পেঁপের খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেয়ারার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ঔষধি পুষ্টিগুণ

আমাদের বাংলাদেশের গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত এক ফলের নাম পেঁপে। পেঁপে্র উপকারিতা বা পুষ্টিগুণ যেমন প্রচুর, তেমনি এই ফল শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই কার্যকর। এটি আমাদের  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, হৃদযন্ত্র ভালো রাখে,  হজমের সমস্যা দূর করাসহ অনেকগুলো শারীরিক উপকারিতা করে পেঁপে্র মধ্যে বিদ্যমান।

আমাদের শরীরে জন্য পেঁপেতে থাকা ক্যারটিনয়েড খুবি উপযোগী। এর মধ্যে থাকা আঁশ শরীরের ভেতরের বিষাক্ত ভাব দূর করে বলে নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়। বিশেষ করে ব্রণ এবং ত্বকের ওপর নানা দাগ দূর করতে পারে কাঁচা পেঁপে। নিয়মিত পেঁপে খেলে মৃত কোষ সমস্যা দূর হয়।

আজকের পাঠ্যসূচীপত্রঃ

  • পেঁপের খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
  • পেঁপের গুনাগুন সমূহ
  • পেঁপের ক্ষতিকর দিক সমূহ
  • শেষকথা

পেঁপের খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পেঁপে খেতে অনেকটাই সুস্বাদু। ১০০ গ্রাম পেঁপেতে  ৩৯ ক্যালরি থাকে। হজমের জন্য এই ফল খুবই উপকারি। পেঁপেতে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ও অ্যালবুমিন এনজাইম থাকে। এছাড়াও পেঁপেতে  আছে প্রোটিন, আঁশ, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন এ,বি,সি,ডি। এফল অনেক রোগ সারাতে কার্যকর, এটা শত শত বছর ধরেই স্বীকৃত। অনেক ক্ষেত্রে পোকা মাকড়ের কামড়, অল্প পোড়ায় পরিত্রাণ পেতে পেঁপের জুস লাগালে উপকার পাওয়া যায়। 

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে পেঁপে কসমেটিকস তৈরিতে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হচ্ছে। পেঁপে মানুষের লিভার ও শরীরের সুগার স্বাভাবিক রাখে এবং অন্ত্রের ক্ষতিকর উপাদান দূর করে। নিয়মিত পেঁপে খেলে শরীর সতেজ হয় ও জীবনী শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। পাকস্থলীর অতিরিক্তি এসিড দূর করে, তাই যারা গ্যাস্ট্রিক ও বুক জ্বালায় ভুগছেন, তাদের জন্য পেঁপে খুব উপকারি একটি ফল। বাড়ন্ত শিশুর জন্য পেঁপে একটি আদর্শ খাবার।  

গবেষণা অনুসারে দেখা যায় যে, এই ফলে কিছু পরিমাণ সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড পাওয়া যায়।অতিরিক্ত পেঁপে খেলে অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের রোগীদের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও আমাদের শরীরের অ্যামিনো অ্যাসিড পাচনতন্ত্রে হাইড্রোজেন ও সায়ানাইড তৈরি করতে পারে।  অ্যালার্জিযুক্ত ব্যক্তি- যারা ল্যাটেক্স অ্যালার্জিতে ভুগছেন তাদেরও পেঁপে থেকে অ্যালার্জি হতে পারে। দেখে নেওয়া যাক পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা। চলুন তাহলে-

আরও পড়ুনঃযে কারণে শসা বেশী করে খাবেন

পেঁপের গুনাগুন সমূহ

*** রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ জাপানে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত পেঁপে খেলে এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট  আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আবার এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, পেঁপে গাছের মূল ও ফুল কিডনি রোগ, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস সারায়।

*** শরীরের যন্ত্রণা সারায়ঃ এফলে থাকা কাইমোপ্যাপিন ও প্যাপিন এনজাইম আমাদের শরীরের যন্ত্রণা সারাতে সাহায্য করে। আবার শরীরের কোথাও পুড়ে গেলে পেঁপের নির্যাস ব্যবহার করে স্বস্তি পাওয়া যায়।

*** কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ পেঁপেতে প্রচুর ভিটামিন ই, সি ও ফলেট থাকায় মল ত্যাগে সমস্যা বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেঁপে। পেঁপেতে থাকা আঁশ বাওয়েল মুভমেন্ট  স্বাভাবিক রাখে। এতে ফলে আমাদের মল ত্যাগের সমস্যা দূর হয়। কাঁচা পেঁপে ও তার জুস হজমে অনেক সহায়তা করে।

*** নারীদের  রজঃস্রাব সমস্যায়ঃ আমাদের মা বোনদের অনেকের অনিয়মিত রজঃস্রাব হয়, তাদের জন্য এফলের জুস  খুবই উপকারি। কাঁচা বা পাকা যে কোন পেঁপে খেলেই উপকার পাওয়া যায়।

*** ব্রণ সারায় পেঁপেঃ আমাদের মুখমণ্ডলে ময়লা জমার কারণে যে ব্রণের সৃষ্টি হয়, তা দূর করতে নিয়মিত পেঁপে খেলে আপনার ত্বক পরিষ্কার হবে। 

*** আথ্রাইটিস সারায়ঃ বেশ কিছু গবেষণায়  আরও জানা গেছে, কাইমোপ্যাপিন নামের এনজাইম থাকায় পেঁপে ওসটিওআথ্রাইটিস ও রিউমেটয়েড রোগ সারায়।

*** বার্ধক্যে দৃষ্টিশক্তিহীনতা দূর করেঃ মানুষের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার যে আশঙ্কা দেখা দেয়, তা দূর করতে নিয়মিত পেঁপে খাওয়া জরুরি। এই ফলে থাকা বিটা ক্যারোটিন নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।

পেঁপের ক্ষতিকর দিক সমূহ

যত উপকারি দ্রবই হক না কেন তার উপকারের পাশাপাশি ক্ষতিকর বা অপকারিতাও বিদ্যমান। সেক্ষেত্রে পেঁপেতেও একই গুণ বিদ্যমান। তাহলে দেখি ক্ষতিকর বা অপকারিতা গুলো-

*** কাঁচা পেঁপের রস বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। কাঁচা পেঁপের নির্যাস  আমাদের শরীরে চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। এটি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে আমাদের বদহজম, বিষক্রিয়া ও অ্যাবডোমিনালে ব্যথা হতে পারে।

*** এফলের কালো বিচিগুলোও শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ এগুলোতে টক্সিক এনজাইম কারপাইন থাকে, যা মস্তিষ্কে অসাড়তা তৈরি করে কার্ডিয়াক ডিপ্রেশন বা প্যারালাইসিস তৈরি করতে পারে।

*** পেঁপে কিন্তু গর্ভবতী নারীদের জন্যও খুবই ক্ষতিকর। ডাক্তারের পরামশ্য ছাড়া পেঁপে খেলে গর্ভপাতের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।

আরও পড়ুনঃ যে কারণে মিষ্টি আলু বেশী করে খাবেন

শেষকথা

যেনে গেলেন তো পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্ক। এই আর্টিকেলটিতে ইতোমধ্যেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 

গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার নিকট অনেক উপকারী বলে মনে হয়েছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭