বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ। এদেশের মানুষের অন্তরের সঙ্গে অতোপ্রতোভাবে জড়িয়ে আছে ইসলাম ধর্ম ও ধর্মের সকল বিষয় বস্তু। আর ইসলাম ধর্মের অন্যতম পবিত্র এবং গুরুত্ব স্থান হলো মসজিদ। মসজিদ শুধু নামাজ বা ইবাদতের জন্য নয়, ইসলাম ধর্ম আবির্ভাবের শুরুর দিকে মসজিদে বসে বিচার এমনকি দেশ পরিচালনা করা হতো।
হ্যাঁ পাঠক- পাঠিকাগণ আজকের আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন একটি মসজিদ এর সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো। আশাকরি আপনারা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সঙ্গে শুরু হতে শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং যেনে নিবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন এক মসজিদ সম্পর্কে। তাহলে দেরী নাকরে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
- প্রাচীন মসজিদ এর অবস্থান
- প্রাচীন মসজিদ এর ইতিহাস
- কিভাবে যাবেন সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
- কোথায় থাকবেন ও খাবেন সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
- শেষকথা
প্রাচীন মসজিদ এর অবস্থান
বাংলাদেশের একেবারে উত্তরের জেলা লালমনিরহাট জেলা সদরের ইউনিয়ন রামদাস মৌজার মসতার পাড়ায় এই প্রাচীন মসজিদটি অবস্থিত। ধারণা করা হয় এটি বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন ও প্রথম মসজিদ হিসাবে ।
প্রাচীন মসজিদ এর ইতিহাস
বহুকাল ধরে মসতার পাড়ার ওই স্থানটি জঙ্গল এবং উঁচু কয়েকটি মাটির ঢিপি দ্বারা আবদ্ধ ছিল। স্থানীয় লোকজন এই জায়গাটিকে মজদের আড়া নামে চিনতো বা ডাকতো। জমির মালিক পতিত ওই জমিটিকে আবাদযোগ্য করার জন্য ১৯৮৭ সালে জঙ্গল পরিস্কার করা শুরু করলে বেরিয়ে আসতে শুরু করে ইট। প্রাচীনকালে তৈরি ইটগুলোতে আঁকা ছিল ফুল।
আরো মাটি ও জঙ্গল পরিস্কার করলে আশ্চর্যজনকভাবে খুঁজে পাওয়া যায় ইটের তৈরি পূর্ণ একটি মসজিদের ভিত। এখানে আরো পাওয়া যায় একটি শিলালিপি যাতে সুস্পষ্ট ও সুন্দরভাবে আরবীতে লিখা ছিল ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হিজরি সাল ৬৯। উদ্ধার হওয়া শিলালিপির সূত্রে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সম্ভসবত ৬৯ হিজরিতে বা ৬৯২ খ্রিঃ মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল।
সম্পূর্ণ খননের পর মসজিদে খুদবার মিম্বার, মেহরাব এবং মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠ আবিষ্কৃত হয়। স্থানীয় লোকজন এর নাম দিয়েছেন "হারানো মসজিদ"। ঐতিহাসিকরা মনে করেন সাহাবি হজরত আবু ওয়াক্কাস (রাঃ) চীনে পাড়ি জমিয়েছিলেন এ অঞ্চল দিয়ে। বর্তমানে তার সমাধি এবং তার নির্মিত মসজিদ রয়েছে চীনের কোয়াংটা শহরের বিস্মৃত কোয়াংটা নদীর ধারে।
টিম স্টিল (ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক) দাবি করেন, খ্রিষ্টপূর্ব হতে তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্রর পাড় ধরে সিকিম হয়ে আরব ও রোমান বণিকদের চীনের মধ্য দিয়ে বাণিজ্য বহর যাতায়াত করার অনেক প্রমাণ রয়েছে তার কাছে। তার মতে এই মসজিদটি হতে পারে সাহাবি আবু ওয়াক্কাস (রা.) নির্মাণ করেছেন।
কিভাবে যাবেন সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
রংপুর- কুড়িগ্রাম মহাসড়কের ধরে এক কিলোমিটার দক্ষিণে এগিয়ে গেলেই আপনারা পেয়ে যাবেন লালমনিরহাট জেলা সদরের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়ন। আর রামদাস মৌজাটি এই ইউনিয়নেই যেখানে রয়েছে হারানো মসজিদখ্যাত মসজিদটি।
কোথায় থাকবেন ও খাবেন সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
যেহেতু হারানো মসজিদখ্যাত মসজিদটি লালমনির হাট জেলা সদরে। সেই কারণে লালমনির হাট জেলা সদরে বিভিন্ন মানের আবাসিক ও খাবারের হোটেল আছে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
শেষকথা
আশাকরি আমরা আপনাদের মাঝে বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাললাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url