ত্বকের যত্নে সবুজ চা গোলাপজল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
আরো পড়ুনঃ চুল ভালো রাখতে ১০ সাবধানতা
সুন্দর ও কোমল মসৃণ ত্বক সকলেরই কাম্য। আর এমন ত্বকের জন্য অনেকেই আছেন, যারা কি ব্যবহার করলে এমন ত্বক পাওয়া যাবে তা জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকেন। আপনিও যদি এমন কিছু খোঁজ করে থাকেন, তাহলে আপনি সঠিক যায়গাতেই এসেছেন।
কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ''ত্বকের যত্নে সবুজ চা, গোলাপজল ও ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল'' এর ব্যবহার সম্পর্কে। আশাকরি আপনারা আমাদের সঙ্গে থেকে পূরো আর্টিকেলটি মনোযোগের সঙ্গে পড়বেন এবং যেনে নিবেন এই সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- ত্বকের যত্নে সবুজ চা গোলাপজল ও ভিটামিন ই ক্যাপসুল
- ত্বকের যত্নে সবুজ চা পাতার উপকারিতা
- সবুজ চা এর টোনার তৈরির পদ্ধতি
- ত্বকের যত্নে গোলাপজলের উপকারিতা
- ত্বকের যত্নে গোলাপজল ব্যবহার পদ্ধতি
- ত্বকের যত্নে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের উপকারিতা
- ত্বকের যত্নে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল ব্যবহার পদ্ধতি
- শেষকথা
ত্বকের যত্নে সবুজ চা পাতার উপকারিতা
স্বাস্থ্যের জন্য সবুজ চা পাতার উপকারিতার কথা প্রায় সকলেরই জানা রয়েছে। কারণ এটি বিপাকহার উন্নত করা, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ শরীর থেকে 'টক্সিন' দূর করার ক্ষেত্রে এর জুড়ি মেলাভার। যারা প্রতিনিয়ত শরীরচর্চা করে থাকেন তাদের কাছে এই কোমল পানীয়ের রয়েছে অনেক বেশী কদর।
তবে সবুজ চা শুধু শরীরচর্চা জন্যই নয়, বর্তমানে এই পাতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে রূপচর্চার খেত্রেও। কারণ সবুজ চা ত্বককে আর্দ্র রাখে ভিতর থেকে। আপনার ত্বককে বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন সবুজ চা। চামড়া কুঁচকে হয়ে যাওয়া রোধ করতে সবুজ চা এমনকি ব্রণের সমস্যা সমাধানেও এর জুড়ি নাই।
বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে উঠেছে যে, সবুজ চায়ে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট উপাদান যা ঝুকি কমায় ত্বকের ক্যানসারের হাত হতে। অনেকের রোদে বের হলেই ত্বক লাল হয় ও জালা করে, এটা নিরসনে হতে পারে সবুজ চা অনেক উপকারি।
সবুজ চা এর টোনার তৈরির পদ্ধতি
একটি পাত্রে করে পানি ফুটিয়ে নিন। এবার এর মধ্যে সবুজ চা এর ব্যাগ দশ মিনিটের মতো ভিজিয়ে রাখুন। দশ মিনিট পর পাত্র থেকে চায়ের ব্যাগটি তুলে ফেলুন। তারপর পানির তাপমাত্র স্বাভাবিক হলে একটি স্প্রে বোতলে ভরুন। আপনি চাইলে প্রসাধনীটি রাখতে পারেন ফ্রিজে। ভালো কোন ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধোয়ার পর এই টোনারটি ব্যবহার করুন।
ত্বকের যত্নে গোলাপজলের উপকারিতা
সুন্দর ও নিখুঁত ত্বকের জন্য তালিকায় সবার উপরে রয়েছে গোলাপজলের নাম। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রূপচর্চায় ব্যবহার হয়ে আসছে গোলাপজল। কেননা গোলাপজলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ধরে রাখে ত্বকের আর্দ্রতা এবং সতেজ রাখে ত্বককে। পাশাপাশি আপনার ত্বককে করে তোলে দাগহীন ও উজ্জল।
ত্বকের যত্নে গোলাপজল ব্যবহার পদ্ধতি
নারিকেল বা বাদাম তেল ও আলিভ এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে ম্যাসেজ করুন আপনার ত্বকে। টিস্যু বা কটন প্যাডে ভালোকরে মোছার পর ব্যবহার করুন ফেসওয়াস। ত্বকের ভিতর থেকে সকল প্রকার ময়লা ও মেকাপ দূর করে গোলাপজলের ডাবল ক্লিনজিং থেরাপি।
আরো পড়ুঃ ত্বকের যত্নে আনারসের তৈরী জাদুকরী মাস্ক টিপস
এর জন্য আপনি এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে আধা কাপ গোলাপজল মিশিয়ে স্প্রেতে ভরিয়ে ভালোকরে ঝাকিয়ে নিন। এবার আপনি ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ভালো করে পরিস্কারের পর মিশ্রণটি ত্বকে স্প্রে করুণ। শুকিয়ে যাওয়ার পর দিনে লাগান সানস্ক্রিন এবং রাতে ব্যবহার করুন ময়েশ্চারায়জার। এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
এছাড়াও এক কাপ গোলাপজল, কয়েক ফোটা লেবুর রস এবং কয়েক ফোটা গ্লিসারিন একসঙ্গে মিশিয়ে আইস বক্সে করে ফ্রিজে রেখে বরফ বানিয়ে নিন। রাতে শোয়ার আগে ত্বক পরিস্কার করে আপনার বানানো আইসকিউব ত্বকে ভালো কর ঘুসে নিন। যার ফলে এটি রাতভর আপনার ত্বকের যত্ন নিবে। আবার শোয়ার আগে মুলতানি মাটি ও ফেসপেক গোলাপজলের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন এবং বিশ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন মেসেজ করে।
ত্বকের যত্নে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের উপকারিতা
আপনার ত্বকের যে কোন সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের উপর ভরসা রাখতে পারেন। এটি ত্বকে ব্যবহারের ফলে আপনি বাহ্যিক ও নজরকাড়া দ্যুতি পাবেন। আজকে আলোচনায় আপনারা যেনে নিবো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত সহজলোভ্য ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের ব্যবহার। আমরা অনেকে আছি যারা ডাক্তারের কোন পরামর্শ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ভিটামিন ক্যাপসুল খেয়ে থাকি।
এতেকরে স্বাস্থ্যের জন্য এবনকি শরীরে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরণের পার্শ্বপ্রতক্রিয়া। ফলে এটি ব্যবহারের ফলে আপনার বাহ্যিক এবং জীবনে ঘটতে পারে অনেক পরিবর্তন। ফার্মেসীতে সচারাচর দুই প্রকারের ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল পাওয়া যায়। একটি সবুজ এবং অপরটি হলুদ রঙের হয়ে থাকে।
সবুজ ক্যাপসুলগুলো হয়ে থাকে কম পাওয়ারের এবং হলুদ রঙ্গেরগুলো বেশি পাওয়ারের। তবে ত্বকের যত্নে সবুজ বা হলুদ যে কোন একটা ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল আপনি আপনার জন্য বেচে নিতে পারবেন, এতে কোন সমস্যা হবে না।
ত্বকের যত্নে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল ব্যবহার পদ্ধতি
- ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল নিয়মিত সেবনের ফলে, দীর্ঘদিন ধরে রাখতে সাহায্য করবে আপনার তারুন্যকে। এছাড়াও ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল ব্যবহারের কারণে, দূর হবে চোখের নিচের যেকোনো কালোদাগসহ বলিরেখা। আর এই জন্য ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের সঙ্গে খাটি বাদামের তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
- পক্সের দাগ বা ব্রণের দাগ এমনকি জেকোন পুরোনো দাগ দূর করতে প্রতিদিন দাগ বা খত স্থানে ম্যাসেজ করুন ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের তেল। কয়েকদিন এইভাবে ম্যাসেজ করলেই দেখবেন আপনার দাগ হারিয়ে যাবে।
- আপনার ত্বক যদি না হয় তৈলাক্ত তাহলে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুলের তেল ত্বকে লাগিয়ে ম্যাসেজ করুন। আর যদি আপনার ত্বক হয় তৈলাক্ত না হয় তবে, গোলাপজলের সঙ্গে এটি মিশিয়ে হালকাভাবে ম্যাসেজ করুন।
- আপনার বডি লোশন বা মুখের ক্রিমের সঙ্গে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করার ফলে নিশ্চিত করবে আপনার ত্বকের সুরক্ষা। অনেকে এই পদ্ধতি নাইট ক্রিমের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন ও ভালো কাজ করে।
- দীর্ঘ দিনের যে কোন দাগ বিশেষ করে হাটু ও কনুই এর গাড় ও কালো দাগ দূর করতে একদিন পর পর দাগের স্থানে ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও মসৃণ এবং গোলাপী ঠোট পেতে এই ক্যাপসুলের সঙ্গে লিপবাম কিংবা ভ্যাসলিনের সঙ্গে ব্যবহার করুন।
- ভিটামিন 'ই' অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর হওয়ার কারণে সাহায্য করে রক্ত সঞ্চালন সাভাবিক রাখতে। তাই ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ভিটামিন 'ই' ক্যাপসুল বার্ধক্য ঠেকাতেও অনেক বেশি কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url