বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট্ট প্রাচীন দু'টি মসজিদ
কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার (নওগাঁ জেলা ঘেসা) সান্তাহার পৌরসভার অন্তর্গত মালশান ও তারাপুর গ্রামের প্রাচীন দু'টি ছোট্ট মসজিদ। আপনাদের মধ্যে অনেকেই গুগোলে খোঁজ করেন এই মসজিদ সম্পর্কে। আর আপনিও তাদের মধ্যে একজন হয়ে থকেন তাহলে আপনি ঠিক যায়গাতেই এসেছেন।
হ্যাঁ আমাদের প্রাণ প্রিয় পাঠক- পাঠিকাগণ আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো শত শত বছরের কালের সাক্ষী হয়ে জানান দেওয়া দেশের সবচেয়ে ছোট্ট প্রাচীন দু'টি মসজিদের সম্পর্কে। আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পড়েন, তাহলে আমরা আশাকরি আপনি আপনার কাঙ্খিত মসজিদ দু'টি পেয়ে যাবেন। দেরীকেন চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট্ট প্রাচীন দু'টি মসজিদ
- মসজিদ দু'টির অবস্থান
- মসজিদের বিবরণ
- মসজিদের ইতিহাস
- কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন ও কোথায় খাবেন
- শেষকথা
মসজিদ দু'টির অবস্থান
ঐতিহাসিক গ্রাম তারাপুর ও মালশনের অবস্থান বগুড়া জেলার শেষ সীমানা (নওগাঁ জেলা ঘেসা) আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌরসভায় পাশা- পাশি দু'ই গ্রামে দু'টি মসজিদ অবস্থিত। একেবারেই সান্তাহার শহর সংলগ্ন।
মসজিদের বিবরণ
শত শত বছরের পুরনো এই ছোট্ট মসজিদ দু'টিতে এখন আর কেউ নামাজ পড়েনা। একসঙ্গে ৩ (তিন) জন নামাজ পড়তে পারবে তারাপুর মসজিদে এবং মালশনের অপর মসজিদ- এ একসঙ্গে ৫ (পাঁচ) জন নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল। তারাপুর গ্রামে অবস্থিত মসজিদের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ ৮ (আট) ফুট আর উচ্চতা ১৫ (পনেরো) ফুট। মসজিদে প্রবেশের জন্য দরজা চওড়া ১.৫ (দেড়) ফুট ও উচ্চতা ৪ (চার) ফুট। কোন রকমে আকজন মানুষ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
মসজিদে একসঙ্গে ৩ (তিন) জন নামাজ পড়তে পারবে। মসজিদের উপরে সামান্য উঁচু একটি গম্বুজ ও গম্বুজের ওপরে মিনার ছিল যা ভেঙ্গে গেছে অনেক আগেই। আকারে খুব ছোট-ছোট ইট দিয়ে তৈরি ১.৫ (দেড়) ফুট পুরু দেয়াল। দু’টি সুন্দর খিলান আছে মসজিদের দরজায়। স্থাপনাটি চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি এবং এতোটাই পুরনো যে আপনি প্রথমে দেখলে বুজতেই পারবেন না এটা মসজিদ। তবে মসজিদের ভিতরের দরজার ঝিলান, মেহরাব এবং মেম্বার দেখে বুঝা যায় এটি একটি মসজিদ।
তারাপুর গ্রামের মসজিদের মতোই অপর একটি মসজিদ আছে মালশন গ্রামে। তবে দৈর্ঘ্য- প্রস্থ এবং উচ্চতায় তারাপুর মসজিদের চেয়ে মালশানের মসজিদ একটু বড়। কিন্তু মসজিদের নির্মাণশৈলী একই ধরনের। এ মসজিদটি সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য কেউ জানে না। অনেকের মতে এই মসজিদ ২ (দুই) টি উপমহাদেশে সবচেয়ে ছোট মসজিদ।
মসজিদের ইতিহাস
ঐতিহাসিক এই মসজিদের দু'টির ভিত্তি সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে, নাটোর রাজবাড়ীর রাজা রামাকান্তের স্ত্রী রাণী ভবানীর বাবার বাড়ি সান্তাহার শহরের পাশে ছাতিয়ান গ্রামে ছিল। এক সময় সান্তাহারসহ পুরো এলাকা রাণী ভবানির স্বামী পরবর্তীতে রাণী ভবনির রাজত্বের অংশ হওয়ার সুবাদে রাণী ভবানির ছাতিয়ান গ্রামে আসা যাওয়া ছিল। লোকশ্রুতি আছে তারাবানু নামে পরহেজগার একজন মুসলমান মহিলার বাস ছিল এই গ্রামে।
কিন্তু এলাকা হিন্দু প্রধান হওয়ার কারণে ইবাদত-বন্দেগি ও নামাজ পড়তে ওই মুসলিম মহিলার অনেক সমস্য হতো। এক সময় এই কথা সয়ং রাণী ভবানি জানতে পারেন এবং চলে আসেন নিজেই এই গ্রামে। আর সেই মহিলার জেন নামাজ পড়াসহ ধর্মীয় ইবাদতে কনো অসুবিধা না হয় সেই দিকে নজর দেওয়ার জন্য পেয়াদাদের হুকুম দেন এবং একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়ার হুকুম দেন। আর মিসজিদের গোড়াপত্তন ঘটে এভাবেই।
কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন ও কোথায় খাবেন
বাংলাদেশের যেকোনো জেলা শহর হতে ট্রেন বা বাস যোগে সান্তাহারে যাওয়া জায়। থাকা ও খাওয়ার জন্য সান্তাহারে সব ধরণের আবাসিক ও খাবারের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও ৫ (পাঁচ) কিলোমিটার দূরে নওগাঁ জেলা সদরে গিয়ে আপনি আপনার সাধ্যমত থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
শেষকথা
আশাকরি আমরা আপনাদের মাঝে বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট্ট প্রাচীন দু'টি মসজিদ এর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাললাগে ও উপকারি বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url