কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস
আরো পড়ুনঃ মাসরুমের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপায়
অস্বস্তি! দিন- রাত শুধুই অস্বস্তিতে ভূগার অন্যতম কারণ কৃমি। গ্যাস্ট্রো ইন্টেস্টাইনাল নালীতে বসবাস করে এমন একটি পরজীবি প্রাণীর নাম হলো কৃমি। এই পরজীবি প্রাণীটি মানুষের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কৃমি সাধারনত মানুষের অন্ত্রে বাস করে ও বেঁচে থাকে মানব দেহের পুষ্টি গ্রহন করে ও বংশ বৃদ্ধি করে থাকে।
মানুষের মুখ বা লার্ভা হিসাবে ত্বকের মাধ্যমে কৃমির ডিম্বাণু শরীরে প্রবেশ করে। কৃমি বেশীরভাগ সময় আক্রমন করে মানুষের যকৃতসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো কৃমির বিভিন্ন দিক নিয়ে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক কৃমির সম্পর্কে-
আজকের পাঠ্যক্রম- কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস
- কৃমি কত প্রকার ও কি কি
- কৃমি হওয়ার বিভিন্ন কারণ
- কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস
- কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস- শেষকথা
কৃমি কত প্রকার ও কি কি
পরজীবি কৃমি অনেকটাই দেখতে কেঁচোর মতো। এটি দেখতে সাদা ও হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। পরিণত অবস্থায় ৬- ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত একটি কৃমি লম্বা হয়ে থাকে। কৃমি সাধারণত চার প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন-
- সুতা কৃমি।
- ফিতা কৃমি।
- গোল কৃমি।
- এবং বক্র কৃমি।
কৃমি হওয়ার বিভিন্ন কারণ
কৃমি সাধারণত অপরিস্কার শাক-সবজি, নোংরা খাবার, দূষিত পানি বা পোঁচা ফলমূলের মাধ্যমে আমাদের মুখে প্রবেশ করে কৃমির ডিম। এছাড়াও কৃমির ডিম আরো বিভিন্নভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে যেমন, অপরিস্কার হাতে খাবার খাওয়া, আক্রান্ত ব্যক্তির পোশাক থেকে।
এভাবে এর ডিম সেখান থেকে যায় খাদ্যনালির খুদ্রান্ত্রে এবং এনজাইম বা পাচকের সাহায্যে লার্ভা বের হয় ডিম থেকে। লারভাগুলো রক্তের মাধ্যমে যকৃত, ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ডে প্রবেশ করার মাধ্যমে শ্বাসনালী দিয়ে অন্ননালী দিয়ে প্রবেশ করে পাকস্থলীতে। সেখানে লার্ভাগুলো বড় হয় ও ডিম পাড়ে।
একটি স্ত্রী কৃমি প্রতিদন ডিম পাড়ে প্রায় দুই লাখ। এই ডিম হতে কৃমির বাচ্চা তৈরী হতে সময় লাগে ৩০/৪০ দিন। এই কৃমিগুলো মানুষের পায়খানার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। সেই মল থেকে লার্ভা ও কৃমির ডিম ত্বক বা খাবারের মাধ্যমে পুনরাই প্রবেশ করে সুস্থ মানুষের শরীরে।
আরো পড়ুনঃ পুদিনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস
ক্রিমিতে আক্রন্ত হলে দেখা দিতে পারে বেশ কিছু জটিলতা। যেমন- পুষ্টিহীনতা, শরীর বৃদ্ধিতে বাধাগ্রস্থ এবং দেখা দিতে পারে শরীরে রক্তশূন্যতার মতো সমস্যা। এই সমস্যার কারণে শিশুদের পেট ফুলা, শরীর ফ্যাকাসে ও দুর্বল, তীব্র পেট ব্যথা, শেখার বা বোঝার ক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি। বাজারে বেশ কিছু কৃমিনাশক বা বিরোধী ওষুধ পাওয়া যায়। যেমন-
এলবেনডাজল, লিভামিজল, পাইরেন্টাল পামোয়েট ও মেবেনজেমন-ইত্যাদি। এছাড়াও ঘরোয়া কিছু কৃমি নাশক উপাদান রয়েছে যেগুলো খাওয়ার মাধ্যমে এর হাত হতে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। সেগুলো নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো-
নারিকেল- কৃমি দূর করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে নারিকেল। এক্ষেত্রে আপনি এক টেবিল চামচ নারিকেল কুচি প্রতিদিন সকালে খান। ২/৩ ঘন্টা পর ২ টেবিল চামচ ক্যাস্ট্র অয়েল একগ্লাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে পান করুন।
গাজর- গাজরে রয়েছে ভিটামিন "এ এবং সি, জিঙ্ক, বিটা ক্যারোটিন যা বাড়িয়ে তোলো কৃমি প্রতিরোধ ক্ষমতা। এর জন্য আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটি গাজর কুচি করে খান।
আনারস- আনারসে থাকা ব্রোমেলিন এনজাইন বিশেষভাবে সাহায্য করে প্যারাসাইট কারার ক্ষেত্রে। একটি গবেষণার মাধ্যমে উঠে এসেছে যদি কেউ তিন বা চার দিন শুধু আনারস খেয়ে থাকে তাহলে সম্পূর্ণ কৃমি সরানো সম্ভাব হয়।
রসুন- অ্যান্টি প্যারাসাইটিক খাবার রসুন যা সাহায্য করে কৃমি দূর করতে। এছাড়াও অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে রসুনে, যা মেরে ফেলতে পারে পেটের কৃমি। এর জন্য আপনাকে এক সপ্তাহ নিয়মিত দুটি রসুনের কোয়া প্রিতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এছাড়াও দুটি রসুনের কোয়া আধা কাপ পানি দিয় সেদ্ধ করে এক সপ্তাহ নিয়মিত খেলে উপকার পাবেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ- দুই- তিনি টেবিল চামচ গুড়ো করা মিষ্টি কুমড়ার বীজ দুই-তিন কাপ পানিতে ভালোকরে ফুটিয়ে নিন বা এক টেবিল চামচ গুড়ো করা মিষ্টি কুমড়ার বীজের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে সকাল বেলা খালি পান করতে পারেন।
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার- খাওয়ার আগে এটি খেলে আপনাকে সাহায্য করে পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে। যার ফলে আপনার শরীরের জীবাণুর লার্ভা এবং প্যারাসাইড মারতে সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ- এক টেবিল চামচ ও সামান্য লবন কাঁচা হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান বা কাঁচা হলুদ গুড়োর সঙ্গে লবন মিশিয়ে আধাকাপ হালকা পানির সঙ্গে পাচ/সাতদিন খেলে অনেক উপকার পাবেন।
আরো পড়ুনঃ থানকুনি পাতার বিশেষ ১০ স্বাস্থ্য উপকারিতা
কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস- শেষকথা
আশাকরি আজকে "কৃ্মির হাত থেকে বাঁচার ঘরোয়া টিপস'' সম্পর্কে অনেক তথ্য আপনাদের শেয়ার করতে পেরেছি। তবে সুস্থ থাকা অবস্থায় এই টিপস গুলো অনেকটা নিরাপদ হলেও বিপদজ্জনক হতে পারে বেশী অসুস্থ হলে। তাই অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বিরত থাকাই ভালো কৃমি নাশক ওসুধ সেবন থেকে।
আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে ও উপকারি মনে হয়, তবে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url