মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা
বাংলাদেশের সর্ব পশ্চিমের জেলা আমের রাজ্য হিসাবে খ্যাত চাপাই নবাবগঞ্জে অবস্থিত মূঘল তাহাখনা। হ্যাঁ আমাদের প্রাণ- প্রিয় পাঠক- পাঠিকাগণ আপনাদের মধ্যে অনেকেই এই ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে জানতে চান। আর আপনারাও যদি তাদের দলের একজন হয়ে থাকেন, তাহলে সঠিক জায়গাতেই আপনারা এসেছেন।
আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো ভারতের সীমান্ত ঘেসা বাংলাদেশের সর্ব পশ্চিমের জেলা চাপাই নবাবগঞ্জে অবস্থিত "মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা" এর সঙ্গে। আশাকরি আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পুরোটাই পড়েন তাহলে জানতে পারবেন আপনাদের কাঙ্খিত সেই তাহাখানা সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা
- মুঘল তাহাখানা কোথায় অবস্থিত
- মুঘল তাহাখানা কে নির্মাণ করেন
- মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা
- মুঘল তাহাখানা কিভাবে যাবেন
- মুঘল তাহাখানা কোথায় থাকবেন
- মুঘল তাহাখানা কোথায় খাবেন
- শেষকথা
মুঘল তাহাখানা কোথায় অবস্থিত
ঐতিহাসিক এই মুঘল তাহাখানা বা তাহাখানা কমপ্লেক্সটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর হতে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তরগত শাহাবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।
মুঘল তাহাখানা কে নির্মাণ করেন
তৎকালীন বাংলার সুবাদার "শাহ সুজা'' শীতকালে তাঁর মুর্শিদ শাহ সৈয়দ নিয়ামতুল্লাহর সম্মানে এবং শীত হতে তাঁর মুর্শিদকে কিছুটা আরাম দেওয়ার জন্য এই প্রাসাদটি নির্মাণ করেন তাপ নিয়ন্ত্রন একটি ইউনিট হিসাবে। সম্ভাবত ১৬১৯ হতে ১৬৫৮ কিংবা ১৬৩৯ হতে ১৬৬০ সাল পর্যন্ত মুঘল তাহাখানাটি মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র "শাহ সুজা" নির্মাণ করেছিলেন।
লোককথা আছে "শাহ সুজা" যখন তাঁর মুর্শিদের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, তাঁরা তখন তাহাখানার মাঝখানে অবস্থিত চওড়া সেই ঘরটি তাঁরা ব্যবহার করতেন। তাহাখানা কমপ্লেক্স বা "মুঘল তাহাখানা" এর ভিতর শাহ সৈয়দ নিয়ামতুল্লাহর কবরের সঙ্গে তাঁর সাথী বা খাদেম হিসাবে বিবেচিত অনেক নাম নাজানা ব্যক্তিদের কবর রয়েছে।
মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা
তাহাখানাটি হ্রদের উপর নির্মিত বলে এর নাম "দাফে-উল-বালাহ''। এই তাহাখানারে মতো প্রাচীন স্থাপত্য বাংলাদেশে খুবই কম দেখা যায়। এর পার্টিশন এবং সিলিং কংক্রিট দ্বারা ঢালাই মরীচির উপর জমাট বাধানো। হ্রদে ডুবে গেছে এর দু'টি তাকানো কেস। আরো দু'টি স্থাপনা রয়েছে প্রাসাদের উত্তর-পশ্চিমদিকে। এর কাছা- কাছি আরো দু'টি মসজিদ রয়েছে, এর একটি তিন গম্বুজ ও অপরটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। একই সময়ে নির্মিত সকল বিল্ডিং নিদিষ্ট উদ্দেশ্যে এবং বিবেচিত হয় জটিল ইউনিট হিসাবে।
এই ভবন নির্মাণের উপাদান ইট হলেও কালো পাথর থ্রেশহোল্ডে ও কাঠের ভিম মূল ছাদে ব্যবহার করা হয়। বিল্ডিংটি পশ্চিম দিক হতে দেখলে মনে হবে একতলা এর পূর্ব দিক হতে মনে হবে দু'ই তলা। খিলান পথ সরাসরি লেক হতে উত্থাপিত ঘর দ্বারা প্রসারিত। এর পশ্চিম দিকের একটি হাম্মাম এবং অষ্টভূজাকার জলাধার হতে সরবরাহ করে জল। "মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা" অষ্টভূজাকার টাওয়ারের সাথে ছোট একটি পারিবারিক মসজিদ ও একটি খোলা ঘর রয়েছে এর পিছনে।
মুঘল তাহাখানা কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা হতে বা দেশের যেকোনো জেলা শহর হতে সরাসরি শিবগঞ্জগামী বাস রয়েছে। ঢাকা গাবতলী ও কল্যাণপুর হতে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সকাল ৭ টা হতে রাত ১১ টা পর্যন্ত বাস চলা চল করে। মানভেদে এই সকল নন এসি এসি বাসের ভাড়া ৭০০ টাকা হতে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত।
মুঘল তাহাখানা কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য চাপাইনবাবঞ্জ জেলা শহরে অনেক মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। আর আপনারা যদি আরও ভালো মানের আবাসিকে থাকতে চান তাহলে রাজশাহী যেতে হবে। এখানে সকল ধরনের আবাসিক হোটেল আছে। মানভেদে এই সকল আবাসিকে ৩০০টাকা হতে ১৫০০টাকা জনপ্রতি ভাড়া লাগবে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত থাকার ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
মুঘল তাহাখানা কোথায় খাবেন
খাওয়ার জন্য আপনার উপজেলা সদর শিবগঞ্জ খেতে পারবেন। এখানে সকল ধরনের খাবারের হোটেল আছে। আর আপনারা যদি আরও ভালো খাবারে হোটেল চান তাহলে চাপাইনবাবঞ্জ জেলা শহরে বা রাজশাহীতে যেতে হবে। এখানে সকল ধরনের খাবারের হোটেল আছে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত খাবার সেরে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুন বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ
শেষকথা
আশাকরি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে "মুঘল আমলের স্মৃতি স্মারক মুঘল তাহাখানা" সম্পর্কে অনেক তথ্য আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক উপকারে আসবে, বিশেষ করে মুঘল তাহাখানা ভ্রমনের ক্ষেত্রে। যদি আজকের আর্টিকেলটি ভালো ও উপকারি মনে হয় তাহলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url