কালোজিরা নিয়মিত খাবেন
নিয়মিত করলা খেলে ভালো থাকবে ত্বক
করলায় রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা হ্রাস করে বার্ধক্যের লক্ষণ। এছাড়াও পরিস্কার করে এবং বের করে দেয় শরীরের দূষিত পদার্থ।
করলা ভালো রাখে হার্ট
করলা নিয়মিত খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। কারণ করলা সাহায্য করতে পারে খারাপ কোলেস্টেরেলের মাত্রা কমাতে।
করলা অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
নিয়মিত করলা খেলে উপকারি অন্ত্রের বৃদ্ধি করতে পারে ব্যাকটেরিয়া। যার ফলে স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
করলা খেলে চোখ ভালো থাকে
করলায় রয়েছে ভিটামিন 'এ' যার কারণে এটি খেলে ভালো থাকে দৃষ্টিশক্তি।
করলা দূর করে হজমের গণ্ডগোল
করলায় রয়েছে প্রয়োজনীয় ফাইবার, তাই এই সবজি নিয়মিত খেলে প্রতিরোধ করে কোষ্ঠকাঠিন্য ও আপনার হজমে অনেক সহায়তা করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম করলার পুষ্টিগুণ
সকল সবজির পুষ্টিগুণ বিবেচনা করলে দেখা যাবে সবচেয়ে সমৃদ্ধ সবজি হলো করলা। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। প্রতি ১০০ গ্রাম করলায় রয়েছে-
পুষ্টিগুণ পরিমাণ
- খাদ্যশক্তি ১৭ কিলোক্যালরি।
- প্রটিন ১ গ্রাম।
- কারবোহাইড্রেটস ৩.৭০ গ্রাম।
- ফাইবার ২.৮০ গ্রাম।
- সোডিয়াম ৫ মিলিগ্রাম।
- ম্যাগসিয়াম ১৭ মিলিগ্রাম।
- ক্যালসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম।
- পটাসিয়াম ২৯৬ মিলিগ্রাম।
- নিয়াসিন ০.৪০০ মিলিগ্রাম।
- ভিটামিন 'সি' ৮৪ মিলিগ্রাম।
- ভিটামিন 'এ' ৪৭১ মিলিগ্রাম।
- ফোলেট ৭২ মাইক্রোগ্রাম।
করলার সঙ্গে যে সকল খাবার খাওয়া যাবেনা
দই- স্বাস্থ্যের খুবই উপকারি করলা ও দই দুটোই। তবে হতে পারে বিপত্তি এক সঙ্গে এই দুই স্বাস্থ্যকর উপাদান খেলে। সেই সঙ্গে সমস্যা দেখা দিতেপারে আপনার ত্বকের।
আম- করলার সঙ্গে যদি আপনি খান আম, তবে হতেপারে অনেক ক্ষতি। কারণ এই দু'টি একসঙ্গে খাওয়ার কারণে সমস্যা হতে পারে হজমে। ফলে আপনার দেখা দেবে জ্বালাপোড়া, অ্যাসিডিসি ও বমি বমি উপসর্গ।
মূলা- করলা এবং মূলা এই দুটি সবজির কাজ একেবারেই আলাদা। তাই এই দু'টি একসঙ্গে খাওয়া হতে বিরত খাকুন কারণ একসঙ্গে খেলে সমস্যা হতে পারে গ্যাসের।
ঢ্যাড়স- ঢ্যাড়স এবং করলা কখনই একসঙ্গে খাবেন না কারণ এতে আপনার সমস্যা হবে পেটের।
আরো পড়ুনঃ পেঁপের খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শেষকথা
আশাকরি আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের "যে কারণে করলা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখ্বেন'' এর সম্পর্কে অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা অনেক আশাবাদী। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালোলাগে ও উপকারে আসে তবে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আমাদের আরো তথ্য বহুল আর্টিকেল পড়তে সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে, ভালো থাকুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url