রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে বাংলাদেশ
আরও পড়ুনঃ বগুড়ায় রাত্রি যাপনের সেরা ৫ আবাসিক হোটেল
চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে বাংলাদেশ। আমাদের প্রাণপ্রিয় পাঠক পাঠকিগণ, আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানাবো এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া অথবা সর্বশেষ এখন যে পরিচিত রাসেল ভাইপার সাপ প্রসঙ্গে।
আপনারা যদি আজকের এই তথ্য বহুল প্রজনীয় আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এই বিষধর ও বিপজ্জনক সাপ সম্পর্কে অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন। যা আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। তাহলে আর দেরীকেন চলুন জেনে নেওয়া যাক রাসেল ভাইপার সাপ প্রসঙ্গে-
আজকের পাঠ্যক্রম- রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে বাংলাদেশ
- রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে বাংলাদেশ
- রাসেল ভাইপার কামড়ের প্রভাব
- রাসেল ভাইপার সাপ কোথায় দেখা যায়
- রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ের লক্ষণ
- রাসেল ভাইপার সাপ কামড়ালে কি করা উচিত
- রাসেল ভাইপার সাপ কামড়ের প্রতিরোধ ব্যবস্থা
- রাসেল ভাইপারের বিষে কি থাকে
- প্রতিষেধক
- এন্টিভেনম কোথায় পাওয়া যায়
- এন্টিভেনম এর দাম কত
- শেষকথা
রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে বাংলাদেশ
চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া (Daboia russelii) বাংলাদেশ অন্যতম একটি বিষধর সাপ এবং এই উপমহাদেশে প্রধান যে চারটি বিষধর সাপ রয়েছে এটি তার মধ্যে একটি। এটি ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত অত্যন্ত বিপদ জনক একটি সাপ। চন্দ্রবোড়া সাপ এর প্রথম বর্ণনা করেন ১৭৯৭ সালে জর্জ শ এবং ফ্রেডেরিক পলিডোর নোডার।
১৭৯৬ সালে প্যাট্রিক রাসেল তার প্রকাশিত একটি বই “অ্যান অ্যাকাউন্ট অফ ইন্ডিয়ান সারপেন্টস, কালেক্টেড অন দা কোস্ট অফ করোমান্ডেল” এ এই সাপটি নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। আর তার নামানুসারে এয় সাপটির নাম রাসেল ভাইপার সাপ নাম অনুসারে পরিচিত হয়। আর এখন বাংলাদেশের সর্বত্র চলছে রাসেল ভাইপার সাপ আতঙ্কে।
রাসেল ভাইপার কামড়ের প্রভাব
*** তীব্র ব্যথা ও ফোলাভাব- রাসেল ভাইপার যেখানে কামড় দেয়, সেই স্থানে তীব্র ব্যথা ও দ্রুত ফোলাভাব লক্ষ্য করা যাবে।
*** রক্তক্ষরণ হয়- রাসেল ভাইপার কামড়ে কারণে বিষের প্রভাবে রক্তক্ষরণ হয়। নাক, মাড়ি এবং মলদ্বার দিয়েও হতে পারে রক্তক্ষরণ।
*** লক্ষণ- আক্রন্ত রোগীর মাথাব্যথা, মাংস পেশী ব্যথা, বমি বমি ভাব, দুর্বলতা, ঘাম ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যাবে।
*** জটিলতা- খুব দ্রুত কিডনি ফেইলিওর ও হৃদস্পন্দন বন্ধ হওয়া এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
রাসেল ভাইপার সাপ কোথায় দেখা যায়
রাসেল ভাইপার সাপ হল বাংলাদেশ, ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যতগুলো বিষাক্ত সাপে আছে মধ্যে মধ্যে অন্যতম প্রাণঘাতী সাপ এটি। রাসেল ভাইপার সাপ সাধারণত ঘনবন, কৃষিজমি, ঝোপঝাড়, এমনকি এখন মানব বসতির সর্বত্রই এই সাপের দেখা পাওয়া যায়।
রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ের লক্ষণ
- ভাইপার কামড়ানোর স্থান লাল হওয়া, ফোলাভাব এবং তীব্র ব্যথা।
- বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব।
- হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া।
- প্রচণ্ড মাথাব্যথা করা।
- শ্বাসকষ্ট হয়া।
- খুব বেশী ঘাম ঝরা।
- চোখে ঝাপসা ঝাপসা দে্সা।
- রক্তচাপ কমে যাওয়া।
- পেশী প্যারালাইসিস হওয়া।
রাসেল ভাইপার সাপ কামড়ালে কি করা উচিত
প্রাথমিক চিকিৎসা- কামড়ানো স্থান সাবান ও জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আতঙ্কিত না হয়া। কারণ আতঙ্কিত হলে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কামড়ানো স্থানটি হৃদস্পন্দনের চেয়ে নিচে রাখুন আর যদি সম্ভব হয় তাহলে একটি পাতলা কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখুন। সর্বোত্তম চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সহায়তা নিন এবং দেরি না করে হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
রাসেল ভাইপার সাপ কামড়ের প্রতিরোধ ব্যবস্থা
সতর্কতা- সাপের উপস্থিতি এড়িয়ে চলুন।
সাপ ধরার চেষ্টা না করা- কারণ সাপ ধরা ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ।
উপযুক্ত পোশাক- সবসময় মোটা জুতা ও পোশাক পরিধান করুন।
আলো ব্যবহার- রাতের বেলা যদি বাইরে যান তবে অবশ্যই টর্চলাইট ব্যবহার করুন।
রাসেল ভাইপারের বিষে কি থাকে
রাসেল ভাইপার সাপ যা চন্দ্রবোড়া নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের একটি অন্যতম ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ। এই সাপের কামড়ে প্রাণ যেতে পারে, তাই দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। রাসেল ভাইপারের বিষে Hemotoxins, Neurotoxins এবং Cytotoxins নামক তিন ধরনের বিষাক্ত উপাদান থাকে।
Hemotoxins- এটি রক্তের কোষ ভেঙে ফেলে এর ফলে রক্তপাত হয়।
Neurotoxins- স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করার ফলে শ্বাসকষ্ট এবং পেশী Paralysis এমনকি আক্রন্ত ব্যক্তির মৃত্য হতে পারে।
Cytotoxins- রাসেল ভাইপারের বিষ টিস্যুর ক্ষতি করে।
প্রতিষেধক
রাসেল ভাইপার কামড়ের জন্য নির্দিষ্ট প্রতিষেধক (antivenom) রয়েছে। দ্রুত চিকিৎসা না করা হলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই, রাসেল ভাইপার কামড়ানো হলে দ্রুততম সময়ে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
এন্টিভেনম কোথায় পাওয়া যায়
- সারা দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায়।
- কিছু বেসরকারি হাসপাতালেও এন্টিভেনম পাওয়া জায়, সেক্ষেত্রে কিনে নিতে হবে।
- আবার ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক হেলথ ঢাকা থেকেও সরাসরি এন্টিভেনম সংগ্রহ করা যায়।
এন্টিভেনম এর দাম কত
- সকল সরকারি হাসপাতালে রাসেল ভাইপার এন্টিভেনম বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়।
- বেসরকারি হাসপাতালে এন্টিভেনমের মূল্য হাসপাতাল ভেদে এর দাম ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
- আরও পড়ুনঃ সান্তাহার হতে ছেড়ে যাওয়া সকল আন্তনগর ট্রেনের সময়সূচী
শেষকথা
পাঠক পাঠিকা আপনারা যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই রাসেল ভাইপার সম্পর্কে অনেক তথ্য জেনেছেন। যা আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করা এবং অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। কারণ রাসেল ভাইপার সাপের কামড় মারাত্মক হতে পারে। কোনও চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শের জন্য অবশ্যই একজন দক্ষ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভাল লাগে ও প্রয়োজনীয় মনে হয় তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url