বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ
আরো পড়ুনঃ যে কারণে কালোজিরা নিয়মিত খাবেন
বাঙালী তথা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় খাদ্য তালের পিঠা। বাংলা প্রবাদ বাক্য রয়েছে "যেই মাসে যেই পিঠা ভাদ্র মাসে তালের পিঠা, ভাদ্র মাসে যদি না খান তাল পিছু ছাড়বে না আপনার কাল''। এখন চলছে ভাদ্র মাস আর ভাদ্র মাস মানেই শুরু হয়েছে তালের মৌসুম। এখন গ্রাম বাংলার প্রতিটি বাড়ীতে শুরু হয়েগেছে নানান ধরণের তালের পিঠা বানানোর উৎসব। তাল শুধু স্বাদের জন্য খাওয় তা কিন্তু নয়, পাকা তালে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ ও রোগের মহৌষধ হিসাবে কাজ করে।
এছাড়াও তালের রস এবং এর বিচি শরীরের পুষ্টি পূরণ করে। সেইসঙ্গে তালগাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশা পাশি আমাদের রক্ষা করে বজ্রপাত হতে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো তালগাছ ও তালের বিভিন্ন উপকার ও গুনাগুন সম্পর্কে। চলুন তাহলে আমরা দেখে নেই তাল ও তালগাছের সম্পর্কে-
আজকের পাঠ্যক্রম- বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ
- বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ
- তাল স্বাস্থ্যগুণে/ পুষ্টিগুণে ভরপুর
- প্রতি ১০০গ্রাম পাকা তালের পুষ্টিগুণ
- তালের স্বাস্থ্য উপকারতি জানুন
- শেষকথা
বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ
তাল ও তালগাছ সুস্বাদু খাবার ও ফলজ গাছ হিসাবে সকল মানুষের কাছে বেশ সুপরিচিত। সম্প্রতিকি সময়ে বাংলাদেশে বেড়েই চলছে বজ্রপাতের পরিমাণ। এতে ্দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপকভাবে প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে। তাই প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বজ্রপাত প্রতিরোধের জন্য বজ্রপাতপ প্রতরোধকারি হিসাবে পরিচিত তাল গাছের। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং বজ্রপাত প্রতিরোধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৭ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন সারা বাংলাদেশের প্রতিটি রাস্তার দুই পাশে রোপন করতে হবে তাল গাছের আঁটি বা চারা।
তাল স্বাস্থ্যগুণে/ পুষ্টিগুণে ভরপুর
কমলা রঙের দেখতে হয়ে থাকে অয়াকা তালের রস। পাকা তালের রস দেখতে সুন্দর ও খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এটি স্বাস্থ্যগুণে/ পুষ্টিগুণে ভরপুর। পাকা তালে থাকে ভিটামিন এ,বি,সি, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন ও জিংক। আরো প্র্যোজনীয় উপাদান রয়েছে, তা হলো অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি- অক্সিজেন।
প্রতি ১০০গ্রাম পাকা তালের পুষ্টিগুণ
পুষ্টির নাম পুষ্টির পরিমাণ
- খাদ্যশক্তি ৮৭ কিলো ক্যালরি।
- খাদ্য আঁশ ০১ গ্রাম।
- জলীয় অংশ ৭৭.৫ গ্রাম।
- শর্করা ১০.৯ গ্রাম।
- আমিষ .৮ গ্রাম।
- চর্বি .১ গ্রাম।
- ক্যালসিয়াম ২৭ মিলিগ্রাম।
- আয়রণ ০১ মিলিগ্রাম।
- ফসফরাস ৩০ মিলিগ্রাম।
- ভিটামিন সি ০৫ মিলিগ্রাম।
- থায়ামিন ০.০৪ মিলিগ্রাম।
- নিয়াসিন ০.৩ মিলিগ্রাম।
- রিভোফ্লাভিন ০.০২ মিলিগ্রাম।
তালের স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন পাকা তালের রসে থাকা ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আমাদের মানুষের শরিরের ঘাটতি পূরণ করে ভিটামিন বি এর। প্রতিরোধ করে এতে থাকা ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম এর ফলে হাড় ও দাতের ক্ষয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য কৃমি বা অন্ত্রের সমস্য রয়েছে তাঁরা অভ্যাস করতে পারেন তাল খাওয়ার।
যাদের প্রায়ি বুক ধড় ফড় করে তাঁরা প্রতিদিন নিয়ম করে চার চামচ তালের রস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে সকাল- বিকাল খেতে পারেন। এইভাবে সপ্তাহে খেতে হবে তিন/ চার দিন। এছাড়াও তালের রসের রয়েছে বিভিন্ন ধরণের উপকারিতা। চলুন দেখে নেওয়া জক উপকারিতা সমূহ-
*** পাকা তালের রসে লো- গ্লাওসেমিক ইনডেক্স থাকার ফলে পাকা তালের রস স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে কৃক্রিম চিনির। যা প্রতিরোধ করে ডায়াবেটিসের সূত্রপাত হতে। জনা গেছে খুব বেশি মাত্রায় শর্করা বাড়ে না খেজুরের গুড় খাওয়ার ফলে। তবে ডায়াবেটিস রোগীর কম খাওয়া উচিৎ খেজুরের গুড় বা চিনি।
*** তাল খাওয়ার ফলে সবচেয়ে উপকার পাওয়া যায়, কারণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নামক উপাদানটির ক্ষমতা রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধ করার। তাছাড়া পাকা তালের রস খাওয়ার ফলে আপনার ভুলে যাওয়ার প্রবণতা হতে মুক্ত করে প্রখর করে তুলবে আপনার স্মৃতিশক্তিকে।
*** উপকার পাওয়া যায় পুরুষত্বহীনতা রোগের হতে মুক্ত মেলে নিয়মিত তাল খাওয়ার ফলে। এছাড়াও বমি বমি ভাব দূর হয় পাকা তাল খেলে। আবার যদি আপনার পুরনো কাশি কোন ক্রমেই আপনার পিছু না ছাড়ে তবে প্রতিদিন নিয়ম করে পাকা তালের রস খেলে উপকার পাবেন।
*** তালের রস বাতের ব্যাথা দূর করতে বেশ উপকারি। আপনি যদি নিয়মিত ১০০ গ্রাম পাকা তালের রস কোন প্রকার পানি বা চিনি না মশিয়ে খান, তবে দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার বাতের ব্যাথা অনেক কমে যাবে।
*** একটি কচি তালের শাঁসে জলীয় অংশ রয়েছে প্রায় ৯৩ শতাংশ। এতে থাকা জেলেডিন খাওয়ার ফলে অনুভূতি জাগায় পেট ভরে যাওয়ার। সাহায্য করে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রনে।
*** পাকা তালের রস ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম কারণ এটি এন্ট্রি অক্সিডেন্ট গুণ সমৃদ্ধ। এছাড়াও স্মৃশক্তি বাড়াতে ও স্বাস্থ্য রক্ষায় পাকা তালের রস অনেক উপকারি।
*** মানুষের শরীরের ইলোকট্রোলাইট কোষের ভারসম্য বাজায় রাখে কচি তালের শাঁস। এটি একটি উপকারি খাবার যারা ডায়রিয়া বা বমি বমি ভাব রোগে আক্রান্ত।
*** লিভার সুরক্ষায় বেশ ভুমিকা রাখে কচি তালের শাঁস। লিভার সমস্যা দূর করে তালের শাঁস।
*** প্রচুর খাদ্য আঁশ থাকে কচি তালের রসে। তাই এটি বিভিন্নভাবে সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের সমস্যা সমাধান করতে।
*** ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম তালে প্রচুর পরিমাণে থাকার কারণে প্রতিরোধ করে হাড় ও দাতের ক্ষয়।
*** তালে ভিটামিন বি থাকার কারণে ভুমিকা রাখে ভিটামিন বি এর অভাব জনিত সকল প্রকার রোগ প্রতিরোধে।
আরো পড়ুনঃ সর্বগুণী আদার যত আছে গুণাগুণ
শেষকথা
আশাকরি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের "বজ্রপাত ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে তালগাছ'' এর বিভিন্ন উপকার সম্পর্কে অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্য বহুল আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে ভূলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url