সাপাহার আম বাজারের বিস্তারিত তথ্য
আরো পড়ুনঃ জমে উঠেছে সাপাহারের আম বাজার
চলছে আমের ভরা মৌসুম, হাটে, বাজারে, শহরে কিংবা বন্দরে যেখানে যাবেন সেখানেই দেখতে পাবেন শুধু আম আর আম। তাইতো আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের আমের রাজধানি হিসাবে পরিচিত নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহারের আম বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবো। আজকের আর্টিকেলটি আপনারা অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
আজকের পাঠ্যক্রম- সাপাহার আম বাজারের বিস্তারিত তথ্য
- সাপাহার আম বাজারের বিস্তারিত তথ্য
- জাতভেদে আমের দাম
- কোন এলাকায় আমের চাষ ভালো হয়
- আম বাজার জাত করণ প্রক্রিয়া
- আমের ওজন নিয়ে সিন্ডিকেট
- আমের ওজন নিয়ে সিন্ডিকেট
সাপাহার আম বাজারের বিস্তারিত তথ্য
আমের রাজধানীখ্যাত উত্তরের বরেন্দ্র জেলা নওগাঁর সাপাহার উপজেলা। জেলার সাপাহারে এখন জম- জমাট হয়ে উঠেছে আমের বাজার। এই আম বাজার উপজেলার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে পূর্বদিকে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার পশ্চিমদিকে প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণ ও উত্তর দিকে প্রায় .৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রাস্তার দু'পাশে আমের এই আমবাজার।
সাপাহারের বাজার প্রতিদিনি খুব ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত চলে আমের বেচাকেনা। এখানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নোয়াখালি, রংপুর, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ দেশের দেশের প্রায় বড় বড় শহর হতে ব্যবসায়িরা আম কেনার জন্য এই বাজারে আসেন।
জাতভেদে আমের দাম
সাপাহার সদরের বিভিন্ন আমের আড়তদার, আম ক্রেতা- বক্রেতা ও আমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে-
- আমের জাত বাজার দর
- ল্যাংড়া- ২৩০০- ৩৫০০ শত টকা
- নাকফজলি- ২৩০০- ২৬৫০ শত টাকা
- খিরসাপাত- ২৫০০- ৩৬০০ শত টাকা
- আম্রপালি- ২৫০০- ৪৫০০ শত টাকা
তবে আমের সঠিক দাম বলা মুসকিল। কারণ আমের দাম সাধারণত আমের কালার ও সাইজের উপর নির্ভর করে। চাষিদের কষ্টে উৎপাদিত আম বাজারজাত শুরু করেছে। দাম ভালো পেলে তারা লাভবান হতে পারবেন।
কোন এলাকায় আমের চাষ ভালো হয়
নওগাঁ জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা সাপাহার ও পোরশার প্রায় সকল এলাকা এবং ধামইরহাট ও নিয়ামতপুর উপজেলার কিছু অংশ বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই সকল বরেন্দ্র এলাকাইয় বছরে একটিমাত্র ফসল আমন ধান উৎপাদিত হত। যেটি পুরোটাই বৃষ্টি- নির্ভর ওপর নির্ভর করতে হতো কৃষকদের।
এই সকল বরেন্দ্র এলাকাইয় পানি স্বল্পতার কারণে অন্য কোন ফসল চাষ করা কোনভাবে সম্ভব হতো না। আর ধান উৎপাদন ভালো না হওয়ার কারণে ধানের বিকল্প হিসাবে সেসব জমিতে ধানের আবাদ কমিয়ে আম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। আম চাষ করে এসকল এলাকার চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
আরো পড়ুনঃ সাপে কামড়ালে যা করতে হবে ও যা করা যাবেনা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর পর্যন্ত এই জেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে আমবাগান গড়ে উঠেছে। চলতি বছর এসকল আম বাগান থেকে প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জেলার আম অত্যন্ত সুস্বাদু হয়ার কারণে ক্রেতাদের কাছেও রয়েছে এই এলাকার আমের চাহিদা।
আম বাজার জাত করণ প্রক্রিয়া
উপজেলা প্রশাসনের বাধাই করা সময় অনুসারে, গত ২২ জুন বৃহস্পতিবার থেকে সাপাহার এলাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় আম, আমের রাজা আম্রপালি বাজারে আসতে শুরু করেছে। এছাড়াও এখানে ল্যাংড়া, নাগফজলি, হিমসাগর, লখনা, চোষা, কাটিমন, ব্যানানা, হাড়িভাঙাসহ প্রায় সকল জাতের আম বাজারে সচরাচর এখন পাওয়া যাচ্ছে। খুব ভোর থেকে শুরু হয় আমপাড়া এবং বেলা বাড়ার সাথে সাথে এই আমগুলো ভ্যান, ভটভটি ও অটোরিকশাযোগে বাগান থেকে আম বাঝাই করে চলে আসছে বাজারে।
সাপাহার উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্ট হতে শুরু করে সাপাহার-নজিপুর সাপাহার- আগ্রাদিগুণ সড়কের ২- ৩ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে আম চাষিরা প্রখর রোদে আম বিক্রয়ের জন্য করে অপেক্ষা করেন। আমের দরদাম ঠিক হবার পর আম নিয়ে যাওয়া হয় আড়তে। প্রায় ২৩০টি মত ছোট বড় আমের আড়ত রয়েছে সাপাহারে। এই আড়ত গুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১২ কোটি টাকার আম বেচাকেনা হচ্ছে।
আমের ওজন নিয়ে সিন্ডিকেট
সাপাহার আম বাজার ঘুরে আম চাষিদের সঙ্গে কথা তারা জানান, এবার বছরের শুরু থেকেই ছিল অনাবৃষ্টি। য়ার কারণে আম উৎপাদন করতে গিয়ে আমাদের বাড়তি শ্রম ও অনেক বাশি অর্থ খরচ হয়েছে। অপরদিকে অনাবৃষ্টির জন্য আমের আকার যেমন ছোট হয়েছে এতেকরে আমের ফলন অনেক কম হয়েছে। তবে প্রথম থেকে আমের দাম ভালো থাকায় ঘাটতি পুশিয়ে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শেষকথা
তাহলে আপনারা তো জেনে গেলেন আমের রাজধানি হিসাবে পরিচিত সাপাহারের আমের বাজার সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটিতে ইতিমধ্যেই সাপাহারের আম সম্পর্কে অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনার যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, সাপাহারের আমের বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।
গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার নিকটে অনেক উপকারী বলে মনে হয়েছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url