ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি ঘুরে আসুন তালের মৌসুমে
আরো পড়ুনঃ শহীদ জিয়া শিশু পার্কে ঘুরা ফিরা
তালগাছগুলো যেন প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে আর মাথা নুইয়ে দূর- দূরান্ত হতে আসা ভ্রমন পিপাসুদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছে। হ্যাঁ বন্ধুগণ আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো এসময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমন স্পট বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে খ্যত নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গার তালাতলি সম্পর্কে।
আশাকরি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনারা শুরু হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পুরোটাই পড়বেন। আর জেনে নিবেন ঘুঘুডাঙ্গার তালগাছ সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য বিস্তারিতভাবে। তাহলে আর দেরিকেন, চলুন দেখে নেওয়া যাক-
আজকের পাঠ্যক্রম- ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি ঘুরে আসুন তালের মৌসুমে
- তালতলির অবস্থান
- ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি ঘুরে আসুন তালের মৌসুমে
- তালতলি রাস্তার ইতিহাস
- তাল পিঠার মেলা
- কিভাবে যাবেন ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি
- কোথায় খাবেন ও থাকবেন ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি
- শেষকথা
তালতলির অবস্থান
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার হাজীনগর ইউনিয়নে অবস্থিত ঘুঘুডাঙ্গার তালাতলি। এটি নওগাঁ জেলা সদর হতে প্রায় ৬০ (ষাট) কিলোমিটার এবং নিয়ামতপুর উপজেলা হতে মাত্র ১৫ (পনেরো) কিলোমিটার।
ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি ঘুরে আসুন তালের মৌসুমে
বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে খ্যাত নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘুঘুডাঙ্গার- কাপাস্টিয়া সড়ক যা তালতলি নামে পরিচিত। রাস্তার দুই পাশে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছগুলি যেন, ক্লান্ত পথিক কিংবা ভ্রমন পিপাসুদের মাথা নুয়িয়ে ডাকছে।
প্রায় ২ (দুই) কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে সারিসারি তালগাছের নয়নাভিরাম এই দৃশ্য দেখলে যেকারো মন ভরে যায়। একটা সময় ছিল গ্রাম- বাংলার পুকুর পাড় কিংবা রাস্তার ধারে দেখা মিলতো অসংখ্য তাল গাছের কিন্তু সেসব আর চোখে পড়না।
আরো পড়ুনঃ গ্রিন ভ্যালি পার্ক লালপুর নাটোর
সব তালগাছ যেন হারিয়ে গেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু জেলা শহর হতে প্রায় ৬০ (ষাট) কিলোমিটার দূরে নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নে ঘুঘুডাঙ্গা- কাপাস্টিয়া রাস্তার দুই ধারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে শত শত তালগাছ।
রাস্তারটিকে আরো সৌন্দর্যময় করে তুলেছে তালগাছগুলো। এক অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করেন রাস্তাদিয়ে চলা পথিক। রাস্তার দুই ধারে রয়েছে সবুজে ঘেরা ফসলের খেত। এছাড়াও এই রাস্তার পাশেই রয়েছে পদ্ম পুকুর।
যেখানে হাজার হাজার পদ্ম ফুটে আছে এবং এর শোভা বাড়িয়েছে লাল- বেগুনী শাপলা ফুল। এতোসব নয়নাভিরাম ও সৌন্দর্যময় রাস্তা দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে প্রতিদিন হাজার হাজার ভ্রমনকারী ছুটে আসেন। আপনারাও ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি ঘুরে আসুন তালের মৌসুমে।
তালতলি রাস্তার ইতিহাস
নিয়ামতপুর উপজেলার হাজিনগরে অবস্থিত কাপাস্টিয়া হতে ঘুঘুডাঙ্গা সড়কটি মেঠোপথ ছিল। বাংলাদেশের সরকারের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার ১৯৮৬ সালে অত্র ইউপির চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তিনি রাস্তার দুই ধারে তাল্বীজ বা তালের আঁটি রোপন করেছিলেন।
যা বরতমানে বিশাল তালগাছে পরিণত হয়েছে। ২০১২-২০১৩ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন এর আওতায় রাস্তাটি পাকা করণ করা হয়। বর্তমানে এখানে প্রায় ৬ (ছয়) শতটি তালগাছ শোভা বর্ধন এক পায়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
আর এই তালগাছের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত বা দূরা দূরান্ত হতে পরিবার, আত্মীয় কিংবা বন্ধু- বান্ধবসহ ছুটে আসছে।
তাল পিঠার মেলা
এখানে স্থানীয় উদ্যোগে গত কয়েক বছর হতে তালের মৌসুমে তাল পিঠার মেলা আয়োজন করা হয়। এই মেলাকে ঘিরে উৎসবে পরিণত আশ- পাশের গ্রাম গুলোতে। সারা বছর বিশেষ করে ছুটির দিনে এখানে পর্যটকদের বেশি আনাগোনা বাড়ে।
তবে দুই ঈদে ভ্রমন কারীদের উপস্থিতি এতো পরিমাণে বেড়ে যায় যে, রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন।
কিভাবে যাবেন ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি
তালগাছের এ নয়না ভিরাম দৃশ্য দেখতে আপনাদের সড়ক পথে নওগাঁ কিংবা রাজশাহী শহর হতে নিয়ামতপুর বা মহাদেবপুর আসতে হব। এরপর সড়কপথে সিএনজি কিংবা অটোরিকশা যোগে সরাসরি ঘুঘুডাঙা তালতলি সড়কে যাওয়া যাবে।
কোথায় খাবেন ও থাকবেন ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি
খাওয়া- খাওয়ার জন্য আপনাদের তালতলিতে বা .৫ (হাফ) কিলোমিটার দূরে কাপাস্টিয়া বাজারে হালকা নাস্তা বা ভাত খেতে পারবেন।
থাকা- থাকার জন্য আপনাদের জেলা শহর নওগাঁ বা বিভাগীয় শহর রাজশাহী যেতে হবে। এখনে সব ধরণের আবাসিক ও খাবারের হোটেল আছে। আপনারা আপনাদের সাধ্যমত থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে নিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ দিবর দিঘী একদিনের জন্য হলেও ঘুরে দেখুন
শেষকথা
আশাকরি আমরা আপনাদের মাঝে "ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি" সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। যা আপনাদের অনেক কাজে লাগবে, বিশেষ করে "ঘুঘুডাঙ্গার তালতলি" ভ্রমনের ক্ষেত্রে।
আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাললাগে ও উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল দেখুন। সবাই ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url