কচু শাকের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
আরো পড়ুনঃ ত্বক ও চুলের যত্নে সজনা পাতার গুড়া
আমাদের দেশে অনেক ধরণের শাক রয়েছে। তার মধ্যে কচুশাক অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় শাক এটি। আবার এই শাক আমাদের দেশের সহজ লোভ্য এবং দামেও সবচেয়ে হালকা। কিন্তু এই শাকের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অন্য সকল শাকের চেয়ে উপরে। এছাড়াও এই শাক প্রচুর আয়রণ সমৃদ্ধ হওয়ার ফলে এই শাকের জনপ্রিয়তাও সবার উপরে।
আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন কমে গেলে চিকিৎস্যরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন কচুশাক খাওয়ার জন্য। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো "কচু শাকের উপকারিতা, অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ"সম্পর্কে। আশাকরি আপনারা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সঙ্গে পুরোটাই পড়নে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- কচু শাকের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
- কচু শাকে কিকি গুনাগুণ রয়েছে
- সবুজ ও কালো কচু শাকের পুষ্টিগুণ
- কচু শাকের উপকারিতা
- কচু শাকের অপকারিতা
- শেষকথা
কচু শাকে কিকি গুনাগুণ রয়েছে
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই শাক ছোট বড় সকল বয়সিদের কাছেই পছন্দনীয় একটি খাবার। জনপ্রিয় এই শাক আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য সবজি হিসাবে। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা কচু শাকের উপকারিতা ও গুনাগুণ সম্পর্কে। এই শাকে থাকে প্রচুর পারিমাণে ভিটামিন 'এ, বি, এবং সি। আরো রয়েছে আয়রন ও ক্যালসিয়ামসহ বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিগুণ যা অনেকেরই কাছে রয়েছে অজানা।
কচুশাক পুষ্টিগুণ ও ভিটামিনের জোগান দেওয়ার পাশাপাশি বড় ভূমিকা পালন করে রোগের পথ্য হিসাবে। কচুশাকে রয়েছে পর্যাপ্ত আঁশ যা মানব দেহের কার্যকর ভূমিকা পালন করে পরিপাকতন্ত্রের প্রক্রিয়ায়। এর পাতা শুধু শাক হিসাবে নয় এর আরেকটি অংশ যা মাটির (কচু) নিচে থাকে সেটিও স্বাস্থ্যকর একটি উপাদান। মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। কচু শাক সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে। যেমন- সবুজ ও কালো কচুশাক।
সবুজ ও কালো কচু শাকের পুষ্টিগুণ
নিম্নে প্রতি ১০০গ্রাম সবুজ ও কালো কচু শাকের পুষ্টিগুণ ছকের মাধ্যমে দেওয়া হলো-
কচু শাকের উপকারিতা
ভিটামিন আয়রন ও পুষ্টিতে পরিপূর্ণ এই শাকের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা মুসকিল। নিম্নে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ উপকারিতার কথা আলোচনা করা হলো-
আরো পড়ুনঃ মিষ্টিকুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা
*** এই শাকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো, কচু শাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস এবং ম্যাংগানিজ। এই জন্য আমাদের হাড় ও দাঁতের উপকারে এর তুলনা মেলা ভার। নিয়মিত কচু শাক খেলে দাঁত ও হাড় খুব ভালো থাকে। এছাড়াও এই শাক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে দাঁতের ক্ষয় রোধ করতে।
*** কচু শাকে ভিটামিন 'এ' রয়েছে প্রচুর পরিমাণে, যা আমাদের চোখে ছানি পড়া ও রাতকানাসহ চোখের নানান ধরণের রোগ প্রতিরোধের মাধ্যমে বাড়িয়ে দেয় দৃষ্টিশক্তি।
*** এই শাকে আছে যথেষ্ট পরিমাণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, যা অনেক ভূমিকা রাখে আমাদের দেহের বৃদ্ধি ও কোষ গঠন করতে। কচু শাকের মধ্যে থাকা ভিটামিন সাহায্য করে কোষ গঠনে।
*** কচু শাকে ভিটামিন 'সি' রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। ফলে এর লৌহ উপদান মানুষের দেহে খুব সহজে হয়ে যায় আত্মীয়করণ। তাছাড়া আমাদের শরীরের ক্ষয় সারতে ভিটামিন 'সি' অনেক সাহায্য করে। তাই আমাদের শিশুদের কচুশাক খাওয়ার অভ্যাস করানো উচিৎ।
*** বিভিন্ন ভিটামিনজুক্ত কচু শাকে খাদ্যাআঁশ থাকে প্রচুর পরিমাণে, যা দূরে রাখে অন্ত্রের অনেক রোগ। আমাদের পরিপাক ক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে দূর করে কোষ্ঠকাঠিন্য।
*** কচু শাকে আয়রন থাকে পর্যাপ্ত পরিমেণে। এই আয়রন রক্তশূন্যতা হতে আমাদের রক্ষা করে। এই কারণে যারা রক্তশূন্যতায় ভোগছেন তাদের কচু শাক খাওয়া আবাশ্যক।
*** ছোট বাচ্চাদের জ্বরের কারণে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায় দুধ ও কচুশাক খাওয়ালে। এটা কার্যকারী ভূমিকা পালন করে বড়দের ক্ষেত্রেও। শুধু তাই নয় ওল কচুর রস প্রতিষেধক হসাবে উচ্চরক্তচাপের রোগিদের খাওয়ালে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
*** কচু শাকে থাকা বিভিন্ন ধরণের খনিজ উপাদান ও ভিটামিন, যা শিশু ও গর্ভবর্তী মা বোনদের জন্য অনেক উপকারি। ভিটামিন ও আয়রণের ঘাটতি পূরণের জন্য সহজলোভ্য এই শাক খাওয়া সকল গর্ভবর্তীদের উচিৎ।
*** কচু শাকের ফোলেট ও আয়রন রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে আমাদের শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ থাকে পর্যাপ্ত। এতে থাকা ভিটিমিন প্রতিরোধ করে রক্তপাতের সমস্যা হতে।
কচু শাকের অপকারিতা
সকল কিছুরই উপকারিতা ও অপকারিতা বা ভালো ও মন্দ উভয় দিক বিদ্যমান থাকে। সে ক্ষেত্রে কচু শাকেরও অল্প পরিমাণি অপকারিতা রয়েছে। যেমন-
## অক্সটিল নামক উপাদান থাকার কারণে কচু বা কচু শাক খেলে অনেক সময় আমাদের গলা চুলকায়।এই জন্য কচু শাক রান্নার সময় এতে টক জাতীয় কিংবা লেবুর রস ব্যবহার করে উচিৎ।
## কচু শাক খেলে অনেক সময় আমাদের হতে পারে গ্যাসট্রিক এর সমস্যা।
আরো পড়ুনঃযে কারণে কাঁঠাল বেশী করে খাবেন
শেষকথা
আশাকরি আমরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সঙ্গে "কচু শাকের উপকারিতা অপকারিতা ও পুষ্টিগুণ'' শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আসাবাদি। আর্টিকেলটি যদি ভালোলাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তবেক এটি আপনার পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url