যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন

আরও পড়ুনঃ যে কারণে মিষ্টি আলু বেশী করে খাবেন

বাংলাদেশের একটি পরিচিত ফল জাম। জাম চেনেনা আমন মানুষ বাংলাদেশে খুজে পাওয়া ভার। তবে বেশীর ভাগ মানুষই জানেনা জামের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জন্য জামের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরব। আপনারা যদি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে জাম সম্পর্কে অনেক কিছু তথ্য জানতে পারবেন।

এখন চলছে জামের ভরা মৌসুম। জাম এখন বাজারে খুবই সহজলভ্য। আকারে ছোট টক-মিষ্টি স্বাদের কালো জাম দেখলে কার না জিভে পানি আসে। আর জাম ভর্তার স্বাদ সকলরই পরিচিত। কিন্তু জানেন কি? শুধু স্বাদে নয় বরং জামের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। তবে আর দেরীকেন! জেনে নেওয়া যাক জামের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-

আজকের পাঠ্যক্রম- যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন

  • যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন
  • ১০০ গ্রাম পাকা জামের পুষ্টিগুণ
  • জামের উপকারিতা
  • জামের অপকারিতা
  • শেষকথা

যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন

ছোট ছোট ফল জামের রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি যা আপনার ত্বকের জ্বালাপোড়া, ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল এবং ব্রনের মত জটিল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে জাম। এই ফলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। জামে আছে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রো ও ম্যাক্রো এবং মিনারেলস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বাড়াতে সাহায্য করে। 

১০০ গ্রাম পাকা জামের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০গ্রাম পাকা জামে রয়েছে

ক্রঃ নং

উপাদান

পরিমাণ

কার্বোহাইড্রেটস

১৫. গ্রাম

ফ্যাট

২৩ গ্রাম

প্রোটিন

৭২ গ্রাম 

জলীয় অংশ

৮৩.১৩ গ্রাম

ভিটামিন       

আইইউ 

ভিটামিন সি

১৪. মিলিগ্রাম

ক্যালসিয়াম

১৯ মিলিগ্রাম

জামের উপকারিতা

এখন মৌসুমটা চলছে ফলের। সর্বত্রই এখন পাওয়া যাচ্ছে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, জামরুলসহ সুস্বাদু সবফল। প্রচুর সব ফলের ভিড়ে পুষ্টি ও খাদ্য গুণসম্পন্ন ছোট ফল জাম কমবেশি সবার প্রিয়। জামেন ভিটামিন সি, ডেক্সট্রোজ, গ্লুকোজ, জিংক, ফাইবার, কপার, ফ্রুকটোজ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং স্যালিসাইলেটসহ প্রচুর পরিমাণে উপাদান। এছাড়াও দেশীয় ছোট ফল জামে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। যেমন-

আরও পড়ুনঃ জানলে অবাক হবেন লবঙ্গ সম্পর্কে

*** হৃদযন্ত্র ভালো রাখে- জাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী। জাম আমাদের রক্তের কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও  জাম মানুষের শরীরের দূষিত কার্বন ডাই অক্সাইস কমিয়ে দেহে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। 

*** ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে- জাম রক্তের চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। আবার এফল ডায়াবেটিক রোগীর রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে করে। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ জামের বিচির গুঁড়া খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। ত্বক ও চুলকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

*** ক্যানসার প্রতিরোধে করে- অন্যসব ফলের ভেতর যত পরিমাণ যৌগিক উপাদান থাকে, তার মধ্যে জামে আছে সবচেয়ে বেশি। মানুসের মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে জাম গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এফল লড়াই করে জরায়ু, ডিম্বাশয় এবং মলদ্বারের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে। জামে ক্যালরির পরিমাণ কম। 

*** স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে- জামে থাকে গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ, যা মানুষকে কাজ করার শক্তি জোগায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষ হারাতে থাকে তার স্মৃতি। আর জাম স্মৃতিশক্তি প্রখর রাখতে ভূমিকা করে।

*** উচ্চ রক্তচাপ- পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকরা এখন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশী বেশী তাজা ফল এবং শাকসবজি খেতে বলেন। বরতমানে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় প্রায় মানুষই ভুগছেন। জাম এ ক্ষেত্র উপকারী। এফলে এমনসব উপাদান আছে যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে খুবই সহায়তা করে।

*** ওজন নিয়ন্ত্রণ করে- জামে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বা চিন্তিত তারা খাদ্য তালিকায় জাম রাখতে পারেন।

*** রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়- জাম মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমি সর্দি-কাশি থেকেও আমাদের মুক্তি দেয়। প্রতিরোধ করে থাকে ইনফেকশনের মতো সমস্যার। জাম রাতকানা রোগ এবং যাদের চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে তাদের জন্য ভীষণ উপকারী। এছাড়া রুচি ফিরিয়ে আনতে জাম খেতে পারেন। এই ফল ভ্রমণজনিত বমিভাব দূর করে।

জামের অপকারিতা

সব জিনিষের ভালো মন্দ উভয় দিক রয়েছে সেক্ষেত্রে জামের প্রচুর গুণাগুণ ও উপকারিতা থাকলেও তা ব্যবহারে আপনাকে হতে হবে সতর্ক, কারণ কিছু কিছু ক্ষেত্রে জামেরও ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। চলুন দেখে নেই কখন জাম খাওয়া ঠিক নয়- 

  • পাকা জাম ভরা পেটে খেলে অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকভাব হতে পারে।
  •  আধাপাকা জাম খাওয়া উচিত নয়।
  •  জাম খাওয়ার খেয়ে দুধ খাবেন না। 
  •  খালি পেটে জাম খাবেন না।

শেষকথা

যে কারণে জাম বেশী করে খাবেন, সেই কারণগুলো সম্পর্কে এই আর্টিকেলে ইতিমধ্যেই বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, জাম বেশী করে খাওয়ার উপকারিতা, সেই কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। 
গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার নিকটে অনেক উপকারী বলে মনে হয়েছে। এই আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে উপকারী মনে হয় তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭