নওগাঁ জেলার গর্ব পোরশার বড় মাদ্রাসা
জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৫ সালে পরিচালিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে ছোট বড় মিলে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা প্রায় ১৪ হাজার এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ। বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এর সংখ্যা ২০ হাজারের চেয়েও বেশি। ২০০৯ সালে উইকিলিকসে ফাঁস হওয়া ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের এক তারবার্তায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা ছোট বড় মিলে প্রায় ২৩ থেকে ৫৭ হাজার। আল হাইআতুল উলয়া বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসা সমূহের জন্য সরকার অনুমোদিত শিক্ষা বোর্ড।
কওমি মাদ্রাসা সমূহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অনুসরণ করে এবং দারুল উলুম দেওবন্দের আদলে পরিচালিত হয়। আজ আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশের অন্যতম বড় এবং নাওগা জেলার গর্ব পবিত্র আল কোরান ও ইসলামি জ্ঞান অর্জনের অন্যতম প্রধান মাদ্রাসা আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা নাওগা সম্পরকে।
সুচীপত্রঃ নওগাঁ জেলার গর্ব পোরশার বড় মাদ্রাসা
- ভূমিকা
- অবস্থান
- নওগাঁ জেলার গর্ব পোরশার বড় মাদ্রাসা
- লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
- বাংলাদেশের সেরা ১০ টি কওমী মাদরাসা
- কার্যক্রম
- বিভাগসমূহ
- শিক্ষা বোর্ড
- ফান্ড সমূহ
- শেষকথা
ভূমিকা
বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত আল জামি'আতুল আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ-পোরশা একটি কওমি মাদ্রাসা যা 'পোরশার বড় মাদ্রাসা' নামেও পরিচিত। ১৯৪৬ সালে (৭৪ বছর আগে) স্থাপিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন একটি স্থাপনা। উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম এই প্রতিষ্ঠানেই 'দরসে নিযামি' শিক্ষাক্রমে পাঠদান এবং 'দাওরায়ে হাদিস' চালু হয়েছিল।
অবস্থান
রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত নওগাঁ জেলার ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত বর্তি উপজেলা পোরশা উপজেলার পোরশা গ্রামে সবুজেঘেরা আমবাগানের পার্শ্বে প্রায় ৯ (নয়) বিঘা জমির উপর এই প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন ধর্মীয় ক্বওমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার সম্পূর্ণ নাম –আল-জামিয়া আল-আরাবিয়া দারুল হিদায়াহ, পোরশা, নওগাঁ।
নওগাঁ জেলার গর্ব পোরশার বড় মাদ্রাসা
পোরশা উপজেলার পোরশা গ্রামের আবদুল হাই শাহ নামক এক ব্যক্তি তার নিজের অর্থায়নে পোরশা উপজেলায় অনেকগুলো শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। তিনি পোরশা গ্রামেও হাই মাদরাসা নামে একটি ইসলামী ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার সরকারিভাবে আত্তীকরণ করে হাইস্কুলে পরিণত করেন।
১৯৪৬ সালে মৌলভি জাফর এবং তার বন্ধু হযরত একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। সে সময় আবদুল হাই শাহ, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্য অনেক পরিনাণ জায়গা ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। হাটহাজারী মাদ্রাসার তৎকালীন মুহতামিম আবদুল ওয়াহহাব এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন এবং এতি পরিচালনার জন্য সালেহ আহমদকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
সালেহ আহমদ, সেই ওয়াকফকৃত জমিতে জিল্লুর রহমান শাহ্ নামে ধনাঢ্য এক ব্যক্তির অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণ করেছিলেন এবং তিনিই এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম পরিচালক ছিলেন। নোয়াখালী জেলার সাঈদ আহমদ (একজন শিক্ষক) দ্বারা প্রাথমিকভাবে কিছু ছাত্রকে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির ভবন ও ওয়াকফকৃত জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং ১৯৫৯ সালে দাওরায়ে হাদীস বিভাগ চালু করা হয়েছিল।
বাংলাদেশে উত্তরবঙ্গের সর্বপ্রথম এই মাদ্রাসাটিতেই 'দাওরায়ে হাদীস' বিভাগ চালু হয়েছিল এবং প্রথম 'শায়খুল হাদীস' হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন চট্টগ্রামের আবদুল হক ইসলামাবাদী। পরবর্তীতে মুফতি রেজাউল হক এই পদগ্রহণ করেন এবং ২০১২ সাল (প্রায় ৫০ বছর) পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে বুখারী শরিফের দরস (শিক্ষা) প্রদান করেতেন।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
ইলমে দ্বীন পিপাসু ধর্ম শিক্ষায় আগ্রহী চাত্রদের শিক্ষা দীক্ষার সাথে সাথে বিশুদ্ধ তাওহীদ, সুন্নাতে রাসুল (সাঃ) এর অনুসরণ, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং তাবলীগে দ্বীনের সত্যিকার মুবাল্লিগ করে গড়ে তোলা, তৎসহ এলাকার যতাসম্ভব দ্বীনি পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা, সর্বোপরি আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করা।
বাংলাদেশের সেরা ১০ টি কওমী মাদরাসা
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ৮ টি বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হইয়-
- নজরানা (মকতব) বিভাগ
- হিফ্জ খানা বিভাগ
- কের’আত খানা বিভাগ
- কিতাব খানা বিভাগ
- তাফসীর বিভাগ
- আদব বিভাগ
- উলূমুল হাদীস বিভাগ
- ইফ্তা বিভাগ
শিক্ষা বোর্ড
১৯৯৮ সালে মাদ্রাসা শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য নওগাঁ এলাকা এবং নওগাঁর পার্শ্ববর্তী এলাকার সকল কওমী মাদ্রাসা নিয়ে একটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয় যা ইত্তেফাকুল মাদারিস আল আরাবিয়া আল কওমিয়া, নওগাঁ, বাংলাদেশ নামে পরিচিত। বোর্ডটির প্রধান কার্যালয় এই মাদ্রাসাটি।
এই বোর্ডের আওতাভুক্ত মাদ্রাসাগুলো তাদের প্রধান কার্যালয়ে আসেন এবং তাদের মাদ্রাসার শিক্ষার মানোন্নয়ন, মাদ্রাসার সার্বিক উন্নতি ও ছাত্র-শিক্ষকদের যেকোন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই বোর্ডের মাধ্যমে অধীনস্থ মাদ্রাসাগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনাও করা হয়।
ফান্ড সমূহ
এই মাদ্রাসায় মোট ৪ টি ফান্ড বিদ্যমান-
- চাঁদা ফান্ড
- ছদকা ফান্ড
- মসজিদ ফান্ড
- উন্নয়ন প্রকল্প
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url