স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট ভ্রমন করি

 আরও পড়ুনঃ কক্সবাজারে রাত্রি যাপনের কিছু হোটেল রিসোর্ট এর অবস্থান

আমাদের যান্ত্রিক ও একঘেয়েমি কর্ম জীবনের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের মাঝেমধ্যেই মনে হয়, যদি পারতাম চেনা গণ্ডি ছেড়ে দূরে অন্য কোথাও চলে যেতে! অনেকেরই ইচ্ছে হয়, অন্তত একদিনের জন্য হলেও সব ব্যস্ততা ভুলে সুন্দর একটি দিন কাটাতে। আর মানুষের এই স্বভাব সুলভ ইচ্ছাকে পূরণ করতেই আজ আমরা আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব এক অতুলনীয় স্থানের সঙ্গে। যার নাম স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট’।

বাংলাদেশের ভ্রমন প্রিয় মানুষদের কাছে এক পরিচিতি নাম স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট। এটি দিনাজপুর জেলার  অন্তরগত  নবাবগঞ্জ  উপজেলার  আফতাবগঞ্জ  এর  নিকটবর্তী খালিশপুর মৌজায় প্রায় ৪০০ একর জমির ওপর বিস্তৃত একটি বিনোদন পার্ক। স্বপ্নের মতো নির্মল ও  নিরিবিলি এক মায়াবী স্বপ্নময় ভুবনটি স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট নামে সারাদেশে বেশ পরিচিত। 

সূচীপত্র

  • ভূমিকা
  • দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
  • স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট ভ্রমন করি  
  • স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট এর প্রবেশ ফি কত
  • কিভাবে যাবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট
  • কোথায় থাকবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট
  • কোথায় খাবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট
  • শেষ কথা 

ভূমিকা    

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট দিনাজপুর জেলা শহর থেকে সড়ক পথে মাত্র ৫২ (বাহান্ন) কিলোমিটার দক্ষিন-পূর্বে জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার খালিশপুর মৌজায় এর অবস্থান। ফুলবাড়ি উপজেলা শহর থেকে স্বপ্নপুরী এর দূরত্ব ১২ (বারো) কিলোমিটার। দিনাজপুর থেকে ফুলবাড়ি উপজেলার আফতাবগঞ্জ হাট হতে ১ কিলোমিটার পাকা রাস্তা দিয়ে এগুলেই এখানে পৌঁছনো যায়।

দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান

  • নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান বা পঞ্চবটীর বন।
  • দীপশিখা মেটি স্কুল
  • লিচু বাগান 
  • দিনাজপুর রাজবাড়ী
  • নয়াবাদ মসজিদ 
  • কান্তজীর মন্দির 
  • রামসাগর দীঘি
  • হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রজুক্তি বিঃ

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট ভ্রমন করি

গেট পেরুলেই প্রবেশ পথের দু’ধারে বিভিন্ন গাছের সমারোহ। চোখে পড়বে পথের দু’ধারে সারি সারি দেবদারু গাছ, দেবদারু গাছের দু’পাশে নারিকেল গাছের সারি। এখানে আছে বৈচিত্র্যপূর্ণ গাছগাছালি ও ফুলের সমারোহ,কৃত্রিম হ্রদ, পাহাড়, লেক, উদ্যান, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম পশুপাখি, লবাগিচা, ইটখোলা, কৃত্রিম ঝর্ণা, ঘোড়ার রথ, হংসরাজ সাম্পান, শালবাগান, কুঞ্জ, ভাস্কর্য, ডাকবাংলো, মাটির কুটির, খেলামঞ্চ, বাজার, নামাজঘর প্রকৃতিতে বাংলাদেশের মানচিত্র।

কয়েক ভাগে বিভক্ত করা পথ চলতে চলতে দেখা যায়, হঠাত দেখা যাবে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বা ঘাড়গুঁজো বসে থাকা অবসন্ন কৃষকের ভাস্কর্য। সেখানে সারিবদ্ধভাবে চেয়ার, টুল বসানো আছে। আপনি চাইলে হংসরাজ সাম্পানে চড়ে কিছু সময়ের জন্য স্বচ্ছ নীল পানির লেকে হারিয়ে জেতেপারেন স্বপ্নের জগতে। 

সাম্পানে যেতে যেতে দেখতে পাবেন কোথাও দাঁড়িয়ে আছে নারী, কোথাও মাথা নিচু করে বসে আছে হতাশাগ্রস্ত যুবক আবার কোথাও ফুটে আছে বিশাল কচুপাতা। এখানে রয়েছে কৃত্রিম পশু দুনিয়া। প্রবেশ পথেই দুটি ড্রাগন আপনাকে সাদর সম্ভাষণ জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছে। দেয়ালে চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি করা রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় হিংস্র প্রাণীদের প্রতিকৃতি। এরপর একটু পা ফেলতেই চমকে উঠবেন, কারণ সামনেই পথ জুড়ে হাঁ করা এক নর-করোটি দেখা যাবে। 

আর যদি পশু দুনিয়ায় পৌঁছতে চান তাহলে আপনাকে একটি নর- করোটির মুখের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। রয়েছে কৃত্রিম পাহাড় ও ঝর্ণা। আপনি দেখতে পাবেন ঝর্ণার পানি গড়িয়ে একটি ছোট জলাশয়ে পড়ছে। আর লেকের পাশে রয়েছে বিশাল আকারের বাংলাদেশের মানচিত্র, যা ইট-সিমেন্ট দিয়ে সুন্দরভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী এসে ইচ্ছা করলেই দু’একদিন থাকাও যাবে। 

এ জন্য রয়েছে নিশিপদ্ম, নীলপরী, সন্ধ্যাতারা, রজনীগন্ধা মেঠোঘর এবং ভিআইপি কুঞ্জ নামের পাঁচটি মনোমুগ্ধকর বাংলো যা ভ্রমন পিপাসু মানুসদের অবসর জাপনের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। এখানে কিন্তু অল্প দামে খাবারের সুব্যবস্থাও আছে। স্বপ্নপুরীতে শিশুদের জন্য রয়েছে শিশুপার্ক, দোলনা ও চরকিতে ঘোরার ব্যবস্থা, ঘোড়ার ওপর চড়ে ঘোড়া চালনা, সুদৃশ্য ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বেড়ানোর ব্যবস্থাওসমও রয়েছে। ঘোড়ার গাড়ির উপরে রয়েছে সুদৃশ্য রঙিন ছাতা, যা চলার সময়য় ঘুরতে থাকবে। 

এছাড়া অফিস চত্বরে রয়েছে কেনাকাটার জন্য বাজার। আপনি চাইলে শিশুদের খেলনা, ঘর সাজানোর জিনিস থেকে শুরুকরে সব ধরনের কেনাকাটা এখান থেকে করতে পারবেন। ভ্রমণকারীদের রান্নার সহায়তার জন্য এখানে বিভিন্ন ধরনের চুলা চেয়ার, টেবিল, হাঁড়ি-পাতিলসহ ডেকোরেশনের সব  ধরনের জিনিস ভাড়া পাওয়া যায়। আবার স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটের রয়েছে, তাঁদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট এর প্রবেশ ফি কত

    • ** স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে প্রবেশ মূল্য বর্তমানে ১০০ টাকা।
    • ** বড় গাড়ী – ৫০০০ টাকা
    • ** পিকআপ / নছিমন – ২০০০ টাকা
    • ** মাইক্রোবাস অথবা হায়েস গাড়ী – ১৫০০ টাকা
    • ** নোয়া অথবা মাহিন্দ্র – ১০০০ টাকা
    • ** প্রাইভেট কার, সিএনজি কিংবা জীপ – ৪০০ টাকা
    • ** অটোরিক্সা – ৮০০ টাকা
    • ** মটর বাইক – ২০ টাকা

কিভাবে যাবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট

ট্রেনঃ ঢাকার কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, ও পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেন  দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। শ্রেনীভেদে এইসব ট্রেনের টিকেটের মূল্য ৪৬৫ টাকা থেকে ১,৫৯৯ টাকা লাগবে। 

বাসঃ ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে দিনাজপুরগামী সবধরনের এসি ও নন এসি বাস পাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকার উত্তরা থেকেও বেশকিছু দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি ও নন এসি মানভেদে ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

দিনাজপুর থেকে বাস বা সিএনজি ভাড়া করে সহজেই স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট

স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী এসে ইচ্ছা করলেই দু’একদিন থাকাও যাবে, এ ছাড়া আপনি চাইলে দিনাজপুর জেলা শহরে গিয়ে থাকতে পারেন। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর আবাসিক হোটেল আছে। আপনার সাধ্যমত হোটেল ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবেন।

কোথায় খাবেন স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পট

স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী এসে ইচ্ছা করলে আপনি পার্কার মধ্য খাওয়া সেরে নিতে পারেন, এ ছাড়া আপনি চাইলে ফুলবাড়ি বা দিনাজপুর জেলা শহরে গিয়ে  খেতে পারেন। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর হোটেল ও রেস্তরা আছে। আপনার সাধ্যমত হোটেলে খেয়ে নিয়ে থাকতে পারবেন।

শেষ কথা

ব্যাস আশা করছি   স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গিয়েছেন। যা কিনা আপনার ভ্রমণে সাহায্য করবে। স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী দেখতে বছরের যে কোন সময় দর্শনার্থীরা অল্প ভিড় করলেও সীতকালে ও দুই ঈদে দর্শনার্থীদের উপচে পরা ভিড় লক্ষণীয়। পর্যটন শিল্পের বিপুল সম্ভাবনাময় স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী এর প্রতি প্রয়োজনীয় নজরদারির দিলে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসাবে এটি গড়ে উঠবে। 

তাই সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। রাজধানী ঢাকা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর অনেকে স্বপ্নময় স্বপ্নপুরী পিকনিক ও ভ্রমনে আসেন। 

ঠিক আছে, দেখাযা্ক আগামী আর্টিকেলে কি থাকছে? 

তবে বাইক নিয়ে ভ্রমণে বের হলে সব সময় নিজের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখুন। ভালো মানের হেলমেট এবং সেফটি গার্ড ব্যবহার করুন। সব সময় নিয়ন্ত্রিত গতিতে বাইক রাইড করুন।     

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৫

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৬

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৭