গ্রিন ভ্যালি পার্ক লালপুর নাটোর

আরো পড়ুনঃ হালতির বিল সমুদ্রের অভাব অনেকটাই পূরণ করছে

রাজশাহী বিভাগ তথা সারা দেশের বিনোদন প্রেমীদের বিনোদনের মূল কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে এখন নাটোর জেলার লাল্পুরে অবস্থিত "গ্রিন ভ্যালি পার্ক"। 

হ্যাঁ আমাদের প্রাণ- প্রিয় পাঠক- পাঠিকাগণ আমরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ইতিহাস আর ঐতিহ্যে ভরপুর লাল্পুরের "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" সম্পর্কে। 

আমরা আশাকরি আজকের এই তথ্য বহুল গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু হতে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই আপনারা মনোযোগের সঙ্গে পড়বেন এবং জেনে নিবেন "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য বিস্তারিতভাবে। তাহলে আর দেরি নাকরে দেখে নেওয়া জাক-

আজকের পাঠ্যক্রম- গ্রিন ভ্যালি পার্ক লালপুর নাটোর

  • পার্কের অবস্থান
  • গ্রিন ভ্যালি পার্ক লালপুর নাটোর
  • যা দেখতে পাবেন এই পার্কে
  • শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা
  • শ্যুটিং এবং পিকনিক স্পট
  • পার্ক খোলার সময় ও প্রবেশ মূল্য
  • কিভাবে যাবেন
  • কোথায় থাকবেন ও খাবেন
  • শেষকথা

পার্কের অবস্থান

এ সময়ের সকল বিনোদন পার্কে ছাড়িয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে কাছের জেলা নাটোরের লালপুর উপজেলায় অবস্থিত। পার্কটি লালপুর উপজেলা সদর হতে মাত্র ২ (দুই) কিলোমিটার দূরে।

গ্রিন ভ্যালি পার্ক লালপুর নাটোর

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলায় ১২৩ (একশত তেইশ) বিঘা জমির উপর "গ্রিন ভ্যালি পার্কটি" নির্মিত। দেশেরসব দর্শনীয় স্থানকে লালন করে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সবকিছুতেই ভরপুর এই নাটোর জেলা। "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" ঐতিহ্য আর সৌন্দর্যকে রাঙিয়ে তুলেছে আরো এক ধাপ। 

এই পার্কটি গড়ে তোলা হয়েছে সুন্দর ও মনোরম এক পরিবেশে। পার্কটি্র চারিদিকে রয়েছে বাহারি সব ফুল, আর এই ফুলগুলোর ছড়ানো সুবাস যে কাউকে সহজেই মুগ্ধ করবে। পার্কের মধ্যে রয়েছে দর্শনার্থীদের বসার জন্যে মনোরম সব জায়গা। এমনকি বিশাল বড় মাঠ রয়েছে দর্শনার্থীদের খেলাধুলা করার জন্যে।

যা দেখতে পাবেন এই পার্কে

আপনারা পার্কের ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রথমে হরেক রকম বাহারি ফুলের দেখা মিলবে। একটু এদিক সেদিক চোখ ফিরাতেই আপনাদের চোখে পড়বে ডলফিনের মুখ দিয়ে পানি বের হওয়ার দৃশ্যসহ মা হাতি ও তার বাচ্চারা ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং পাশেই দেখা মিলবে ঝাউ বনের যা সকল দর্শনার্থীদের নজর কেড়ে নিবে। এগুলো ছিলো কেবল রাস্তার ডান দিকের দৃশ্য, এবার তাকান হাতের বাম দিকের সৌন্দর্য- এ ভরপুর দৃশ্যগুলো। 

আরো পড়ুনঃ নৌকা ভ্রমনের জন্য গাজানার বিল

বিশাল আকৃতির ডায়নোরসরের ভাস্কর্য এবং কাঠ দিয়ে বানানো বিশাল আকারের নৌকা। যেখানে দর্শনার্থীরা ইচ্ছে করলে বসে সময় কাটাতে পারবে আয়েশ করে। তাছাড়াও আপনার চারিপাশে দেখা মিলবে দেশের বিলুপ্তপ্রায় অসংখ্য প্রজাতির গাছ। 

এবার একটু হাটাচলা করুন দেখতে পাবেন প্রায় ৩০ (ত্রিশ) একর জমির উপর আঁকাবাঁকা লেকের যা কৃত্রিমভাবে গড়ে তোলা হয়েছে দর্শনার্থীদের স্প্রিডবোটে করে লেক ঘুরে দেখার জন্য।

"গ্রিন ভ্যালি পার্কের" সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো লেকের উপর নির্মিত সেতু যা সকল পর্যটকে আকৃষ্ট করে তোলে। লেক পেরিয়ে উত্তরে একটু এগিয়ে গেলেই আপনাদের সমনে পড়বে হিমালয়ের মত করে নির্মিত পাহাড় আর ভূতড়ে বাড়ির এবং ভীড় জমে আছে ঝর্ণার পানিতে গোসল করার জন্য অসংখ্য মানুষ।

শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা

শিশুদের বিনোদনের জন্য এই পার্কে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্পট হলো, নাগরদোলা, প্যাডেল বোট, বুলেট ট্রেন, পাইরেট শিপ, হানি সুইং, ম্যারিগোরাউন্ড। বুলেট ট্রেনের যাত্রী হয়ে শিশুরা পার্কের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে খুব সহজে যেতে পারে।

শ্যুটিং এবং পিকনিক স্পট

এখানে দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য আছে শ্যুটিং এবং পিকনিক স্পট। "গ্রিন ভ্যালি পার্কে" এসে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীরা পিকনিক করেন। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শুটিং করতে আসেন এই পার্কের শ্যুটিং স্পটে। 

এখানে আরো রয়েছে কনসার্ট ও প্লে গ্রাউন্ড, অ্যাডভেঞ্চার রাইডস এবং সভা সেমিনার করার জায়গা। এতসব কারণে "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" এখন  সারাদেশের দর্শনার্থীদের নিকট বিশাল এক পর্যটন কেন্দ্রে হিসাবে পরিণত হয়েছে।

পার্ক খোলার সময় ও প্রবেশ মূল্য

"গ্রিন ভ্যালি পার্ক" প্রতিদিন সকাল নয়টা হতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নিয়মিত খোলা থাকে। এখানে প্রতিজন দর্শনার্থীর জন্যে প্রবেশ মূল্য মাত্র ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা। (তবে বাংলাদেশের ঋতুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময় পরিবর্তন হয়ে থাকে)। 

  • গাড়ি পারকিং ফি- ১০ টাকা হতে ৩০০ টাকা।
  • ওয়াটার পার্ক লকার ফি- ৫০ টাকা হতে ৫০০ টাকা।
  • ওয়াটার পার্ক টিকিট- ২৫০ টাকা।
  • প্রতি রাইডের টিকিট ৩০ টাকা হতে ৬০ টাকা।

কিভাবে যাবেন

ট্রেন- ট্রেন যোগে গেলে আপনাদের প্রথমে ঈশ্বরদী জংশনে নামার পর বাঘা উপজেলা সদরে যেতে হবে। এখান হতে অটোরিক্সা, সিএনজি বা ভ্যানে করে ৩০ বা ৪০ টাকা ভাড়ায় "গ্রিন ভ্যালি পার্ক"- এ যেতে পারবেন।
বাস- বাসযোগে গেলে আপনাদের প্রথমে বাঘা উপজেলা সদরে যেতে হবে। এখান হতে অটোরিক্সা, সিএনজি বা ভ্যানে করে ৩০ বা ৪০ টাকা ভাড়ায় "গ্রিন ভ্যালি পার্ক"- এ যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন ও খাবেন

থাকা ও খাওয়ার জন্য আপনাদের নাটোর জেলা সদরে জেতে হবে। এখানে অনেক ধরণের আবাসিক ও খাবারের হোটেল আছে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন। মানভেদে আবাসিক হোটেল ভাড়া ৩০০ টাকা হতে উপরে। 

শেষকথা

আশাকরি আমরা আপনাদের মাঝে "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক কাজে লাগবে, বিশেষ করে "গ্রিন ভ্যালি পার্ক" ভ্রমনের ক্ষেত্রে।

আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাললাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url