বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান
পোস্ট সূচীপত্রঃ বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান
ভূমিকা | বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান
বাগেরহাট জেলাটি হচ্ছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের দক্ষিণ অঞ্চলের বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী অঞ্চল ঘিরে বাগেরহাট অবস্থিত। এছাড়াও বাগেরহাট মধুমতি নদীর ধারে অবস্থিত। বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা থেকে বাগেরহাট জেলাতে রয়েছে অনেক ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। এই জায়গাতে রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক শাসনকালের পুরনো সকল সামগ্রী। এই জন্য অনেক পর্যটক আসে এই বাঘেরহাট জেলাতে দর্শনের জন্য।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা বৃষ্টি টেকনোলজি ওয়েবসাইট ও ব্লগ লিস্ট জানুন
আপনারা যদি বাগেরহাট জেলাতে ভ্রমণ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাদেরকে আগে বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান এবং বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থানগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে আপনারা সম্পূর্ণভাবে বাগেরহাট জেলার ভালো জায়গা গুলোতে দর্শন করতে পারবেন এবং বাগেরহাট সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদের নলেজে রাখতে পারবেন। বাগেরহাট পুরো বাংলাদেশের ভিতরে সবথেকে ভালো দর্শনীয় স্থান।
বাঘেরহাট জেলাতে রয়েছে অনেক ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক পুরনো বড় বড় অট্টলিকার মসজিদ। বাগেরহাট জেলাতে রয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ পুরো বাংলাদেশকে খ্যাত করেছে জাতিসংঘের কাছে। এছাড়াও সুন্দরবনের বেশিরভাগ অঞ্চল বাগেরহাট জেলাতে অন্তর্ভুক্ত। এজন্য বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান অনেক। যা পর্যটকদের মনকে কেড়ে নেয় এই জন্য বারবার প্রতিবছর পর্যটকরা এই বাগেরহাট অঞ্চলে এই সকল দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে ভিড় জমায়।
তাহলে চলুন প্রিয় পাঠক আর দেরি না করে কথা না বাড়িয়ে আমরা জেনে নেই বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থানগুলো।
বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাতে রয়েছে তাদের নিজস্ব বিখ্যাত স্থান সে মনেই বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান রয়েছে কয়েকটি। সেগুলো আজ আমরা আর্টিকেলের এই অংশে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনাদেরকে এই সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাহলে আপনারা বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই এই জেলার বিখ্যাত স্থানগুলো।
ষাট গম্বুজ মসজিদ
খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় ষাট গম্বুজ মসজিদ অবস্থিত এটি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ শুধু তাই নয় বরং এটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। এই ষাট গম্বুজ মসজিদ ১৫০০ শতাব্দীতে খান-ই-জাহান নির্মাণ করেছেন বলে সকলেই ধারণা করেন। এই মসজিদের সকল পাথরগুলো নির্মাণের সময় রাজমহল থেকে আনা হয়েছিল। এজন্য ষাট গম্বুজ মসজিদ বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী সকল স্থানগুলোর ভেতরে অন্যতম। বাগেরহাট শহরটিকে ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
ষাট গম্বুজ মসজিদটি হচ্ছে উত্তর দক্ষিনে ১৬০ ফুট এবং পূর্ব ও পশ্চিমে ১০৪ ফুট লম্বা এবং এই মসজিদের ভেতরের দিক দিয়ে উত্তর দক্ষিনে প্রায় ১৪৩ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমের দিক দিয়ে প্রায় ৯০ ফুট লম্বা। ষাট গম্বুজ মসজিদের দেওয়াল গুলো প্রায় 8.4 থেকে 5 ফুট পুরু। এই মসজিদের পূর্বের দিকে রয়েছে প্রায় ১১ টি সুবিশাল দরজা। এবং উত্তর দক্ষিণের দিক দরজা রয়েছে উত্তর দিকে সাতটি এবং দক্ষিণ দিকে সাতটি মোট ১৪ টি। এবং প্রতিটি মিনারের ওপরে রয়েছে একটি গোল বৃত্তের গম্বুজ। মসজিদে প্রায় ৬০টি মিনার রয়েছে। এই জন্য এই মসজিদকে ষাট গম্বুজ মসজিদ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
চন্দ্রমহল ইকো পার্ক
চন্দ্রমহল ইকোপার্ক টি খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার রঞ্জিতপুর গ্রামে অবস্থিত। এই ইকো পার্কটি তাজমহলের আদর্শে গড়ে তোলা হয়েছে যার জন্য এই মহলটিকে চন্দ্রমহল হিসেবে ২০০২ সালে আখ্যায়িত করা হয় এবং এই মহলটি ৩০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। এই পার্কটি তৈরি করেছেন সেলিম হুদা। তবে এই পার্কটির নাম তার স্ত্রী নসীমা হুদা চন্দ্রার নামে আখ্যায়িত করেছেন ঠিক যেমন তাজমহল তৈরি করেছিলেন সেই রকম করে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সেরা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার আইটি সম্পর্কে জানুন
এই চন্দ্র মহলের চারদিকে পানিতে ঘেরা এবং এই মহলের মূল কক্ষে যেতে হলে পানি নিজ দিয়ে একটি প্যানেল রয়েছে এই প্যানেলের ভেতর দিয়ে আপনাকে চন্দ্রমহলের মূল কক্ষে পৌঁছাতে হবে। এই পার্কের ভেতরে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে টিকেট কাটতে হবে এবং এই পার্কের ভেতরে প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকিটের মূল্য হচ্ছে ৪০ টাকা জনপ্রতি তবে এটি প্রতিদিন সকাল সাতটা হতে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকে। এরপরে এই পার্কটিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মংলা বন্দর
মংলা বন্দর হচ্ছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। ১ ডিসেম্বর ১৯৫০ সালে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত লাভ করে। খুলনা জেলা থেকে মংলা বন্দর এর দূরত্ব হচ্ছে ৪৮ কিলোমিটার। এই মংলা বন্দর তাই ১০০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ভব বঙ্গোপসাগর থেকে । এই বন্দরটি খুলনার রেল টার্মিনালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এই মংলা বন্দরটি ২৪ ঘন্টায় খোলা থাকে পণ্য খালাসের জন্য।
এই পদ্ধতিতে পাই ২২৫ মিটার লম্বা পানি জাহাজ প্রবেশ করতে পারেন। এই বংলা বন্দর থেকে প্রতিবছর তাই তিন মিলিয়ন মেট্রিক টন পণ্য ৬৪ জাহাজের মাধ্যমে রপ্তানি এবং আমদানি করে থাকে।
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো বাগেরহাট জেলা ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন এজন্য বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কের তথ্যগুলো জানতে চাচ্ছেন। কারণ আমাদের সবথেকে বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে কোন জায়গাতে যাওয়ার আগে সেই জায়গাগুলোর ভালো স্থান এবং তথ্য জেনে নেওয়া উচিত। সেজন্য আপনি যদি বাগেরহাট জেলা দর্শন করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সবার আগে বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই।
ষাট গম্বুজ মসজিদ
বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান এর কথা মনে হলেই আমাদের মাথায় চলে আসে ষাট গম্বুজ মসজিদ এর কথা। কারণ এটি পুরো বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী মসজিদ হয় এটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। কারণ এই মসজিদে ব্যবহার করা হয়েছে রাজমহলের পাথরসমূহ। এবং পৃথিবীর সমগ্র দেশের ভেতরে সর্বপ্রথম ১৫ শতাব্দীতে খান জাহান এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। এই মসজিদে অনেক সুন্দর্য ও দর্শনীয়। প্রতিবছর লক্ষাধিক পর্যটক আমাদের বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার এই ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখতে আসেন।
খান জাহান আলীর মাজার
বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় খান জাহান আলীর মাজার অবস্থিত। হযরত খানজাহান আলী (র:) ভারতের জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বাংলাদেশ বাগেরহাট অঞ্চলে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন। এবং তিনি আমাদের এই ঐতিহাসিক ষাট গম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন। এ জায়গায় গুলোকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে অনেক সৌন্দর্য এবং পর্যটকদের মনকে আকৃষ্ট করার জন্য এ জায়গা দর্শনীয় করে তোলা হয়েছে।
বাগেরহাট জাদুঘর
মুসলিম সংস্কৃতির খানজাহান আলীর স্মৃতিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিকভাবে আবেদন জানানো হলে ইউনেস্কো ১৯৯৫ সালের বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে ৫২০ বর্গমিটার জায়গা জুড়ে এই যাদুকর কে নির্মাণ। এবং একে বাগেরহাট জাদুঘর নামে আখ্যায়িত করা। এই জাদুঘর কে সকল জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে ২০১১ সালের দিকে।
কচিখালী সমুদ্র সৈকত
প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এই কচিখালি সমুদ্র সৈকতকে এটি সুন্দরবনের টাটকা নদীর পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত। এছাড়াও এই অঞ্চলে শুধু সমুদ্র সৈকত নয় বরং এখানে রয়েছে অনেক সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী যা এই সমুদ্র সৈকত থেকে কাল তিন কিলোমিটার ভেতরে। অনেক অপূর্বময় সুন্দর্যের অধিকারী কচিখালী সমুদ্রের সৈকত এর এই অঞ্চলটি। তাই আপনি চাইলে এই অঞ্চলগুলোতে দর্শন করতে পারেন। এর ফলে আপনি এই ভ্রমণগুলো থেকে অনেক শিক্ষা এবং সৌন্দর্যের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর তথ্য ধারণা করতে পারবেন।
এছাড়াও রয়েছে বাগেরহাট জেলাতে আরো অনেক দর্শনীয় স্থান। সেগুলো হচ্ছে,
- মংলা বন্দর
- চন্দ্রমহল ইকোপার্ক
- নয় গম্বুজ মসজিদ
- সিঙ্গাইর মসজিদ
- কোদালা মঠ
- রণবিজয়পুর মসজিদ
- খাঞ্জেলী দিঘি
- চুনাখোল মসজিদ
বাগেরহাট সম্পর্কে কিছু তথ্য
বাগেরহাট জেলা হচ্ছে বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের একটি জেলা। পৃথিবীর অর্থাৎ দৃশ্য ঐতিহ্যবাহী মসজিদ রয়েছে এই জেলাতে ষাট গম্বুজ মসজিদ। এছাড়াও বাগেরহাট জেলাকে মসজিদের শহর বলে আখ্যায়িত করা হয়। এই জেলাটি ৩৯৫৯.১১ বর্গ কিলোমিটার। এবং এর উপজেলা সংখ্যা হচ্ছে নয়টি। এই জেলাতে ১১ লক্ষের ওপর মানুষ মুসলমান রয়েছে। এবং এই বাঘেরহাট জেলাতে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান এবং বিখ্যাত স্থান।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলা বন্দর এই জেলাতে অবস্থিত। আমাদের বাংলাদেশের গর্বের জায়গা গুলোর ভেতরে বাগেরহাট অন্যতম। এই জন্য আমাদের সকলের উচিত বাগেরহাট সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে রাখা। বাগেরহাট সম্পর্কে কিছু তথ্য জানতে পারলে আমরা আমাদের পরবর্তী ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এ সম্পর্কে আলোচনা করতে পারবো।
শেষ কথা | বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান - বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান
প্রিয় বন্ধুরা আশা করা যায় যে এতক্ষণ আপনারা বাগেরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান এবং বাগেরহাট জেলার বিখ্যাত স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। এবং আমার মতে যে কোন জায়গা ভ্রমণ অর্থাৎ দর্শন করার আগে সে জায়গাগুলোর দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত তাহলে আপনারা সেই জায়গাগুলোর ভালো জায়গাগুলো দর্শন করতে পারবেন। এবং সেই থেকে আপনি কিছু শিক্ষা অর্জন করতে।
আরো পড়ুনঃ ভিডিও এডিটিং করা সেরা ১০ টি অ্যাপ সম্পর্কে জানুন
পারবেন তাহলে প্রিয় পাঠক আর কথা না বাড়ি এখানে শেষ করছি দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে ততক্ষণ ভালো থাকবেন। এবং যদি আপনাদের বাগেরহাট সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা থাকে তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই কমেন্টে জানিয়ে দেবেন তাহলে আমরা চেষ্টা করব খুব শীঘ্রই আপনার সমাধান করে দেওয়া।@26224
আমি বাগেরহাটের সন্তান