ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি নীলফামারী
আরো পড়ুনঃ প্রাচীন গোলকধাম মন্দির পঞ্চগড়
বাংলাদেশের উত্তরের জেলা নীলফামারীতে অবস্থিত ''ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি''। হ্যাঁ আমাদের প্রাণ- প্রিয় পাঠক- পাঠিকাগণ আপনাদের মধ্যে অনেকেই এই দীঘিতে ভ্রমনের জন্য অথবা দর্শনীয় এই দীঘি সম্পর্কে জানার জন্য গুগোলে খোঁজ করে থাকেন।
আপনিও যদি এই ''ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি'' সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সাথে পুরোটাই পড়ে ফেলতে হবে। তাহলে আপনিও জানতে পারবেন এই দীঘি সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। তাহলে আর দেরী না করে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি নীলফামারী
- ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি কোথায় অবস্থিত
- ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি এর নাম করণ
- ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি খননের কারণ
- ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি কি দেখা যাবে
- বারুনী স্নান ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘিতে
- কিভাবে যাবেন ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি
- কোথায় থাকবেন ও খাবেন ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি
- শেষকথা
ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি কোথায় অবস্থিত
নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার জিরো পয়েন্ট চৌরাঙ্গী মোড় হতে উত্তর- পশ্চিম দিকে মাত্র ১৪ (চৌদ্দ) কিলোমিটার দূরে গোড়্গ্রাম ইউপির ধোপাডাঙ্গা গ্রামে প্রায় ৫৪ একর ভূমির উপর ''ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি'' অবস্থিত। এর চারিদিকের পাড় প্রায় ২১.৫ একর এবং বাকী ৩২.৫ একর জলাভাগ।
ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি এর নাম করণ
ধারণা করা হয়ে থাকে যে, বৈদিক রাজা বিরাট খনন করেন ঐতিহাসিক এই দীঘি এবং তাঁর নাম অনুসারে বিরাট দীঘি নামে এটি পরিচিত ছিল। পরবর্তী সময়ে রাজার মেয়ে বিন্নাবতীর নামে এই দীঘি বিন্না দীঘি নামেও বেশ পরিচিত ছিল। ১৯১৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ব্যাপকভাবে পরিচিত লাভ করে নীলসাগর নামে। বর্তমানে এই দীঘিটি ব্যাপকভাবে সংস্কার করে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর শীতকালে এখানে অসংস্য অতিথি পাখির আগমনে নীলসাগর হয়ে উঠে সরগরম।
ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি খননের কারণ
ধারণা করা হয়ে থাকে এই জলাশয়টি খ্রিষ্টপূর্ব অষ্টম কিংবা নবম শতাব্দীর কোনো এক সময় এর খনন কাজ শুরু করেছিল। অনেকের মতে, রাজা বিরাট এর বিশাল গরুর পাল ছিল। আর এই গরুর পালের খাবারের পানির ব্যবস্থা করতেই খনন করেন এই দীঘি এবং রাজা বিরাট তাঁর আদরের কণ্যা বিন্নাবতীর নাম অনুসারে এর নাম করণ করেন বিন্না দীঘি।
আরো পড়ুনঃ তিস্তা ব্যারেজ পর্যটন কেন্দ্র লালমনির হাট
পরবর্তী সময়ে ১৯৭৯ সালে এই দীঘিকে পর্যটন স্পট হিসাবে গড়ে তুলতে এবং পরিচিত লাভ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করেন তৎকালীন নীলফামারীর মহকুমা প্রশাসক এবং সচিব (অবঃ) এম এ জব্বার। নীলফামারী জেলার নাম অনুসারে এর নতুন নাম করণ করা হয় "নীলসাগর"।
ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি কি দেখা যাবে
নীলসাগর বিখ্যাত মূলতঃ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে। নীলসাগর এর পাড়ে রয়েছে সারি সারি নারিকেল গাছ, আকাশমণি, মেহগনি, বনবাবুল, শিশুসহ নাম না জানা অচেনা- অজানা বিভিন্ন ধরনের ফুল ও ফলের গাছ- গাছালি। একটি ছোট পার্ক রয়েছে এই দীঘির পাশেই। এই এলাকাকে ১৯৯৮ সালে ঘোষণা করা হয় পাখির অভয়ারাণ্য হিসাবে।
বারুনী স্নান ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘিতে
''ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘিতে'' সনাতন ধর্ম বা হিন্দুধর্ম সম্প্রদায় প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করে থাকে বারুণী স্নানের। সরকার অনুমোদিত একটি রেস্ট হাউস দীঘির পাশেই স্থাপন করা হয়েছে।
কিভাবে যাবেন ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি
ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি সড়ক পথে, রেল পথে ও আকাশপথে এই তিনভাবে যাওয়া যায়।
সড়ক পথে- সড়ক পথে ঢাকা হতে নীলফামারীর ৩৯৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ঢাকা গাবতলী হতে বেশ কয়েকটি বাস সৈয়দপুর, রংপুর ও নীলফামারীতে নিয়মিত চলাচল করে। এসকল বাসে করে খুব সহজে নীলফামারী গিয়ে ওখান হতে সিএনজি বা অটো রিক্সায় করে সাগর দীঘি যেতে পারবেন।
রেল পথে- রেলপথে বিভাগীয় শহর রংপুর যাওয়ার পর সড়ক পথে নীলফামারী যেতে পারবেন।
আকাশ পথে- আরম দায়ক ও সল্প সময়ে যাওয়ার জন্য আপনারা আকাশ পথে ৪০ মিনিটে সৈয়দপুর বিমান বন্দরে নামার পর বাস যোগে নীলফামারী যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন ও খাবেন ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি
নীলফামারী জেলা শহরে অনেক ধরণের আবাসিক ও খাবারের হোটেল রয়েছে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত (অল্প বা বেশী) টাকা খরচ করে নিরাপদে থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ মধুপুর জাতীয় উদ্যানের জীব বৈচিত্র
শেষকথা
আশাকরি আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের "ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি নীলফামারী" সম্পর্কে অনেক ধারণা দিতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশাকরি। বিশেষ করে "ঐতিহাসিক নীলসাগর দীঘি নীলফামারী" ভ্রমনের ক্ষেত্রে। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে ও উপকারি বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url