যে কারণে কাঁঠাল বেশী করে খাবেন

আরও পড়ুনঃ যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন

বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি একটি মৌসুমী ফল এবং বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত ফল কাঁঠাল। কিন্তু অনেকেই জানেন না কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পরকে। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সামনে কাঁঠালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তুলে ধরব। আপনারা যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে কেন কাঁঠাল বেশী করে খাবেন সে সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন।

কাঁঠাল গ্রীষ্মকালের জত রকমের ফল আছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ফল। স্বাদের দিক বিবেচনা করলে আমের পরেই যে নামটি আসে তাহলো কাঁঠালের নাম। সুগন্ধযুক্ত আকারে বড় এই ফল পুষ্টির দিক থেকেও অনেক বড়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কাঁঠালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে- 

আজকের পাঠ্যক্রম- যে কারণে কাঁঠাল বেশী করে খাবেন

  • কাঁঠালের পুষ্টিগুণ
  • উপকারিতা
  • কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম
  • যে কারণে কাঁঠাল বেশী করে খাবেন
  • শেষকথা

কাঁঠালের পুষ্টিগুণ

মৌসুমী ও সহজলভ্য ফল কাঁঠাল এখন দেশের সব জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। সুস্বাদু এই ফলের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। যেমন-

  • ভিটামিন সি ও এ 
  • ক্যালসিয়াম 
  • পটাশিয়াম
  • সোডিয়াম
  • রিবোফ্লোবিন
  • প্রোটিন
  • থায়ামিন
  • আয়রন
  • মিনারেল
  • ফাইবার
  • ফোলিক এসিড
  •  জিংক

কাঁঠালের উপকারিতা

কাঠালে কোন ফ্যাট ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই। এই ফলটি অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এসব উপদান থাকার কারণে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক। দারুণসব পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফল মানব দেহকে বিভিন্ন অসুখ বিসুখ থেকে রক্ষা করে থাকে। যেমন- 

ক্যানসার প্রতিরোধক- কাঁঠালে আছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট। আবার এই ফলে ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি আমাদের ফুসফুস, গ্যাস্ট্রিক, ব্রেস্ট, স্কিন ও প্রোস্টেট ক্যানসারের মতো অনেক ধরণের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।

ডায়াবেটিসের জন্য- কাঁঠাল যদিও খেতে খুব মিষ্টি ফল, কিন্তু এফল থেকে খুব ধীরে ধীরে রক্তে সুগার শোষণ হয়। আর এ কারণে ডায়াবেটিক রোগীরা কাঁঠাল নিয়ম মাফিক খেতে পারেন।

হজম শক্তি বাড়ায়-  কাঁঠালে বেশি পরিমাণ ফাইবার বা আঁশ থাকায় হজম শক্তি বাড়ায়। এফল পরিমাণে একটু বেশি খেয়েও পাকস্থলীতে বিরূপ কোন প্রভাব ফেলে না। কাঁঠাল শরীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান বেরকরে আমাদের কোলনকে সুস্থ রাখে। আবার ফলটি বাওয়েল মুভমেন্ট উন্নত করে। 

প্রতিরোধ করে আলসার-  যারা ওষুধ সেবন করেন আলসারের মতো পেটের পীড়ার জন্য, তারা আবার সেসব ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াতেও ভোগে থাকেন। আর এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপায় আলসার প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপাদান হলো কাঁঠাল খাওয়া। কারণ এফলে অ্যান্টি আলসারেটিভ, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে প্রচুর পরিমাণে।

মস্তিষ্কের জন্য এটি উপকারী- মানসিক চাপ, নার্ভাস সিস্টেমের সমস্যার ফলে ক্লান্তি  ও মাংসপেশীর ব্যথার মতো উপসর্গ দেখাদিলে এই ফল খান নিয়মিত। কারণ কাঁঠা্লে থাকা নিয়াসিন ও থিয়ামিন  মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।

উচ্চ ক্তচাপ কমায়- পটাশিয়াম কাঁঠালে বেশি থাকায় এটি উচ্চ রক্তচাপ কমায়, জার কারণে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো রোগ অনেকটা প্রতিরোধ হয়। 

হাড়ের যত্নে- যেহেতু কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকে, আর এই কারণে হাড়ের যত্নে কাঠাল বেশ উপকারি। ভিটামিন সি ও ম্যাগনেশিয়াম কাঁঠালে থাকাঠাল এটি আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে বেশ ভালো ভূমিকা রাখে।

চোখ ও ত্বকের জন্য উপকারি- যেহেতু কাঁঠালে ভিটামিন এ বেশি থাকে তাই কাঁঠাল খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া কাঁঠাল দৃষ্টিশক্তি কমে যাওযঠা এবং চোখের ছানিপড়া রোগ হতে অনেক রক্ষা করে। আবার মানুষের বয়স বাড়ার ফলে ত্বক কুঁচকে হয়ে যাওয়া সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে কাঁঠাল। রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বক ভালো করে।

কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম

কাঁঠাল কাঁচা-পাকা সব অবস্থাতেই খেতে অনেক সুস্বাদু। আমরা তরকারি হিসেবে ব্যবহার করি কাঁচা কাঁঠাল। কাঁঠালের বিচিও তরকারিতে দিয়ে বা ভেজে খাওয়া যায়। কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিগুণ। কিন্তু কাঁঠাল কিছু নিয়মমেনে খাওয়া উচিত। 

 ** যেহেতু কাঁঠালে একটি আঠালো ফল। তাই কাঁঠাল পাকা বা কাঁচা হোক কাটার সময় অবশ্যই হাতে তেল মেখে নিতে হবে।

 ** কাঁঠাল খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকালে নাস্তার পরে ও দুপুরের খাবারের কিছু আগে। এ সময় অনেকে কিছু খাবার খেয়ে থাকেন। এ সময় অন্য খাবারের পরিবর্তে কাঁঠাল খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।

 ** আমরা কিন্তু সকল ফলেরই জুস খাই, তেমনি আমরা চাইলে কাঁঠালেরও জুস খেতেপারি।

যে কারণে কাঁঠাল বেশী করে খাবেন

আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মের বেশীরভাগ বা কেউ কেউ কাঁঠাল খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু কাঁঠাল খাওয়ার যে রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা এটা তাদের অনেকেরই অজানা। তবে এর গুণাগুণ জানা থাকলে নিশ্চয়ই নিয়মিত খাবেন। আমেরিকান ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের দেওয়া তথ্য মতে, কাঁঠাল প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস। 

কাঁঠালে ভিটামিন এ, সি এবং বি-কমপ্লেক্স সমৃদ্ধ, যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরে উল্লেখিত কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও বিভিন্ন উপকারিতা এবং আমাদের শারীরিক ভাবে সুস্থ্য থাকার জন্য সকলের বেশী করে কাঁঠাল খাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ জানলে অবাক হবেন লবঙ্গ সম্পর্কে 

শেষকথা

প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ, যে সকল কারণে বেশী করে কাঁঠাল খাবেন সেই কারণগুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে ইতিমধ্যেই বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, কাঁঠালের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও কাঁঠাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 

গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার নিকটে অনেক উপকারী বলে মনে হয়েছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭