মিষ্টিকুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা

আমাদের দেশের বহুল পরিচিত একটি সবজি্র নাম মিষ্টি কুমড়া। এটি দেখতে যেমন সুন্দর খেতও তেমন সুস্বাদু। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই নাদুস-নুদুস ও মোটাসোটা সবজির উপকারিতা পুষ্টিগুণ সম্পরকে।

হ্যাঁ পাঠক পাঠিকাগণ আজকের আর্টিকেলে আমরা মিষ্টিকুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো। কারণ আপনাদের মধ্যে অনেকেই মিষ্টি কুমড়া সম্পর্কে জানতে চান বা জানার জন্য গুগোলে খুজেন। 

আপনারা যদি আজকের এই তথ্য বহুল প্রয়োজনীয় আর্টিকেলটি প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনাদের সেই খোজ নেওয়া তথ্যটি এখানেই পেয়ে জাবেন বলে আমরা আশা করছি। তাহলে আর দেরি কেন দেখে নেওয়া যাক সম্পর্কে-

মিষ্টিকুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা

আমাদের দেশে পরিচিত একটি সবজি হল মিষ্টি কুমড়া। ভাজি, ভর্তা বা ঝোল করে তো খাওয়া যায়, আবার এটি দিয়ে সুস্বাদু হালুয়া তৈরি করা যায়। যদি মিষ্টি কুমড়া খেতে পছন্দ না করেন মিষ্টি আপনি, তবে অনেক স্বাস্থ্যোপকারিতা থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি।

মিষ্টিকুমড়ায় আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, নিয়াসিন, ভিটামিন ই আলফা টোকোফেরল, থায়ামিন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ও উচ্চমাত্রার খাদ্য আঁশ। স্বাস্থ্য-সুবিধা- অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই শরীর ও ত্বকের জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করে।

বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এবং হূদেরাগ থেকে প্রতিরক্ষা দেয়। আর এর পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের ওজন কমাতেও সহযোগিতা করে এটি। খাদ্য আঁশের অন্যতম উৎস কুমড়ার বিচি। 

এটি হূৎস্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী। কুমড়ার বিচি ভেজেও খাওয়া যায়। আর এতসব গুণাগুণের কথা না জেনেই অনেকেরই পছন্দ তরকারি হিসেবে কুমড়া। আর এই সবজির পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা জানা থাকলে এর পছন্দের মাত্রা নিশ্চয় আরো বেড়ে যাবে।

মিষ্টিকুমড়া উপকারিতা

আমাদের পরিচিত যতগুলো উপকারি সবজি আছে এরমধ্যে অন্যতম মিষ্টি কুমড়া। মিষ্টি কুমড়া নিয়মিত খেলে শরীর ভালো থাকার পাশাপাশি ভালো থাকবে ত্বক ও চুল। এখন জেনে নিন এটির উপকারিতা সম্পর্কে-

ভিটামিন এ এবং সি- মিষ্টি কুমড়ায় ভিটামিন এ ও সি থাকার কারণে আমাদের শরীরের ভিটামিন এ ও সি এর অভাব দূর করে আমাদেরকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে। 

ত্বক ও চুল ভালো রাখে- মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি ও এ। ভিটামিন-সি ও এ থাকায় আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই উজ্জ্বল চকচকে চুল ও সুন্দর ত্বকের জন্য নিয়মিত এটি খেতে পারেন।

ওজন কমাতে- উচ্চ ফাইবারযুক্ত ও কম ক্যালোরি থাকা খাবার মিষ্টি কুমড়ায় ওজন কমাতে অন্যতম একটি খাবার। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার উচ্চ পটাসিয়াম কন্টেন্টও আপনার খুব সুন্দরভাবে শরীরের বাড়তি মেদটুকু সহজেই কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে। যারা শরীরের অতিরিক্ত ওজন ও মেদ নিয়ে বিব্রত তারা নিয়মিত এসব্জি খেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে- এটিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকার কারণে খাবার সহজেই হজম করতে সাহায্য করে। তাইতো কোষ্ঠকাঠিন্য ও  হজমশক্তি বৃদ্ধি দূর করতে মিষ্টি কুমড়ার জুড়ি মেলা ভার।

চোখের যত্নে- চোখের ছানি পড়া রোধসহ চোখের রেটিনা কোষ রক্ষা করে বিটা-ক্যারোটিন ও আলফা-ক্যারোটিনের মত ক্যারটিনয়েড। তাই আমাদের চোখকে সচল ও সুস্থ জন্য খাদ্য তালিকায় মিষ্টি কুমড়া যোগ করা যায়। 

এককাপ পরিমাণ রান্না করা মিষ্টি কুমড়া আমাদের সুস্বাস্থ্য রক্ষা করতে ও চোখের ভাল রাখতে অন্যান্য খাবার থেকে ওনেকগুণ বেশি কাজ করে। 

গর্ভবতী মা-বোনদের জন্য- গর্ভবতী মা-বোনেরা তাদের অনাগত সন্তানকে সুস্থ্য রাখার জন্য গর্ভবতী মা-বোনেরা মিষ্টি কুমড়া ও এর বীজ খেতে পারেন। গর্ভবতীদের রক্তস্বল্পতা দূরকরে অকাল প্রসবের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় মিষ্টি কুমড়া ।

রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে- আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে মিষ্টি কুমড়া অনেক ভূমিকা পালন করে। কারণ  মিষ্টি কুমড়াতে থাকে বিটাক্যারোটিন। বিটাক্যারোটিন হলো এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। 

এছাড়াও সবুজ, কমলা, হলুদ রঙের সবজিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তাই মিষ্টি কুমড়া ফ্রি রেডিকাল ড্যামেজ প্রতিরোধ করতে পারে।

মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা

সবজির আবর্জনা হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার বিচিকে আমরা ফেলে দেই। অথচ এটি আমাদের শরীরের জন্য কত যে উপকারী তা আমরা জানিনা। মিষ্টি কুমড়ার বিচি এন্টি অক্সিডেন্ট এরমত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। 

আবার কিছু কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে এর ভূমিকা অপরিসীম। এটি প্রোস্টেড এবং ব্লাডারের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

মিষ্টিকুমড়ার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টিকুমড়ায় রয়েছে-

উপাদান                          পরিমাণ

ভিটামিন এ                 ১৭,০০০ আই.ইউ

ভিটামিন সি                 ৯.৫ মিলিগ্রাম

পটাশিয়াম                 ৫৬৪ মিলিগ্রাম

ম্যাঙ্গানিজ                 ০.২৫ মিলিগ্রাম

ডায়েটারি ফাইবার         ৩ গ্রাম

মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা

প্রতিটি জিনিসের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আর ক্ষেত্রে মিষ্টি কুমড়ার অপকারিতা এর উপকারিতার তুলনায় বেশ কম। তবুও  এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। চলুন দেখি এর অপকারিতা সমূহ-

*** মিষ্টি কুমড়া যেহেতু ভিটামিন-এ এর একটি ভাল উৎস। তাই এই উপকারী ভিটামিনের পরিমাণ যদি শরীরে অতিরিক্ত হয় সেক্ষেত্রে গর্ভাবতি মা-বোনদের অনাগত সন্তানের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।

*** মিষ্টি কুমড়া বেশি পরিমাণে খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। এছাড়া এটি বেশি খাওয়ার ফলে গ্যাস বা পেট ফাঁপা হওয়ার মতো উপসর্গ অনুভূত হতে পারে, তাহলে এ বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শেষকথা

তাহলে আরকি মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে ইতি মধ্যেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, মিষ্টিকুমড়ার উপকারিতা পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 

গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার নিকটে অনেক উপকারী বলে মনে হয়েছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url